কবিতা : অব্যাক্ত কিছু কথা

কবিতা : অব্যাক্ত  কিছু কথা

ছিলাম আমি অন্তসত্তা
পেটে ছিলো আমার পাচঁ মাসের সোনা
ক্ষুধার জ্বালায় এসেছিলাম বন ছেড়ে
ওরা আমাকে দিলো মেরে
শুনেনি আমার কথা , পেয়েছি অনেক ব্যাথা
ক্ষুধায় কাঁদেছি বারংবার,
বলেছি তাদের দাওনা খেতে যা কিছু আছে খাবার।
বনে থাকতে শুনেছি সবার কাছে
একটা নাকি মানব জাতি আছে
“পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ”
শুনেছি শ্রেষ্ঠত্ব তার গুণে। ;
যখন এলাম বন ছেড়ে মানবের কাছে
ওরা নাম দিলো আমায়  নির্বোধ পশু
আমি তখনো বলিনি কিছু
খাবারের আশায় গিয়েছিলাম ওদের পিছু
বুঝতে আমি পারিনি সোনা
আনারসে  মিশিয়ে বারুদ বোমা
খাওয়াইলো এই মানব সমাজ
কোন সে মনুষ্যত্বের গুণে?
বুক ফাটা প্রশ্ন জাগে আজ আমার মনে।
আমি তো এক অবোলা প্রানী
করিনি তোমাদের কোনো ক্ষতি
দগ্ধ জ্বালায় জ্বলছি পুড়ে,
যন্ত্রণা খাচ্ছে যেন কুড়ে কুড়ে
পেটে আমার ছোট্ট সোনা,
না জানি  কতো কষ্ট পাচ্ছে পেটে!
মরবি না সোনা দেখ তোর মা আছে
এই যে সামনে একটু খানি জল আছে
ভয় পাস না সোনা দেখ নামছি এবার জলে,
ঠাণ্ডা হলে দেখবি সোনা
শেষ হবে সব যন্তনা ।

আপ্রাণ চেষ্টায় বিফল গেলো
মৃত্যু তারা আমাদের উপহার দিলো ।
মৃত্যু সংকায় প্রস্তুত এবার;
সমস্ত আকাশ হতে যেন আলো চলে গেল,
পৃথিবীটা অন্ধকারে মুড়ে দিল।
আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ক্রমশ দাবানলে জ্বলতে লাগল।
যন্তনা আরো বারতে লাগলো
নিভে গেল দুটি প্রদীপ।
এবার খুশি তো মানব জাতি
করে আমাদের ক্ষতি ।
প্রশ্ন জাগে মনে
শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করে যারা
শ্রেষ্ঠত্ব কি তাদের এই অমানবিক গুণে?
আজ বলতে দ্বিধা নেই
মানুষের চেয়ে ভয়ংকর প্রাণী আর দ্বিতীয় টি নেই
যদি না আসতাম বন থেকে
বাঁচাতে পারতাম আমার সোনাটাকে ।

– অর্পিতা ঐশ্বর্য

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.