পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারালো ভারত

পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারালো ভারত

ggggggggপাকিস্তান ৩ উইকেট হারিয়েছিল ৩২ রানে। ভারত ৩ উইকেট হারালো মাত্র ৮ রানেই! এশিয়া কাপের এই ম্যাচটা ভারত-পাকিস্তানের। মহারণ বলা হয় যাকে।

এই দুই দলের ম্যাচ মানেই তো বাড়তি উত্তেজনা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতীয় বোলারদের দাপটে সেই উত্তেজনার পুরোটাই হারাবে বলে মনে হয়েছিল। ১৭.৩ ওভারে ৮৩ রানেই অল আউট পাকিস্তান। ৫ বছর পর ক্রিকেটে ফেরা মোহাম্মদ আমির তার প্রথম দুই ওভারে তিন উইকেট তুলে নিলেন। রোমাঞ্চ ফিরলো ম্যাচে।

কিন্তু বিরাট কোহলি ও যুবরাজ সিং সব রোমাঞ্চে পানি ঢেলে দিলেন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ৬৮ রানের জুটি গড়েছেন তারা। কোহলি ৪৯ রান করেছেন। যুবরাজ ৩২ বল খেলে অপরাজিত থেকেছেন ১৪ রান করে। ২৭ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে ভারত।

ভারতের স্কোরকার্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই রোহিত শর্মার (০) বড় উইকেটটি পড়লো। দ্বিতীয় বলে তাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেললেন আমির। চতুর্থ বলে এলবিডাব্লিউ আজিঙ্কা রাহানেও (০)। পরের ওভারে ফিরে আবার আঘাত আমিরের। এবার তার বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন সুরেশ রায়না (১)। ভারতের শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যানের রানের যোগফল ১! টানা ৪ ওভারই বল করলেন আমির। বিরাট কোহলি ও যুবরাজ সিং তাকে আর উচ্ছ্বাস করতে দিলেন না।

চাপ ছিল উইকেট না হারানোর। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান করার চাপ ছিল না ভারতের। কোহলি ও যুবরাজের ব্যাটে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়েছে ভারত। কোহলি চাপের মুখে কেন তিনি সেরা সেটি প্রমাণ করে গেছেন। সিনিয়র পার্টনার যুবরাজ রান করেছেন কম, কোহলির খেলাই যেন দেখেছেন বেশি! আর জুটিটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এই জুটিতেই জয় আনার দিকে ছিল নজর। কিন্তু ৭৬ রানের সময় কোহলি মোহাম্মদ সামির বলে এলবিডাব্লিউর শিকার। যদিও বল আগে ব্যাটে লেগেছিল। কোহলির ৫১ বলের ইনিংসে ৭টি চারের মার। ওই ওভারেই সামি তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়াকে। তবে ম্যাচে আর উত্তেজনা আসেনি। ভারতের জয়টাও কঠিন হয়নি।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামলো পাকিস্তান। মোহাম্মদ হাফিজ (৪) ম্যাচের চতুর্থ বলেই আশিস নেহরার শিকার। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন হাফিজ। জসপ্রিত বুমরাহর প্রথম ওভারটি মেডেন। দ্বিতীয় ওভারে তাকে চার মেরে দিলেন শারজিল খান। এক বল পরই বুমরাহর লাফিয়ে ওঠা এক বলকে কাট করে স্লিপে আজিঙ্কা রাহানের হাতে পাঠিয়েছেন শারজিল (৭)। ২২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপেই পড়ে পাকিস্তান। এরপর মনে হয়েছে, পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে থাকার তেমন ইচ্ছেই নেই!

৩২ থেকে ৩৫ রানে যেতে তিন উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। তারা তৃতীয় উইকেটটি হারায় বিরাট কোহলির ফিল্ডিং দক্ষতায়। শোয়েব মালিক কভারে খেলেছিলেন। খুররম মঞ্জুর বেরিয়ে গিয়ে দেখলেন মালিকের সাড়া নেই। কোহলির সরাসরি থ্রোতে রান আউট খুররম (১০)। সপ্তম ওভারের শেষ বলে মিডিয়াম পেসার হার্দিক পন্ডিয়া তুলে নেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের (৪) উইকেট। পরের বলেই আরেক উইকেট হারায় তারা। যুবরাজ সিং প্রথম ওভারের প্রথম বলেই এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন উমর আকমলকে (৩)। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল পাকিস্তান। এই ওভারের শেষ বলেই পাকিস্তান অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি (২) রান আউট হয়ে গেলে পাকিস্তানের ভালো সংগ্রহ পাওয়ার আশা শেষই হয়ে যায়।

৪২ রানে ৬ উইকেট। পাকিস্তানকে তখন খুব ভালোভাবে চোখ রাঙ্গাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর ৭৪। সপ্তম উইকেট পড়ে ৫২ রানে। শঙ্কাটা আরো সামনে তখন। কিন্তু উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান সরফরাজ আহমেদ ইনিংস সর্বোচ্চ ২৫ রান করলেন। তাকে রবিন্দ্র জাদেজা বোল্ড করার সময় পাকিস্তানের স্কোর ৭০। মোহাম্মদ সামি (৮) সর্বনিম্ন স্কোরের শঙ্কাটা দূর করছেন। তারপরও পাকিস্তানের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড হলো। সেটি ভারতের বিপক্ষে। আগেরটি ছিল ১২৮। পান্ডিয়া ৩.৩ ওভারে মাত্র ৮ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন। শেষ দুই বলে নিয়েছেন দুই উইকেট। রবিন্দ্র জাদেজার শিকার ২ উইকেট।

এই ম্যাচের আগে ভারত ও পাকিস্তান ৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। ৫টিতে জিতেছিল ভারত। একটিতে পাকিস্তান। আরো একটি জয় বাড়িয়ে নিলো ভারত। সেই সাথে এশিয়া কাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়ে ফাইনালের দিকে এগিয়ে গেলো এমএস ধোনির দল। ওএনবি/কেএইচ

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.