বাঙ্গালীদের মাঝে ভ্রমণের প্রবণতা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। সময়-সুযোগ পেলে সাধ্য-সামর্থ অনুযায়ী অনেকই বেরিয়ে পড়েন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায়। শুধু বেরিয়ে পড়লেই তো চলবে না, এর জন্য চাই একটা চমৎকার প্রস্তুতি, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ভ্রমণ পিপাসুর জন্য। কেমন হওয়া উচিত সেই প্রস্তুতি? সময়ের কথা’র পাঠকদের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিউটিশিয়ান কানিজ আলমাস–এর বিশেষ রচনা…..
কি করে ভ্রমণেও সুন্দর থাকবেন
আ মরা বেড়াতে চাই।বাঙ্গালীদের মাঝে এই ঝোঁকটাও বেশ বেড়েছে সম্প্রতি।সময়-সুযোগ পেলে, সাধ্য-সামর্থ মতো দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন সব বয়সের মানুষ। তবে এই বেড়ানোর জন্য একটা প্রস্তুতি থাকা চাই। শারীরিক ও মানসিক। গোছগাছ আর সাজসজ্জাটাও এতে জরুরি। অনেকে দল বেঁধে বেড়াতে যান। কখনো-বা অফিস থেকে যাওয়া হয়। সেখানে ঘোরাঘুরির ফাঁকে নানা আনুষ্ঠানিকতা থাকে। মিটিং কিংবা পার্টিও। এতসবের মাঝে নিজেকে তো পরিপাটি রাখতেই হবে। সে জন্য চটজলদি কিছু বিষয় অনুসরণ করলেই তা সম্ভব। কিছু পরামর্শ বা টিপস দেয়া হলো। আমি নিশ্চিত, বেড়ানোর আনন্দ তাতে বাড়বে বৈ কমবে না।
রাতের পর সকালে উঠে আবারও বেরোতে হবে। কী করবেন, ঠিকঠাকভাবে সতেজ হয়ে উঠতে? চটজলদি সব গুছিয়ে একটু সময় নিন। চেহারার পারিপাট্যে। চোখের দু’কোণে আর নিচের পাতায়, নাকের দু’পাশে হালকা করে কনসিলার লাগান। আর চিকে বুলিয়ে দিন ব্রোঞ্জার। আপনি তৈরি। বেরোনোর জন্য।
অনেক সময় এমন হয়, আপনি বাইরে থেকে ঘুরে এসেছেন। কিন্তু বিরতি মাত্র ১০ মিনিট। আবার আপনাকে বেরোতে হবে। এমন একটা অবস্থায় খুব সহজেই সতেজ হয়ে ওঠার জন্য মাত্র দুই মিনিট সময় ব্যয় করতে হবে। যে মেকআপ আছে, তাতে টিস্যুর হালকা ছোঁয়ায় বাড়তি তৈলাক্ত ভাবটা মুছে ফেলুন। এরপর বুলিয়ে নিন টোনার। অবশ্যই হালকা করে। তাতে ফের টিস্যু দিয়ে আদর করার মতো করে মুছে নিন। শেষ হয়নি। পাউডার ছড়িয়ে দিন পুরোটা মুখে। খুব হালকা করে। ব্যস! আপনি রেডি আবার বেরোনোর জন্য।
অনেক ঘোরাঘুরি হয়েছে দিনভর। চুলও হয়ে গেছে যাচ্ছেতাই। বেশ এলোমেলো আর অপরিচ্ছন্ন মনে হচ্ছে। মহা সমস্যা। হাতে বেশি সময়ও হয়তো আপনার নেই। কারণ, নতুন করে সময় নিয়ে ফ্রেশ হয়ে, হেয়ার ডু করে বেরোনোর সুযোগ পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় স্রেফ পাঁচটা মিনিট বের করুন। চুলের গোড়ায় ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ছড়িয়ে দিয়ে ভালোমতো ব্রাশ করে নিন। আপনি তৈরি। দেখবেন, সবাই তাকিয়ে আছে।
বেড়াতে আপনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন পনিটেইলে। কারণ, এটাই সবচেয়ে সহজ। চুল পেছনে নিয়ে দ্রুত আঙুল চালিয়ে তাতে হেয়ার স্প্রে দিন। তারপর পনিটেইল করে ফেলুন। তৈরি নিমেষে। আবার অন্যভাবেও উপস্থাপন করতে পারেন নিজেকে। সে ক্ষেত্রে সহজ একটা রাস্তা আছে। চুলের সামনে আর উপরের দিকটা ঠিকঠাক তৈরি করুন। টি-জোন বরাবর ব্লো-ড্রাই করুন। হেয়ারলাইনের চারপাশ ধরে সিঁথি নামিয়ে দিন দু’পাশে। ব্যস।
শীতকাল। ত্বক রুক্ষ হবেই। এ জন্য আপনি নিশ্চয় নিজের ত্বকবান্ধব ময়েশ্চারাইজার সঙ্গে রেখেছেন। তবে আমি একটা অন্য পরামর্শ দিই। ট্রাই করুন। অবশ্যই ভালো ফল পাবেন। গোসলের সময় শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার তো লাগান। সেটাই এবার কেবল চুলে নয়, ঘাড় থেকে একেবারে পায়ের পাতা পর্যন্ত লাগান। আলতো ম্যাসাজ করে নিন। তারপর হালকা গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিন। দেখুন, কেমন বোধ করছেন। হার মানাবে বডি লোশনকে। বাড়তি সময় ব্যয়ের ঝঞ্ঝাটও কমবে। ত্বক হবে প্রাণবন্ত।
নখের কথা তো আর বাদ দেয়া যায় না। এ জন্য সময় লাগবে খুব কমই। নেইলপলিশ লাগানো থাকলে তুলে ফেলুন। হাতের কাছে লেবুর রস পেলে তা দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করুন। অন্যথায় পানিই ভরসা। ঘন লোশন নখের উপর এবং চারপাশে ভালো করে মাখিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। লিপবামও ব্যবহার করতে পারেন। তারপর দেখুন, আপনার নখ কেমন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে!
একটু চমকে দিন না। কীভাবে? মেকআপে ত্বকের ত্রুটি ঢাকতে সাহায্য করে কনসিলার। তবে পুরোপুরি পারে না। তাহলে কী করা? বেড়াতে গেলে তো আপনার হাতে থাকবে না ধীরে-সুস্থে মেকআপ নেয়ার। সে জন্য ছোট্ট পরামর্শ। আপনার ত্বকের টোন যেমনই হোক, চিন্তা নেই। ঠোঁটে দিন উষ্ণ গোলাপি আভা। অর্থাৎ ব্যবহার করুন পিঙ্ক লিপস্টিক। তাতে করে সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ হবে সেদিকেই। ব্যস, আপনিও জিতে গেলেন। ঠোঁটের পাশাপাশি চোখ বাঙময় করতে না পারলে কি চলে? সে কাজে আইলাইনারের জুড়ি নেই। চোখের বাইরের এক কোণ থেকে শুরু করে অন্য কোণ পর্যন্ত লাইনার টেনে নিন। অবশ্যই পাপড়ির ওপর দিয়ে। এবার আপনার সুন্দর হয়ে ওঠার পর্বটি কমপ্লিট হলো তো? সাজের জিনিসপত্র লেগেছে কম, ফলে ট্রাভেল ব্যাগের জায়গাটাও খানিকটা বেঁচে গেল। তাই না?
উপভোগ্য হোক আপনাদের বেড়ানো।