ব্যাপারটা সত্যিই জটিল এবং বিস্ময়কর! এক রহস্যময় সৃষ্টির গৌরবময় অহঙ্কার নিয়ে যুগের পর যুগ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা কুতুব মিনার আবারো উঠে এসেছে সংবাদে তার রহস্যময় সৃষ্টির আর একটি দিক উন্মোচনের মাধ্যমে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের বদৌলতে জানা যায়, ‘কুতুবমিনারের ছায়ার দৈর্ঘ্য থেকে মিলেছে গোটা পৃথিবীর পরিধির মাপ!’
এক পরীক্ষার সাহায্যে দিল্লির ১০০টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী অঙ্ক কষে বের করেছে এই মাপ৷ যা কি না ৯৫ শতাংশ সঠিক বলে দাবি করেছেন স্পেস (সায়েন্স পপুলারাইজেশন অ্যাসোসিয়েশন অফ কমিউনিকেটর অ্যান্ড এডুকেটর)-এর সভাপতি সি বি দেবগণ৷
দেবগণ বলেন, সূর্য ঘড়ির ছায়াদণ্ডের মতো কুতুব মিনারকে ব্যবহার করে মাপজোক করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা৷ মিনারের অসংখ্য ঝুলন্ত বারান্দার ছায়া এই মাপের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করলেও সেসব বাদ দিয়েই অঙ্ক কষেছে ওই শিক্ষার্থীরা৷ তবে শুধু পৃথিবীর পরিধিই নয়, ওই পরীক্ষাকালে মিনারের সবচেয়ে ছোট ছায়াও মেপেছে তারা৷
এই প্রথম কুতুব মিনারের এমন ব্যবহার হল৷”তবে পরীক্ষাটি মোটেই নতুন নয়”, জানাচেছ স্পেস৷ আজ থেকে ২২৫৩ বছর আগে পরীক্ষাটি প্রথম করেন গ্রিক দেশের অঙ্ক এবং ভূগোলবিদ র্যাটসথ্যনিজ৷ আর্কিমিডিসের বন্ধু র্যাটসথ্যনিজ পৃথিবীর প্রথম ভৌগোলিক মানচিত্র তৈরি করেন৷ মিশরে থাকাকালীন সেখান থেকেও কোথাও না গিয়ে বলে দেন পৃথিবীর পরিধির মাপও৷ সূর্য যখন ভূপৃষ্ঠের ঠিক মাথার উপরে থাকে তখন একটি ছায়াদণ্ডের সাহায্যে সূর্যের কৌণিক উচচতা মেপে তার সঙ্গে নিজের দেশের পরিধির মাপ তূলনা করে অঙ্ক কষেন র্যাটসথ্যনিজ৷
দিল্লির স্কুল ছাত্রীদের নিয়ে সেই একই পতিতেই পৃথিবীর পরিধি মেপে বের করার পরীক্ষা করে স্পেস৷ সংস্হার তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিবছর ২৩ সেপ্টেম্বর যেহেতু সূর্য নিরক্ষরেখার ঠিক উপরে ৯০ ডিগ্রি কৌণিক অবস্হানে থাকে, সেহেতু, ওই দিন দুপুরে সবথেকে ছোট ছায়া তৈরি হয়৷ এই প্রথম কুতুব মিনারকে সূর্যঘড়ির ছায়াদণ্ডের মতো ব্যবহার করে এই সবচেয়ে ছোট ছায়া মাপা হল৷ এর আগে অবশ্য যন্তরমন্তরের রামযন্ত্র ব্যবহার করেও এই পরীক্ষা করা হয়েছে৷