গুগলম্যাপে “ফেলানী রোড”

গুগলম্যাপে “ফেলানী রোড”

ফেলানী

ফেলানী হত্যার রায় কোনো সান্ত্বনার বাণী পৌঁছে দিতে পারেনি বাংলাদেশের আপামোর জনসাধারণের মাঝে। বরং এ রায়, উসকে দিয়েছে বিবেকবোধকে, মানবিক চিন্তা-চেতনাকে। ফুঁসে উঠেচে সাধারণ মানুষ। গাঁও-লাইন থেকে শুরু করে অনলাইন সর্বত্র জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। এরই মাঝে অনলাইনে ঘটে গেছে এক বিস্ফোরণ! অনলাইন সেবকদের দাবী ছিলো, ছিল বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে গুলশান সার্কেল-১ এর ১৪২ নম্বর সড়কটি (http://goo.gl/IL1dwC) ‘ফেলানী রোড’ নামে নামকরণ করা হোক। ফেসবুকসহ অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ব্লগে নেটিজেনদের অব্যাহত দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে গুগল ম্যাপস বাংলাদেশ টিম গুগলম্যাপস-এ “ফেলানী রোড” নামটি যুক্ত করে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রাতিষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি না থাকলেও শুক্রবার দুপুর থেকে গুগল ম্যাপে যুক্ত হয়েছে নতুন এই সড়কের নাম।

গুগল আর্থ থেকেও এই সড়কটির নাম দেখানো হচ্ছে- ‘ফেলানী রোড’ হিসেবে। বাংলা অক্ষরেই তেজগাঁও-গুলশান সংযোগ সড়কের পাশের সড়কটিকে ‘ফেলানী রোড’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে।

‘ফেলানী’ স্মরণে একাধিক ফ্যানপেজ খুলে এই দাবি তুলে ধরা হয়েছে। ‘ফেলানী রোড’ নামের ফেসবুক ফ্যানপেজে ১৩ সেপ্টেম্বর ভোর ৩টা ২৬ মিনিটে খোলা হয়েছে ‘চেকইন’ পেজ।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই পেজটির লাইক সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে এই সংখ্যা। বাড়ছে ‘ফেলানী সড়ক’ পরিভ্রমণকারীর সংখ্যাও।

ফেসবুকে ফেলানী রোড গুলশান ঢাকা নামের লাইক পেজে বল হয়েছে, “যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তারা গুগল ম্যাপসের অ্যাপ চেক করে দেখে নিতে পারেন, ফেলানী রোড অ্যাড হয়ে গেছে।

ফেসবুকে চেক ইন এর জন্য সার্চ করলেও আমাদের Felani Road, Gulshan, Dhaka (http://goo.gl/uPF6G9) লোকেশন পেজ পেয়ে যাবেন। চলুন ভার্চুয়ালি সবাই আজকের দিনটা কাটাই ফেলানী রোডে।

এটাই আমাদের প্রতিবাদ। এটাই আমাদের আন্দোলন। এর চেয়ে শান্তিপূর্ণ আর অহিংস কিন্তু জোরালো আর কী হতে পারে?”

এদিকে গুগল ম্যাপের বাইরেও অনেক স্থানের নাম “ফেলানী” রাখার দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

যেমন ফেসবুকে একজন লিখেছেন, “সরকার দিক আর না দিক গুলশানে ইন্ডিয়ান হাই কমিশনের রাস্তাসহ পুরো এলাকা আজ থেকে ফেলানী রোড।

কেউ না ডাকলে আমি ডাকব, আপনি ডাকবেন, আমার আপনার বাড়ির লোকেরা ডাকবে, আমাদের বন্ধুবান্ধবরা ডাকবে। নাটক সরণিকে বেইলী রোড আর কুদরত-ই-খুদা সড়ককে এলিফেন্ট রোড ডাকতে পারলে গুলশানের ঐ এলাকাকে ফেলানী রোড ডাকা যাবে না কেন?”

আমার ব্লগে একজন লিখেছেন, “ঢাকা কোলিকাতা ট্রেন এর নাম ফেলানী এক্সপ্রেস, ঢাকা আগরতলা বাস লাইন এর নাম ফেলানী ট্রান্সপোর্ট এবং শাহ্‌জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম বদলায়ে ফেলানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা হউক।

পেট্রাপোল স্থল বন্দর হবে ফেলানী স্মৃতি বন্দর, সকল ভারত থেকে আসা নদীর উপরের সেতুর নাম হবে ফেলানী সেতু, আর বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সীমান্ত চৌকির নাম হবে ফেলানী চৌকি।”

ফেলানী সড়কের বাইরে “ফেলানী স্মারক ডাকটিকেট” প্রকাশের ব্যাপারেও কথা বলছে সোশ্যাল মিডিয়া। ইতোমধ্যে ফেলানী হত্যাকাণ্ড বিচারের রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে একটি পোস্টকার্ড তৈরি করেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।

পোস্টকার্ডে ভারতীয় হাইকমিশনের ঠিকানায় ‘ফেলানী সড়ক’ যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে ডাকটিকেট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সীমান্তকাঁটা তারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশের ছবি। এই ‘স্মারক ডাকটিকেট’টি এখন জায়গা করে নিয়েছে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর প্রোফাইল ছবি হিসেবে।

সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কুড়িগ্রাম সীমান্তের ‘ফেলানী হত্যা’ বিচারের রায়ে সংক্ষুব্ধতা দিনদিন বাড়ছে। অনলাইন সামাজিক প্লাটফর্মগুলোতে প্রতিমুহূর্তে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন স্ট্যাটাস, কমেন্ট আর আইডিয়া।

এসব আইডিয়ার সমন্বয়ে ‘ফেলানী সড়ক’ আর ‘স্মারক ডাকটিকেট’ প্রকাশের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠছে সর্বমহল।

আজ এ কথা দিনের আলোর মতোই পরিস্কার যে, অন্তত এই স্বর্ণালী প্রযুক্তির যুগে বড় ধরণের অন্যায় করে কেউই পার পাবে না।

-নীপ রহমান পিয়াল

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.