চুল, ত্বক আর নখের জন্য

চুল, ত্বক আর নখের জন্য

চুল

 

দীর্ঘদিন ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে কী কী খাবার বেছে নিতে হবে এবং এর উৎস কী কী

ভিটামিন সি: লেবু ও লেবুজাতীয় সব ফল, পেয়ারা, আমলকী, স্ট্রবেরি, পেঁপে, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।

ভিটামিন ই: আমন্ড বাদাম, অ্যাভোকাডো, হ্যাজেলনাট, সূর্যমুখী ও অন্যান্য শস্যের তেল, বিভিন্ন ধরনের শস্যের বীজ ইত্যাদি।

ভিটামিন এ: লিভার, ডিম, দুধ, বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত খাবার ইত্যাদি।

ভিটামিন বি: ভিটামিন বি সমৃদ্ধ সব ধরনের খাবার ও বি১২ ধরনের খাবার যেমনÑ চর্বি ছাড়া গরুর মাংস, পনির, ডিম, লিভার ইত্যাদি।

জিঙ্ক: লিভার, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, সার্ডিন মাছ ইত্যাদি।

সালফার: পেঁয়াজ ও রসুন।

শুকনো অ্যাপ্রিকট, টাটকা ফল খাবেন; যেমন, লেবু ও লেবুজাতীয় সব ফল, পেয়ারা, আমলকী, স্ট্রবেরি, পেঁপের পাশাপাশি তরমুজ, খরমুজ, ফুটি, জামজাতীয় ফল ইত্যাদি। টাটকা ফলে আপনি আঁশের পাশাপাশি পাবেন বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল। পুষ্টিগুণ বাড়ানোর জন্য ফলের উপরে বিভিন্ন ধরনের শস্যের বীজ বা বাদামের গুঁড়া ছড়িয়ে নিতে পারেন।

ত্বকের উজ্জ্বলতা ও তারুণ্য ধরে রাখতে কালোজিরা, টমেটো, চর্বিহীন লাল মাংস, গ্রিন টি, গ্রিন বিনস্, আখরোট খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

এ ছাড়া ত্বকের সুস্থতা, ঔজ্জ্বল্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে সাহায্য করে সবুজ শাক ও সবজি, পনির, টকদই, দুধ, ডিম, মাছ ইত্যাদি।

প্রতিদিন বেশি বেশি পানি পান করবেন। বিভিন্ন দেশি ফলের জুস তো খাবেনই। জাম, তরমুজ, খরমুজ, বাঙ্গির রস খাবেন।

 

চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে আপনি নিচের খাবারগুলো বেছে নিতে পারেন

কেবল বাইরের পরিচর্যায় নয়, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য খাবারতালিকায় প্রয়োজনীয় কিছু খাবার রাখতে হবে; হয়তো এর কয়েকটির আলোচনা ইতিমধ্যেই হয়েছে; তার পরও চুলের জন্য যেসব খাবারের প্রয়োজন, সে বিষয়ে কিছুটা ধারণা দিচ্ছি।

চুল-১

দুধ ও দুধের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার: লো ফ্যাট দুধ, পনির খেতে পারেন; এতে আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়বে এবং চুল ভেঙে পড়ার প্রবণতা হ্রাস পাবে।

বিভিন্ন ধরনের মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকরাল (সামুদ্রিক মাছ) খেতে পারেন; এতে আছে প্রয়োজনীয় ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আমাদের চুল পড়া বন্ধে সাহায্য করে। মাছে ভিটামিন বি১২ রয়েছে, যা স্বাস্থ্যকর চুল রক্ষায় সাহায্য করে।

হোল গ্রেইনস খাবেন; এতে ভিটামিন বি, জিঙ্ক ও আয়রন পাবেন। জিঙ্ক আমাদের চুলের ঘনত্ব ও বৃদ্ধিতে যে হরমোন কাজ করে, তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে এর উপস্থিতি চুলকে সুরক্ষিত রাখবে।

বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন, আখরোট, কাজুবাদাম ইত্যাদিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক রয়েছে। জিঙ্ক একটি প্রয়োজনীয় মিনারেল; যা আমাদের চুল পড়া বন্ধে এবং চুল পাতলা হওয়া রোধে সাহায্য করে। আখরোটে রয়েছে সেলেনিয়াম; যা আমাদের মাথার ত্বককে সুস্থ এবং খুশকি থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু পরিমাণে বাদাম সংযোজন করলে আমাদের মাথার ত্বক ও চুল সুস্থ থাকবে।

বিভিন্ন ধরনের শিমজাতীয় সবজি চুলের জন্য খুব দরকার। এতে যে শুধু পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন ও জিঙ্ক রয়েছে তা নয়; প্রোটিনও রয়েছে। যা আমাদের চুলের গঠনে সাহায্য করে। এতে বায়োটিনও রয়েছে। বায়োটিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন বি; যা চুলের ভেঙে পড়া রোধে সাহায্য করে।

kaniz-00

চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং দৃষ্টিকে আরও উজ্জ্বল করতে গাজরের ভূমিকার কথা আমরা জানি। গাজর আমাদের সুন্দর চুলের অধিকারীও করতে পারে। এর ভিটামিন এ চুলের ন্যাচারাল অয়েলকে মেইনটেন করে চুলে আনে শাইনি অয়েল কন্ডিশন্ড লুক।

চুলের গঠনের জন্য প্রোটিন খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান; আপনি যদি পর্যাপ্ত ডিম না খান, আপনার চুলের গঠন বাধাগ্রস্ত হবে। আপনার খাবারের মেন্যুতে এটি রাখুন; চুলের জন্য ডিমের পুষ্টিগুণ খুবই প্রয়োজন। এতে প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন ও ভিটামিন বি১২ রয়েছে।

রঙিন সবজি আমাদের শরীরের জন্য যেমন প্রয়োজন, তেমনি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও জরুরি। গাঢ় সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে আয়রন ও ক্যালসিয়াম; যা চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেয়। এই রঙিন ও গাঢ় রঙের সবজি আমাদের মাথার ত্বকে ন্যাচারাল অয়েল সিবাম বাড়ায়; এটি চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার। তা ছাড়া সবুজ খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

খাবারের তালিকায় প্রোটিনের ঘাটতি চুলের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। চুলে ভঙ্গুরতা দেখা দেয়; এই সমস্যা প্রকট হয়ে পড়লে রঙেও পরিবর্তন আসতে পারে। হাঁস-মুরগির মাংসে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে; যা আপনার চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চুলের স্বাস্থ্যের জন্য গরু ও ভেড়ার মাংস খেতে পারেন; এতে পাবেন জিঙ্ক। এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ এবং সুস্থ ও সুন্দর চুল মেইনটেন করার জন্য জরুরি।

ভিটামিন বি৬ এর ঘাটতি চুল পাতলা হয়ে যাওয়া এবং চুল পড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এমনকি অন্য সব ভিটামিনকে এটি শরীরের কাজে লাগাতে সাহায্য করে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এর উপাদান আমাদের শরীরের রেড ব্লাড সেল তৈরিতে সাহায্য করে; যা চুলের ফলিকলে প্রতিফলিত হয় এবং চুলে উজ্জ্বলতা এনে এর বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

আমরা ইতিমধ্যেই প্রোটিনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রোটিনের কিছু যৌগিক কার্বোহাইড্রেটের প্রয়োজন, যেন এটি মজবুত চুল তৈরি করতে সক্ষম হয়। লাল চাল হলো সেই শক্তি তৈরির সহায়ক। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি, যা মজবুত চুলের জন্ম ও বৃদ্ধিতে খুব জরুরি।

সুস্থ নখের সন্ধান পেতে চাইলে আপনার খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে পুষ্টিকর সব খাবার। যেসব খাবার আপনি বেশি পছন্দ করেন, সেগুলো পরিমিত মাত্রায় খেতে পারেন; তবে এর সঙ্গে আপনার প্রিয় খাবারগুলোর সঙ্গে কিছু পুষ্টিকর ফল এবং সবজি, বাদাম, মাছ, ডিম এবং নখবান্ধব আরও কিছু খাবার সংযোজন করলে ভালো হয়। যেমনÑ আপেল, অ্যাসপ্যারাগাস, লাল চাল, শসা, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আঙুরজাতীয় ফল, স্যামন মাছ, বিভিন্ন ধরনের শস্যের বীজ, সয়া, টুনা মাছ, আঁশযুক্ত খাদ্য ইত্যাদি।

যদি দীর্ঘদিন ধরে সুস্থ, শক্ত ও সুন্দর নখ চান, আপনার খাবারের এই তালিকায় পরিবর্তন না আনাই ভালো।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.