নানান কল্পকাহিনী

নানান কল্পকাহিনী

তানভির আহমেদ

-moon-a[1]

চাঁদে অভিযান নিয়ে কত কল্পকাহিনী লেখা হয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না। পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব তিন লাখ চুরাশি হাজার চারশ তিন কিলোমিটার। এত কাছে তবু এত দূরে থাকা চাঁদকে নিয়ে তাই মানুষের ভাবনার জগৎ ছিল সবসময়ই রঙিন। মনের মাধুরী মিশিয়ে মানুষ বলে গেছে বিভিন্ন গল্প, সাজিয়েছে আতঙ্ক। তবু চাঁদকে জয় করার ইচ্ছা নিয়ে কখনো দমে যায়নি মানুষ। প্রযুক্তি আর মেধার সর্বোচ্চ দিয়ে চেয়েছে চাঁদ নিয়ে সব রহস্য ভেদ করতে। অনেকেই তাদের লেখার মাধ্যমে চাঁদকে নিয়ে এসেছেন বইয়ের পাতায়। কেউবা এঁকেছেন কমিকস, কেউ লিখেছেন গল্প-উপন্যাস আর কেউ বানিয়েছেন চলচ্চিত্র। চাঁদকে নিয়ে গল্প লেখা শুরু হয়েছে ১৯৬৯ সালে চাঁদে মানুষের অবতরণের অনেক আগে থেকেই। ১৮৬৫ সালে জুলভার্ন লেখেন ‘ফ্রম আর্থ টু দি মুন’।

তার এই কল্পকাহিনীতে একটি মহাকাশযান আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে যাত্রা শুরু করে চাঁদে অ্যাডভেঞ্চার করে প্রশান্ত মহাসাগরে অবতরণ করে, অনেকটা অ্যাপোলোর মতোই। ১৯০১ সালে প্রকাশিত হয় এইচজি ওয়েলস-এর ‘দি ফার্স্ট ম্যান অন দ্য মুন’। এই গল্পে মানুষেরা এক ধরনের পদার্থ ব্যবহার করে, যা নাকি নিজে থেকেই বাতাসে ভাসতে পারে। কল্পকাহিনী লেখকরা কখনই থেমে থাকেননি। তারা একের পর এক স্বপ্ন ছড়িয়ে গেছেন মানুষের মনে। লিখে গেছেন বিভিন্ন সায়েন্সফিকশন। এসব সায়েন্স ফিকশনে চাঁদকে নিয়ে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে সেগুলো অজানা কিছু জানার আকাঙ্ক্ষা আরও বাড়িয়েছে। জানার তেষ্টা বেড়েছেই শুধু। এর পর আইজ্যাক আসিমভ একটি কল্পকাহিনী লেখেন ১৯৩৯ সালে। আর কাহিনী অনুযায়ী ঘটনা ঘটে ১৯৭০ সালে। আর্থার সি ক্লার্কও লিখেছিলেন ১৯৫১ সালে।

-moon-a[1]

নাম ‘প্রিলিউড টু স্পেস’। এ ছাড়াও আরও অনেকেই চাঁদে অভিযান নিয়ে গল্প-উপন্যাস লিখেছেন। এসব কল্পকাহিনী লেখকদের অনেকের লেখা বই থেকে তৈরি হয় চলচ্চিত্র। এ ছাড়া বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ফিল্মও নির্মাণ করা হয়েছে। তেমনই একটি হচ্ছে ‘এ ট্রিপ টু দি মুন’, যা ছিল নির্বাক চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির মূল কাহিনীর শুরু হয় জুলভার্নের ‘ফ্রম আর্থ টু দি মুন’ থেকে। চলচ্চিত্রটি ১৯০২ সালে মুক্তি পায় আর মানুষ স্বাদ পায় চন্দ্রজয়ের।

এসব স্বপ্ন দেখানো চলচ্চিত্রকাররা এবং লেখকরা সব সময়ই চেয়েছেন মানুষের মনে চাঁদকে নিয়ে জমে থাকা যত রহস্য যেন বেরিয়ে আসে সত্য, সুন্দর হয়ে। মানুষের চাঁদ বিজয়ের পেছনেও কিন্তু এসব সায়েন্স ফিকশনের ভূমিকা অনেক। চাঁদকে অনেক কাছ থেকে দেখার জন্যই কি শুধু চাঁদের দিকে ছুটে যাওয়া। তা কিন্তু নয়। মানুষের চোখের সীমার অতিক্রম করার অদম্য ইচ্ছাই ছিল সবটুকু। প্রযুক্তির উন্নয়নেও ছিল মানুষের এই জানার আকাঙ্ক্ষা। তাই চাঁদ নিয়ে কল্পকাহিনী তখনো ছিল এখনো আছে। আবেদন কমেনি এতটুকু। রহস্যময় চাঁদকে জানতে নভোচারীরা তাদের প্রাণ বাজিয়ে রেখে ছুটেছেন মহাকাশে। চাঁদকে এনেছেন পায়ের তলায়। তবুও অনেক রহস্য রয়ে গেছে এখনো।

 

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.