‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয় নিবেদন’

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয় নিবেদন’

সৈয়দ জাহিদ হাসান: বাংলাদেশের নির্ভীক অভিভাবক আপনাকে শ্রদ্ধা জানাই । আপনার নির্মল ও নিঃস্বার্থ নেতৃত্ব একাই, বিবর্ণ, আন্তর্জাতিক যড়যন্ত্রে বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আপনি নিজেও জানেন আপনার চারপাশ কী অন্ধকার, কী অন্যায়, কী দেশদ্রোহিতায় ভরা। আপনি একাই আলো হয়ে জ্বলে রয়েছেন গরিব দেশের গরীয়ান ‘গণভবনে’। গণভবনের ওই এক চিলতে আঁধারজয়ী আলোই আজ আমাদের একমাত্র ভরসা। আপনি কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর নন, আপনি জনতার। তাই জনতাই দেশ ও জাতির স্বার্থে জীবনোৎসর্গ করে আপনাকে পরমায়ু দান করে যায়। একথার প্রমাণ জীবনে আপনি বহুবার পেয়েছেন।

আকস্মিক করোনা-পরিস্থিতি পুরো পৃথিবীতেই ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে। মানুষকে করেছে আতঙ্কিত, বেদনার্ত, মানবিক। এই দুর্যোগ মানুষের ইতিহাসে অভূতপূর্ব। এমন মৃত্যুময় মলিন দিনে কোনো দেশের কোনো মানুষ কোনো দস্যুতা প্রদর্শন করেনি, ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশে আপনার প্রদত্ত ত্রাণ চুরি হয়েছে, আপনার যৌক্তিক আদেশ উপেক্ষিত হয়েছে, ছদ্মবেশী শয়তানেরা করেছে দারুণ দুর্নীতি। করোনা আমাদের দেখিয়ে দিল, এদেশের বহুলোক স্বপ্নের সভ্যদেশের নাগরিক, আধা নাগরিক হয়ে অর্থ উপার্জনে সামান্য সফল হলেও, সভ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে পুরোপুরি। করোনা আরও দেখিয়ে দিল এদেশে কেবল আপনিই ধার্মিক আর আমরা সকলেই ধর্মান্ধ। ডুবুডুবু বাংলাদেশকে নিরাপদে বন্দরে পৌঁছাতে আপনার আন্তরিকতার বিন্দু পরিমাণ অভাব নেই, কিন্তু বাংলাদেশের কতিপয় দুর্বৃত্ত চায় না আপনি জয়ী হোন।

আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে ১৯৭৪ সালে মহান পিতার শাসনামলে খাদ্য সচিবের (আবদুল মোমেন খান) ইচ্ছাকৃত ষড়যন্ত্র বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ ডেকে এনেছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক সপরিবারে নিহত হলে ওই ব্যর্থ সচিব জিয়াউর রহমানের আমলে খাদ্যমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। দারুণ এই দুঃসময়ে একটু ভেবে দেখা দরকার, আপনার সরলতা ও আস্থার সুযোগ নিয়ে কেউ কোনো নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে কিনা।

আজ আপনার সঙ্গে অনেকেই প্রাণপণে লড়াই করে বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। এরাই তারা যারা আপনাকে জীবন দিয়ে ভালোবাসে, যারা মনে করে আপনার হাতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। বাঙালি এখনও মোহঘুমে বিভোর। আপনার নির্মম, নির্লোভ, নিরপেক্ষ শাসনের আঘাত না-পেলে বাঙালির মরণঘুম ভাঙবে না। শুধু হে সন্তান সুস্থ থাকে না মাঝে মাঝে শাস্তিরও দরকার হয়। আশা করি আপনি ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করবেন। দেশদ্রোহীরা যা ইচ্ছে বলুক, আমরা বিশ্বাস করি আপনার শাসনে এদেশ দগ্ধ নয়।

লেখক : কবি ও কথাশিল্পী

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.