১৭ বছরের পুরোনো পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির মামলায় ভারতের বিহার রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভারতের একটি আদালত। পাশাপাশি তাকে ২৫ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে। এই সাজার কারণে লালু প্রাসাদ লোকসভার সদস্যপদও হারাচ্ছেন । এ ছাড়া, আগামী ছয় বছর কোনো নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না। উল্লেখ্য, গত ২৮ বছর আগে এই মামলার তদন্ত শুরু হয়।
১৯৮৫ সালে বিহার ট্রেজারি ও কিছু সরকারি বিভাগ তহবিল তছরুপের ঘটনা তত্কালীন কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল টি এন চতুর্বেদীর দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি বিষয়টি তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর সিংকে অবহিত করেন। তখনই তদন্তের মাধ্যমে আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে বিভিন্ন মহলের একটা নিবিড় যোগসাজশ খুঁজে পান তিনি।১৯৯২ সালে রাজ্যের দুর্নীতি দমন ভিজিল্যান্স বিভাগের পরিদর্শক বিভূতিভূষণ দ্বিবেদী পশুপালন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি-সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও ভিজিল্যান্স বিভাগের বড়কর্তার যোগসাজশের কথা উল্লেখ করেন।
সেই প্রতিবেদনে ভুয়া বিলে পশুখাদ্য, ওষুধ ও বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম কেনার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের কথা বলা হয়। আরও বলা হয়, চুরির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক এবং অপরাধীদের একটা চক্র জড়িত।১৯৯৬ সালে পশ্চিম সিংভূম জেলার ডেপুটি কমিশনার অমিত খারে চাইবাসা পশু বিভাগে তল্লাশি চালিয়ে কোটি কোটি টাকা তছরুপের সন্ধান পান। লালুপ্রসাদ তখন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্তকারীদের সদিচ্ছা ও চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, সন্দেহের তীর ছিল তাঁদের দিকে। অবশেষে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিবিআই।
সিবিআইয়ের তত্কালীন পূর্বাঞ্চলীয় পরিচালক উপেন বিশ্বাস নানা বাধা পেরিয়ে লালুকে তদন্তের আওতায় আনেন। তদন্তে তার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে মামলায় জড়ানো হয়। এই মামলায় আদালত লালুসহ ৪৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। বৃহস্পতিবার নিরাপত্তার কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাজা ঘোষণা করেন আদালত।
-গ্রন্থণা : নাসিম মোমেন