‘হ্যালো জিমেইল’ দুই তরুণের স্বপ্নের ফসল

‘হ্যালো জিমেইল’ দুই তরুণের স্বপ্নের ফসল

hello_gmail-

 

তারুণ্য মানেই স্রষ্টা। প্রভিভাধর তরুণরাই করে সৃষ্টি। নির্মাণ করে নতুন জগত, উন্মোচিত করে নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশের তরুণরাও এ তেকে যে পিছিয়ে নেই তা তারা প্রমাণ করে চলে চলেছেন তাদের সৃষ্টিশীল কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে। দেশ-বিদেশে তাদের এই সৃষ্টিশীল কর্মকান্ড ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়ে চলেছে।

অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের তেমনই প্রতিভাধর দুই তরুণের ‘হ্যালো জিমেইল!’ নতুন সংযোজন। ‘হ্যালো জিমেইল’ নামে একটি রোবট তৈরি করে বিজ্ঞাপণ জগতে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তরুণ তারা।

পেছনের গল্প থেকে যা জানা যায় : লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডের বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪ লাখ ৪০ হাজার কর্মী রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই আইবিএমএর লোটাস মেইল সার্ভার ব্যবহার করতেন। বিশ্বের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই নিজেদের সুবিধার জন্য বিশেষ প্রতিষ্ঠানের মেইল সার্ভিস ব্যবহার করে থাকে। লাফার্জ সুরমার মতো প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী তাদের মেইল সার্ভার পরিবর্তনের উদ্যোগ নেন।

তবে এখানে একটা বিপত্তি দেকা দিলো, আর তা হচ্ছে, এ খবরটি সব কর্মীদের মধ্যে পৌঁছানো নিয়ে। লাফার্জ সুরমা কর্তৃপক্ষ সব কর্মীদের মাঝে এ খবর পৌঁছানোর জন্য বিশেষ ক্যাম্পেইনের সিদ্ধান্ত নিলেন। পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশে ক্যাম্পেইন পরিচালনার সিদ্ধান্ত হলো।

বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর কাছে নতুন আইডিয়া চায় কোম্পানিটি। এসময় কাজটি পায় স্পেলবাউন্ড নামে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা। তাদের দলের সঙ্গে যোগ দেন তরুণ আরও একটি দল। তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ‘সিঙ্গুলারিটি’।

কাজটি নিয়ে যেভাবে এগিয়ে চলা পথ : এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘সিঙ্গুলারিটি’র দুই প্রতিষ্ঠাতা মীর শাহরুখ ইসলাম এবং জাফীর শাফী চৌধুরী রোবট নিয়ে এক অভিনব আইডিয়া নিয়ে এগিয়ে আসেন।

দুজনই পড়াশুনা করছেন। জাফীর শাফী চৌধুরী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের ছাত্র এবং মীর শাহরুখ ইসলামও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি একই বিভাগে পড়াশোনা করছেন। তাদের সঙ্গে আরও একজন সঙ্গী কাজী মোঃ অসিফ আছেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসে বিজনেস বিভাগে পড়াশোনা করছেন।

মীর শাহরুখ ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, রোবট তৈরি করে সেটিকে আমরা জিমেইলের আইকন হিসেবে দেখাতে চেয়েছি। অ্যালুমিনিয়ামের এ রোবটটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ২১ দিন। নীল রঙের চোখসহ রোবটটি উচ্চতায় ৫ ফিট। আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স কোডিংও তৈরি করেছেন সিঙ্গুলারিটি।

সিঙ্গুলারিটির তৈরি এ রোবটটি কথাও বলতে জানে। এ রোবটটি অফিসের প্রতিটি কর্মীর সঙ্গে গিয়ে কথা বলতে সক্ষম। রোবটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যালো জিমেইল’।

রোবটটি প্রতিটি কর্মীর কাছে গিয়ে জিমেইলের বিভিন্ন ফিচার সম্পর্কে জানাবে। সঙ্গে বলে দিবে জিমেইল ব্যবহারের নানান সুবিধা। তারপর পুরানো মেইল সার্ভার থেকে জিমেইলের নতুন মেইল সার্ভারে চলে আসার আমন্ত্রণও জানাবে রোবটটি।

শাহরুখ এ প্রসঙ্গে আরো বলেছেন, লাফার্জ চেয়েছিল ৫ সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের সব কর্মী নতুন মেইল সার্ভারে চলে যাবেন। কিন্তু দেখা গেল আমাদের রোবটের আমন্ত্রণে মাত্র ২ সপ্তাহের মধ্যে লাফার্জ সুরমার সব কর্মী নতুন মেইল সার্ভারে চলে এসেছেন। আমাদের এই ক্যাম্পেইনে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বব্যাপী এই আইডিয়াটিকেই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে নির্বাচিত করে লাফার্জ কর্তৃপক্ষ।

‌শুধু তাই নয়, অসাধারণ এই আইডিয়ার ফসলটি এবছরের ব্র্যান্ড ফোরামের গ্র্যান্ড প্রিক্স অ্যাট কমওয়ার্ড পুরস্কার অর্জন করে।

বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, ‘হ্যালো জিমেইল’ আইডিয়াটিকেই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে নির্বাচিত করে লাফার্জ কর্তৃপক্ষ অনেকভাবেই উপকৃত হতে পারে তবে আমাদের অহঙ্কার হচ্ছে, ‘এ কর্ম, আমাদেরই দুই কৃতী সন্তানের কর্ম। তাদের মেধা ও মননের উপযুক্ত ফসল’। আমারা তাদের কাছে এমনি তরো আরো অনেক সৃষ্টিশীর কর্মকান্ড প্রত্যাশা করি।

-সময়ের কথা ডেস্ক

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.