সিটিসেল কি বন্ধ হয়ে যাবে?

সিটিসেল কি বন্ধ হয়ে যাবে?

সিটি সের

প্রতিবেদনটি তৈরী করেছেন এম. মিজানুর রহমান সোহেল 

দি ন যতই যাচ্ছে বাংলাদেশের পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা ক্রমশ ততই কমে যাচ্ছে। গত ৩ বছরে সিটিসেল মোট ৫ লাখ ৯২ হাজার গ্রাহক হারিয়েছে। ২০১০ সালের আগস্ট মাসে সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৯ লাখ ৭৫ হাজার। এদিকে ৩ বছর পর ২০১৩ সালের জুলাই মাসে এসে সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা হয়েছে ১৩ লাখ ৮৩ হাজার।

পরিএছাড়া অর্থাভাবে দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি টুজির তরঙ্গ লাইসেন্স নবায়ন মাশুলের শেষ কিস্তির অর্থ সরকারের কাছে জমা দিতে পারেনি সিটিসেল। এভাবে চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানটি এক সময়ে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহবুব চৌধুরী বলেছেন, সিডিএমএ প্রযুক্তির একমাত্র কোম্পানি হওয়ায় গ্রাহকরা হয়তো সিটিসেলে আগ্রহ হারাচ্ছেন। আর ভয়েসকলে গ্রাহক সংখ্যা কমলেও সিটিসেল মূলত এখন ডেটা সার্ভিসের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে।

 

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, গত ৩ বছরে প্রায় ৬ লাখ গ্রাহক হারালেও সম্প্রতি তাদের গ্রাহক আরও দ্রুত কমে যাচ্ছে। শুধু চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই কোম্পানিটির গ্রাহক কমেছে দেড় লাখের বেশি। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ২৫ হাজার করে গ্রাহক হারাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহক হ্রাসের কারণ হিসেবে সিটিসেল বলছে, প্রযুক্তিগত কারণে তারা অন্য মোবাইল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।

দেশের ৬টি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে শুধু সিটিসেল কোড ডিভিশন মাল্টিপল অ্যাকসেস (সিডিএমএ) প্রযুক্তি ব্যবহার করে। বাকি ৫টি অপারেটর গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল (জিএসএম) প্রযুক্তিনির্ভর। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে যেখানে অন্য সব কোম্পানির গ্রাহক বেড়েছে, সেখানে সিটিসেলের কমেছে।

জানুয়ারিতে সিটিসেলের গ্রাহক ছিল সাড়ে ১৫ লাখ, যা জুন মাসে নেমে আসে ১৩ লাখ ৮৩ হাজারে। অর্থাৎ ৬ মাসে ১ লাখ ৬৭ হাজার গ্রাহক সিটিসেল ত্যাগ করে। ফেব্রুয়ারিতে সিটিসেল সবচেয়ে বেশি ৯১ হাজার গ্রাহক হারিয়েছে। মার্চে ৮ হাজার গ্রাহক কমেছে। এপ্রিলে কমেছে ২৬ হাজার।

মে মাসে ১৭ হাজার গ্রাহক এবং জুন মাসে ২৫ হাজার গ্রাহক সিটিসেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। জুন মাস শেষে দেশের ৬ মোবাইল ফোনের গ্রাহকসংখ্যা হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ ৫১ হাজার। এর মধ্যে সিটিসেলের অবস্থান সবার শেষে।

১৯৮৯ সালে বিটিআরসি থেকে টেলিযোগাযোগ সেবার লাইসেন্স পায় সিটিসেল। তখন থেকে সিটিসেল বাংলাদেশের একমাত্র সিডিএমএ মোবাইল অপারেটর হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কোম্পানিটির বর্তমানে ৪৫ শতাংশ মালিকানা সিঙ্গাপুরভিত্তিক কোম্পানি সিংটেলের আর ৫৫ শতাংশ মালিকানা দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক গ্রুপ ও ফারইস্ট টেলিকমের।

সিটিসেলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহবুব চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেছেন, সিডিএমএ প্রযুক্তির একমাত্র কোম্পানি হওয়ায় গ্রাহকরা হয়তো সিটিসেলে আগ্রহ হারাচ্ছেন। আর ভয়েসকলে গ্রাহক সংখ্যা কমলেও সিটিসেল মূলত এখন ডেটা সার্ভিসের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। মেহবুব চৌধুরী আরো বলেন, সিটিসেলও জিএসএম প্রযুক্তিতে রূপান্তরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে। আসন্ন থ্রিজি নিলামের পর আমরা এ সেবা গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে পারবো বলে আশা করছি।

 

 

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.