দেশেই বলুন আর বিদেশেই বলুন, দিন দিন আমরা যেনো হাসতে ভুলেই যাচ্ছি। চলমান সময়ের যাতাহরে নানাবাবে নিষ্পিষত হয়ে কারই বা মুকে হাসি উঠে আসে? তারপরও হাসা দরকার। হাসতে হবে। কেননা, আপনি যতো হাসবেন, আপনার শারীরিক সুস্থতা ততোই নিশ্চিত হবে। নানা রোগ ব্যাধি তো আপনাকে স্পর্শ করতে পারবেই না; বরং হাসির তোড়ে রোগও যাবে সেরে।
সম্প্রতি একদল গবেষক দীর্ঘ গবেষণা শেষে এই তথ্যটি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কয়েক বছর আগেও মানুষ দিনে ১৮ মিনিট প্রাণ খুলে হাসত। কিন্তু এখন তা কমে ছয় মিনিটে এসে দাঁড়িয়েছে। তাদের মতে, এভাবে হাসি কমতে থাকলে হাসি যে শুধু ইতিহাস হয়ে জাদুঘরে জায়গা নিবে তাই শুধু নয়, মানুষের স্বাস্থ্যেও পড়বে এর নেতিবাচক প্রভাব।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন শিশু দিনে তিনশ থেকে চারশ বার জোরে জোরো হাসে। যা তাদের সারাদিন প্রাণবন্ত, সতেজ এবং চঞ্চল রাখে। এই কর্মব্যস্ত জীবনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির পক্ষে হয়তো তিনশ থেকে চারশবার হাসা সম্ভব না। কিন্তু প্রতিদিন যদি অন্তত ১৫ মিনিট সময় হাসির জন্য বরাদ্দ রাখা যায় তাহলে কাজের চাপে যে কোনো ক্লান্ত মানুষও সারাদিন ধরে শিশুদের মতোই ক্লান্তিহীন থাকতে পারবে।
নয়া দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থা অ্যাপলো হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এস কে গুপ্তা বলেছেন, ‘হাসি হলো হৃদযন্ত্রের জন্য সবচেয়ে উত্তম ব্যায়াম। আমরা যখন হেসে উঠি তখন আমাদের হার্টবিট বেড়ে যায় এবং তা আমাদের মস্তিষ্ককে রিলাক্স করে।’ এখানে ডা. গুপ্তা হাসি বলতে কিন্তু চাপা হাসির কথা বলেননি। হাসি বলতে এখানে অট্টহাসিকে বোঝানো হয়েছে।
ওই হাসপাতালেরই কার্ডিওলজি বিভাগের আরেক কনসালটেন্ট ডা. কাটারিয়া বলেন, ‘মুখ খুলে অট্টহাসি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। বিপরীত দিক থেকে চাপা হাসি, যাকে বিজ্ঞানীরা প্যান-প্যান শব্দের হাসি বলেন, তা স্বাস্থ্যের জন্য ততখানিই খারাপ।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই কর্মব্যস্ত জীবনে সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত এবং দারুণভাবে দুশ্চিন্তা, অবসাদ, ক্লান্তি এবং একাকিত্বে আক্রান্ত। এর ফলে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে মানসিক রোগে। আবার অনেকেই ক্লান্তি, অবসাদ এবং দুশ্চিন্তা দূর করতে ধূমপান এবং মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। যা শারীরিকভাবেও সৃষ্টি করছে নানান রোগের। অতএব, আর মুখ গোমড়া করে থাকা নয়, আর ডাক্তার-হাসপাতালে লেফট-রাইট নয়, সুযোগ পেলেই অট্টহাসি। যেহেতু, সব ধরনের মানসিক রোগ, অবসাদ, ক্লান্তি এবং দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় ওষুধ হলো অট্টহাসি।