এক নজরে কানাডার রাজনীতি

এক নজরে কানাডার রাজনীতি

canadaকানাডা একটি ফেডারেশন যাতে সংসদীয় গণতন্ত্রভিত্তিক সরকারব্যবস্থা এবং একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। কানাডার সরকার দুই ভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক সরকার। প্রশাসনিক অঞ্চলগুলির তুলনায় প্রদেশগুলিতে স্বায়ত্তশাসনের পরিমাণ বেশি। কানাডার বর্তমান সংবিধান ১৯৮২ সালে রচিত হয়। এই সংবিধানে পূর্বের সাংবিধানিক আদেশগুলি একটিমাত্র কাঠামোয় একত্রিত করা হয় এবং এতে অধিকার ও স্বাধীনতার উপর একটি চার্টার যোগ করা হয়। এই সংবিধানেই প্রথম কানাডার নিজস্ব স্থানীয় সরকারকে তাঁর সংবিধানের উপর পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়। পূর্বে কানাডা ১৮৬৭ সালে প্রণীত ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকা অধ্যাদেশবলে পরিচালিত হত এবং এতে ও এর পরে প্রণীত আইনসমূহে ব্রিটিশ সরকারকে কিছু সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল।

নির্বাচিনী কর্মকর্তা বাদে ১৮ বা তার বেশি বয়সী সমস্ত কানাডীয় নাগরিক ভোট দিতে পারেন। জেলে বা অন্যত্র শাস্তিপ্রাপ্ত বাদে সকল যোগ্য ভোটার নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। কানাডার নির্বাচনী এলাকার নাম রাইডিং। এক রাইডিংয়ের অধিবাসী অন্যত্র ভোট দিতে পারেন না। কানাডাতে ভোটার উপস্থিতির হার উচ্চ। প্রায় ৭০% সাধারণত ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

গঠন

ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কানাডারও রানী হিসেবে স্বীকৃত। একজন গভর্নর জেনারেল কানাডাতে রানীর প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে তার পদ মূলত আলংকারিক। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রধান নির্বাহী। তিনি আইনসভার কাছে দায়বদ্ধ। কানাডীয় আইনসভার নির্বাচন প্রতি ৫ বছর অন্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার থেকে বিচারক নিয়োগ করা হয়।

ঐতিহ্যগতভাবে কানাডাতে দুইটি প্রধান জাতীয় রাজনৈতিক দল আছে। একটি কানাডার লিবারেল পার্টি এবং অপরটি কানাডার রক্ষণশীল পার্টি (অথবা প্রোগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি) এবং ২০১১ সালের নির্বাচনে সামাজিক-গণতান্ত্রিক নতুন গণতান্ত্রিক পার্টি (NDP) রাজনৈতিক প্রক্রিয়াটি তাদের নিজস্ব প্রভাব প্রয়োগ করে। এরা যথাক্রমে উদারপন্থা ও রক্ষণশীল রাজনৈতিক চিন্তাধারার ধারক। প্রাদেশিক সরকারেও রক্ষণশীল ও প্রগতিবাদী বিভাজন আছে, তবে তারা জাতীয় দলগুলির সাথে অনেক ক্ষেত্রেই দ্বিমত পোষণ করেন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দুইটি দলই বেশ শক্তিশালী ছিল। এরা পর্যায়ক্রমে সরকারী ও বিরোধী দলে বসত। কিন্তু ১৯৯৩ সালে রক্ষণশীলেরা চরম পরাজয় বরণ করে এবং দলটির অস্তিত্ব হুমিকির সম্মুখীন হয়। কুইবেক বা কেবেকের ব্লক কেবেকোয়া নামের একটি রাজনৈতিক দল প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে তাদের বদলে রক্ষণশীল রিফর্ম পার্টির আবির্ভাব ঘটে। এরা পরবর্তীতে কানাডিয়ান অ্যালায়েন্স নামের একটি দলে সংযুক্ত হয়। কানাডিয়ান অ্যালায়েন্স ও প্রোগ্রেসিভ কনজার্ভেটিভ পার্টি একত্রিত হয়ে কনজার্ভেটিভ পার্টি গঠন করে।

দ্বিতীয়বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার কানাডীয় নাগরিকদের জন্য সামাজিক সেবার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। চিকিৎসা সেবাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, এবং পেনশন ও পারিবারিক ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাদেশিক সরকারগুলিও এগুলিতে অংশ নিয়েছে। তবে প্রাদেশিক সরকারগুলি নিজেদের ক্ষমতা হ্রাসের ব্যাপারেও সচেতন। বিশেষ করে ফরাসিভাষী অধ্যুষিত কেবেকের সরকার ইংরেজিভাষী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আধিপত্যের ব্যাপারে স্পর্শকাতর।

বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঠান্ডা যুদ্ধের সময় কানাডা সাম্যবাদ বিরোধী শক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। দেশটি নেটোর সেনাবাহিনীতে সেনা সরবরাহ করেছে। তবে কানাডা কোন প্রধান সামরিক শক্তি হবার ব্যাপারে অভিলাষ ব্যক্ত করেনি। দেশটি জাতিসঙ্ঘের জোর সমর্থক এবং বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ স্থানে শান্তি রক্ষাকারী বাহিনীতে নিজের সেনা পাঠিয়ে থাকে। -বাংলা উইকি।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.