বারো ছিলো আলোয় ভরা, কেমন যাবে তেরো?

বারো ছিলো আলোয় ভরা, কেমন যাবে তেরো?

বারো ছিলো আলোয় ভরা, কেমন যাবে তেরো? অটুট থাকবে কি ধারাবাহিকতা? মেসিকে নিয়ে এমন নানাবিধ প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনে। বার্সিলোনার এই আর্জেন্টাইন জাদুকর বিদায়ী বছরে পেয়েছেন স্বর্ণালি সাফল্য। যা তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্যই বলতে হবে। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়েছেন; নিজেকে আসীন করেছেন সীমাহীন উচ্চতায়। আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পারফরমেন্সের যে ধারাবাহিকতা তাতে নতুন বছরেও সাফল্য অটুট থাকবে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
মেসি বছর শেষ করেছেন আরও একটি সাফল্য দিয়ে। রবিবার বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকা টানা চতুর্থবারের মতো ইউরোপিয়ান ফুটবলের সেরা তারকা নির্বাচিত হয়েছেন। বার্সিলোনা তারকা সর্বোচ্চ ১০৮ ভোট পেয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি পেছনে ফেলেছেন বার্সিলোনা সতীর্থ আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে। স্প্যানিশ তারকা পেয়েছেন ৯৩ ভোট। অন্যদিকে তৃতীয় হওয়া রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বাক্সে পড়েছে মাত্র ৯ ভোট! ইউরোপসেরার এ স্বীকৃতি মেসি পেলেন ২০০৯, ২০১০, ২০১১ ও ২০১২ সালে। এক্ষেত্রে তিনি ছুঁয়েছেন ফ্রান্সের কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানকে। জিদান ইউরোপসেরা হয়েছিলেন ১৯৯৮, ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে। তবে ফরাসী কিংবদন্তির চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা। কেননা মেসি পেয়েছেন টানা চারবার এ স্বীকৃতি। স্পেন জাতীয় দলের কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক হয়েছেন সেরা কোচ। রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ কোচ জোশে মরিনহোকে টপকে তিনি এ খেতাব পান। বার্সিলোনার সাবেক কোচ পেপ গার্ডিওলা হয়েছেন তৃতীয়। ইউরোপের দৈনিক, সাপ্তাহিক, ম্যাগাজিন ও সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকদের ভোটে ইউরোপসেরা নির্বাচন করা হয়।
নতুন বছরের পুরোটা সময় কেমন যাবে তা হয়ত এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে মেসির ক্ষেত্রে বলা যায়, অন্তত শুরুটা তিনি করতে চলেছেন স্বর্ণালি সাফল্য দিয়ে! আর ক’দিন বাদেই ২০১২ সালের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের নাম ঘোষণা করবে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ফিফা)। গত বছরের যে পারফরমেন্স তাতে রেকর্ড টানা চতুর্থবার গৌরবময় এ পুরস্কার মেসি বগলদাবা করতে যাচ্ছেন বলেই সবার অনুমান। আরেকবার স্বীকৃতি যদি মেসি পেয়েই যান, তাহলে তাঁকে আর আটকায় কে? তাছাড়া চলতি ঘরোয়া মৌসুমেও আর্জেন্টাইন অধিনায়ক রয়েছেন তুখোড় ফর্মে। এই ফর্মের সঙ্গে ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার যুক্ত হলে মেসি যে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবেন সেটা সহজেই অনুমেয়। সারাবিশ্বের মেসিভক্তরাও এমন আশা করছেন। আর্জেন্টিনার এক ভক্ত টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার বিশ্বাস মেসি নতুন বছরেও তার সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখবে। তাঁকে রুখবে সাধ্য কার!’ স্প্যানিশ এক ভক্ত লিখেছেন, ‘মেসির সঙ্গে তুলনা করার কেউ নেই। সে যে ফর্মে আছে তাতে তাঁকে আটকানো অসম্ভব। আমরা আশাবাদী এবারও মেসি সবার সেরা হবে।’
২০১২ সাল বার্সিলোনা তারকা লিওনেল মেসির জন্য ছিল সোনায় সোহাগা। প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া মেসি বিদায়ী বছরে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়। বছরের শুরুতেই ফিফা ব্যালন ডি’র জয় করে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। যা টানা তিনবার বর্ষসেরা হওয়ার প্রথম রেকর্ড। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক এক বছরে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন ২০১২ সালে। ১৯৭২ সালে পশ্চিম জার্মানি ও বেয়ার্ন মিউনিখের হয়ে গার্ড মুলার করেছিলেন রেকর্ড ৮৫ গোল। ডিসেম্বরে এ রেকর্ড নিজের করে নেন টানা তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। গত ২২ ডিসেম্বর ভ্যালাডোলিডের বিরুদ্ধে লা লীগায় এক গোল করে ২০১২ সাল শেষ করেন মেসি। এই গোলের মধ্য দিয়ে মেসি বছর শেষ করেন ৯১ গোল করে।
বিদায়ী বছরে মেসি যে রেকর্ডের বরবাল্য গড়েন তা এক কথায় অনবদ্য। একগাদা গোলের গৌরববয় রেকর্ড গড়ে বছরটাকে একান্তই নিজের করে নেন ক্ষুদে জাদুকর। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়া মেসি ২০১১-১২ মৌসুমে বার্সিলোনার হয়ে ৭৩ গোল করে এক মৌসুমে ইউরোপিয়ান ক্লাব মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন। ভেঙ্গে দেন ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে গার্ড মুলারের ৬৭ গোলের রেকর্ড। এছাড়া বার্সিলোনার জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডও নিজের করে নেন ২৫ বছর বয়সী মেসি।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.