অপেক্ষা সেদিনেরই…

অপেক্ষা সেদিনেরই…

 

কেমন আছেন আজ বাংলাদেশের নারীরা? কিভাবে চলচে তাদের জীবন যাপন? তা যে মোটেও সুখকর নয়, সেটা বলাইবাহুল্য। বাংলাদেশে আজকের নারীদের অবস্থা, অবস্থান নিয়ে লিখেছেন রেহানা আক্তার লুনা

luna

 

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সৃষ্ট পারিপার্শ্বিকতা নিতান্তই অস্থিরতাপূর্ণ। এ কারণে শুধু দে‌শেই নয়, দেশের বাইরে বসবাসকারী বাঙ্গালী মাত্রই দেশ নিয়ে সদা দুশ্চিন্তায় থাকছেন। তবে যারা দেশে বাস করছেন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট নানা দুর্ভোগের পাশাপাশি আরো কিছু নিত্য-নৈমত্তিক দুর্দশা ও প্রতিকুলতাকে মোকাবেলা করে চলেছেন তাদের তো চিড়ে চ্যাপ্টা দশা!। বি‍শেষ করে এদেশে যারা মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত তারা তো নির্বিকারে এসব দুর্দশা-দুর্ভোগ মাথা পেতে নি‍য়ে বসে আছেন। জীবনের পথ পরিক্রমায় তাদের কষ্ট আজ সীমাহীন। আর এ ক্ষেত্রে সবটাইতে বেশী যাদের সাফার করতে হচ্ছে তারা হচ্ছে, এদেশের নারী। যারা একাধারে ঘরে-বাইরে, অফিসে, আদালতে, স্কুল-কলেজে রীতিমতো কঠিন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। যে নারী ঘরে রান্না-বান্না করছেন, সংসার সামলাচ্ছেন তাকেই আবার দৌঁড়াতে হচ্ছে বাচ্চাকে নিয়ে স্কুল কলেজে। ঘর থেকে বেরিয়েও তো নিস্তার নেই, রাস্তা-ঘাটে যানবাহন সমস্যা, যানজট, সব ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা করে সন্তানকে তাদের স্কুলে আনা-নেয়া করতে হচ্ছে। অন্যদিকে ঘরের মানুষ বাইরে গেলে তাকেই নিয়েই আবার দুশ্চিন্তায় প্রহর গুণতে হচ্ছ যতোক্ষাণ না মানুষটি সহিসালামতে অক্ষত অবস্থায় ঘরে ফিরে না আসছে। আর সে সকল নারীরা অফিস আদালতে কাজ-কর্ম করছেন তাদের সামনে তো দুর্ভোগ আকাশ-ছোঁয়া। অফিসে, রাস্তা-ঘাটে নিরাপত্তার বিষয়টি রয়েছেই, সাথে হরতাল-বিক্ষোভ, রাজনৈতিক ডামাডোল যা কিছু হয় তার জন্য এই নারীরা বড় বেশী দুর্ভোগ, দুর্দশায় পতিত হয়। আর এ ক্ষেত্রে সাধারণ নারীদেরই সব চাইতে বেশী খেসারত দিতে হয়। আমি আমেরিকা, কানাডা, মালেশিয়া, থাইল্যান্ডে একাধিকবার গিয়েছি, সেখানে খুব কাছ থেকে দেখেছি সেখানকার নারীদের চালচিত্র, অবস্থা, অবস্থান এবং জীবন যাপনের পদ্ধতি। তাদের দৈনন্দিন জীবনে পোহাতে হয় না এতো ঝক্কি-ঝামেলা। সেসব দেশে নারীর মর্যাদা এবং কর্মক্ষেত্রসহ সর্বস্তের নিরাপত্তা নারীদের উন্নয়ন উত্তরণের পথকে সহজতর করে দিয়েছে। অপরদিকে, সে তুলনায় আমরা তো এগুতে পারছিই না; বরং দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। এমনকি সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। রাস্ট্রীয় ব্যবস্থায় নারীদের নিরাপত্তার ব্যপারটাও আজ অনেকটাই গৌণ। আবার অপরদিকে নারী-পুরুষের বৈষম্যও বাড়ছে। নারীদের জন্য নিরাপত্তার জায়গাটা এদেশে কবে যে নিরাপদ হবে সেটা একমাত্র ভবিতব্যই জানেন। তবে আমরা আশাহতদের দলে নই। সকল প্রতিকুলতা মোকাবেলা করে একদিন নিশ্চয় আমরা ওড়াতে পারবো আমাদের সাফল্যের ঝান্ডা। বসে আছি সেদিনের অপেক্ষাতেই।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.