একাত্তরের চেয়েও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে জামায়াত!

একাত্তরের চেয়েও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে জামায়াত!
gg

ইতিহাসের দায় শোধের জন্য যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা বলা হলেও বেশির ভাগ মানুষের বিশ্বাস, এর পেছনে ক্ষমতার রাজনীতি তথা ভোটের অঙ্কই মূলত: সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপি’র ভোট এক থাকলে ভবিষ্যত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়া সহজ হবে না। তাই বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার ‘দৃঢ় বন্ধন’ ছিন্ন করতেই সরকারের নানা উদ্যোগ ও প্রচারণা। তবে  বিএনপির সাথে বন্ধন ছিন্ন হলে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন কমে যাবে।

বিশেষ প্রতিনিধি:

জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে সরকারের ‘মহা-পরিকল্পনা’ দ্রুত চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগুচ্ছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির পর জামায়াতের তৃতীয় নেতা সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে গত শনিবার। পাশাপাশি জামায়াতকে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।

এদিকে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাশেম আলী, মাওলানা আব্দুস সোবহান ও এটিএম আজহারুল ইসলামের যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসির রায় হয়েছে, যা আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ২টি মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দলের আমির নিজামীর যুদ্ধাপরাধ মামলার ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে ইতোমধ্যে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন।

মুজাহিদের ফাঁসির আগে-পরে শক্ত প্রতিবাদ করতে না পারায় সরকার যুদ্ধাপরাধের পরবর্তী ফাঁসির রায় কার্যকর করা নিয়ে এখন আর চিন্তিত নয়। এ ছাড়া পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে সরকার এর রাজনৈতিক সুফল পেতে চায়। বাকি নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করার পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করতে আওয়ামী লীগের ভেতরের চাইতে বাইরের চাপ অনেক বেশি। বিশেষ করে ১৪ দলীয় জোটের শরিক সংগঠন ও সরকার-সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা অনেকদিন যাবৎ জামায়াত নিষিদ্ধের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন।

Kader mollah

ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং  সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ 

ইতিহাসের দায় শোধের জন্য যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা বলা হলেও বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করেন এর পেছনে ক্ষমতার রাজনীতি তথা ভোটের অংকই মূলত: সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপি’র ভোট এক থাকলে ভবিষ্যত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়া সহজ হবে না। তাই বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার ‘দৃঢ় বন্ধন’ ছিন্ন করতেই সরকারের নানা উদ্যোগ ও প্রচারণা। তাবে ফাঁসির মাধ্যমে বিএনপির সাথে বন্ধন ছিন্ন হলে সরকারের জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয়তো কমে যাবে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র মতে, এত দিন জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি নিয়ে মাঠে-ময়দানে আলোচনা-পর্যালোচনা করে সরকার পরিস্থিতি আঁচ করার চেষ্টা করেছে। মুজাহিদের ফাঁসির পর সরকার জামায়াতের ক্ষয়িষ্ণু শক্তির বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হলে এর বিরুদ্ধে দলটি কোন ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে না বলেই সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের বিশ্বাস। ফলে সরকার এর রাজনৈতিক সুফল পুরোপুরি নিতে পারবে।

nijami-onb24

ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে  আপিল চলমান জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও আপিল শুনানির অপেক্ষায় মীর কাশেম আলী, মাওলানা আব্দুস সোবহান ও এটিএম আজহারুল ইসলামের

তবে জামায়াত নিষিদ্ধের জন্য প্রায় ছয় মাস আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক একাধিকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও সাংবাদিকদেরকে বললেও দীর্ঘদিনেও খসড়া আইনটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকের আলোচ্যসূচিভূক্ত হয়নি। গত রোববার রাতে আনিসুল হক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আইনটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে। কবে হতে পারে—জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন, অপেক্ষা করেন। শিগগিরই উঠবে।’ তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সবুজসংকেত পেলেই খসড়াটি মন্ত্রিসভার বৈঠকের আলোচ্যসূচিভূক্ত হবে।

Ghulam Azamজামায়াতের মূল নেতা অধ্যাপক গোলাম আযম যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলেও আপিলে তার যাবজ্জীবন  কারাদণ্ড হয়। পরে  হাসপাতালে কারাদণ্ড ভোগরত অবস্থায় তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়

গত মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জামায়াতের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তিন শীর্ষ জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন হিসেবে জামায়াতের বিচারের প্রসঙ্গ ওঠার পর ওই তদন্ত করা হয়।

সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই মুজাহিদের ফাঁসির কয়েক দিন আগে থেকেই খুব শিগগিরই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হবে বলে বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন। তবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলে কি ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে, সরকারের মধ্যে তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নিষিদ্ধ হলে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বিএনপির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। দলটির নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে গিয়ে সহিংসতা ঘটাতে পারে। অথবা জামায়াতের স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজম্মের তরুণ নেতা-কর্মীরা যুদ্ধাপরাধের কালিমা ধুয়েমুছে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে পারে। এই তিন ধরনের আলোচনার মধ্যেও সরকার ও সরকারঘেঁষা দল ও ব্যক্তিরা মনে করেন, ঝুঁকি নিয়ে হলেও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করাই তাদের জন্য রাজনৈতিকভাবে লাভজনক হবে। তাঁদের মতে, ২০-দলীয় জোটে জামায়াত থাকা সত্বেও বিএনপিকে যেমন ঘায়েল করা গেছে, তেমনি জামায়াত যদি বিএনপির সঙ্গে মিলেও যায়, তাও সরকারের জন্য সুবিধাজনক হবে।

Sayedeeজামায়াতের  নায়েবে আমির ও ওয়াজ মাহফিলের জনপ্রিয়  বক্তা মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের দায়ে  মৃত্যুদণ্ড হলেও আপিলে  যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। তিনি কারাদণ্ড ভোগ করছেন

এ ছাড়া দল নিষিদ্ধ হলে দেশের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থায় জামায়াত উচ্চ আদালতে গিয়ে যে প্রতিকার পাবে, তার সম্ভাবনাও নেই।

সরকারের শরিক দল ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন মনে করেন, ‘আর দেরি না করে জামায়াত নিষিদ্ধ করাটা এখন রাজনীতিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। মেনন বলেন, বিভিন্ন মহলের চাপ ও দাবির পরও কিন্তু বিএনপি-জামায়াত একসঙ্গে আছে, কেউ কাউকে ছাড়ছে না। যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নেও তাদের অবস্থান এতটুকু নড়চড় হয়নি। তাই জামায়াত নিষিদ্ধ করলেই বরং রাজনীতি, গণতন্ত্র ও দেশ লাভবান হবে।

বাংলাদেশে জামায়াতের ইতিহাস

স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করায় অন্য ৩টি দল-মুসলিম লীগ, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক লীগ (পিডিপি) ও নেজামে ইসলাম পার্টির সাথে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে ১৯৭৩ সালের মূল সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় জামায়াত আর রাজনীতি করতে পারেনি। অন্য ৩টি নিষিদ্ধ দলের কোন গোপন কার্যক্রম না থাকলেও জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ ১৯৭২ সাল থেকেই গোপনে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।

১৯৭৫ সালের আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উপর সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে জামায়াত ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) গঠন করে প্রকাশ্যে রাজনীতি শুরু করে। ইসলামী ছাত্রসংঘও গোপন কার্যক্রম ছেড়ে ইসলামী ছাত্র শিবির নামে প্রকাশ্যে আসে। আইডিএল মুসলিম লীগের সাথে জোট করে ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে কয়েকটি আসন লাভ করে।

তবে স্বাধীনতার পর পরই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারানো জামায়াতের মূল নেতা অধ্যাপক গোলাম আযম ১৯৭৮ সালের ১১ জুলাই পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এর পর জাময়াতের মূল অংশটি আইডিএল থেকে বেরিয়ে আব্বাস আলী খানকে ভারপ্রাপ্ত আমীর করে বাংলাদেশের মাটিতে কার্যক্রম শুর করে। গোলাম আযম নাগরিকত্ব না পাওয়া পর্যন্ত আব্বাস আলী খানই ভারপ্রাপ্ত আমির ছিলেন।

১৯৮২ সালে এরশাদ সামরিক আইন জারি করে বিএনপিকে ক্ষমতাচ্যূত করলে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিন জোটের সাথে সমন্বয় রেখে জামায়াতও যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে বিএনপির বর্জন সত্বেও আওয়ামী লীগের সাথে মিলে ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ১০টি আসন পায়। পরে ১৯৮৮ সালে জামায়াত সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে আওয়ামী লীগও পদত্যাগে বাধ্য হয়। তৃতীয় সংসদ ভেঙে দিতে বাধ্য হন এরশাদ।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শুরুর সময়ই অধ্যাপক গোলাম আযম কেয়ারটেকার বা তত্বাবধায়ক সরকারের যে রূপরেখা দেন তা পরবর্তীতে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মূল দাবিতে পরিণত হয়। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণআন্দোলনের মুখে এরশাদ পদত্যাগ করলে ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় জামায়াতের ১৮ এমপির সমর্থনে বিএনপি সরকার গঠন করে।

তবে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচারের জন্য ১৯৯২ সালে গণআদালত গঠনের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২ বছরের মধ্যেই দল দু’টির সম্পর্কের অবনতি ঘটে। জামায়াত আওয়ামী লীগের সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে যোগ দিয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালে জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এককভাবে অংশ নিয়ে জামায়াত মাত্র ৩টি আসনে জয়ী হয়। এর পরে দলটি বিএনপির সাথে জোট গঠন করে। জোটবদ্ধ হয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৩০টির বেশি আসন পেয়ে ২টি মন্ত্রীত্ব নিয়ে প্রথমবার সরকারে যোগ দেয়। শনিবার ওই সরকারের মন্ত্রী ও দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধের বিচারে ফাঁসি হয়েছে। অপরমন্ত্রী ও দলের আমির মতিউর রহমান নিজামী যুদ্ধাপরাধ ও ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচার মামলায় ফাঁসির দণ্ড দণ্ডিত হয়েছেন।

যুদ্ধাপরাধের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে নিজামীর আপীলের শুনানি হচ্ছে। এ অবস্থায় আমিরের ফাঁসি ও দল নিষিদ্ধ হওয়ার মত ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে দলটি। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্নসমর্পনের পর যে ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল, দলটির বর্তমান অবস্থা তার চেয়েও ভয়াবহ বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। দলটির মতাদর্শগত মিত্র ইখওয়ানুল মুসলিমিনও (মুসলিম ব্রাদারহুড) ১৯৬৫ সালে এবং সাম্প্রতিককালে মিসরে একই ধরনের বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। মুসলিম ব্রাদারহুড নেতাদেরও সে দেশের আদালত ফাঁসি দিলেও তা কার্যকর হবার সম্ভাবনা কম। বাংলাদেশে অবস্থা ভিন্ন। ওএনবি।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.