বাংলাদেশের রাজনীতির অতীত-বর্তমান

বাংলাদেশের রাজনীতির অতীত-বর্তমান

মোনায়েম সরকার: স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের রাজনীতি কখনোই সরলভাবে পথ চলতে পারেনি। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে এর গতি পরিবর্তিত হয়েছে। কখনো দেশীয় বিশ্বাসঘাতকগণ বাংলাদেশের রাজনীতিকে ভুল পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, কখনো বিদেশিদের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এর স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ হয়েছে। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ বাংলাদেশের রাজনীতি যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে  সেটাও যে খুব সন্তোসজনক অবস্থানে আছে তা নয়। তবু বিগত দিনের চেয়ে অনেক স্থিতিশীল অবস্থায় আছে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি এ কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।

১৯৪৭-পরবর্তী বাংলায় রাজনীতিতে নতুন ধারা যুক্ত করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছাত্রজীবন শেষ করে কলকাতা থেকে ঢাকায় এসে নতুনভাবে রাজনীতি শুরু করেন শেখ মুজিব। এক সময় তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর অনেকের মতো তিনিও বুঝতে পারেন পাকিস্তানিরা বাঙালিদের মনেপ্রাণে ভালোবাসে না। বরং বাঙালিদের দমন-পীড়নই পাকিস্তানিদের মূল লক্ষ্য।

পাকিস্তানিদের দানবীয় শোষণ থেকে বাঙালিদের মুক্ত করতে নতুনভাবে, নতুন পরিকল্পনা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেন তিনি। প্রথমে তিনি গড়ে তোলেন আওয়ামী মুসলিম লীগ, পরে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে ‘আওয়ামী লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দল হিসেবে গড়ে তুলতে শেখ মুজিব নিরলস পরিশ্রম করেন। আওয়ামী লীগ গড়ে তোলার জন্য তিনি মন্ত্রিত্ব থেকেও পদত্যাগ করেন। পাকিস্তানি শোষণ-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয় সমগ্র বাঙালি জাতি। প্রথমে ভাষা আন্দোলন, এরপর ৬-দফা দাবিনামার ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচনের মাধ্যমে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা।

এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে আসে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতি বিজয় অর্জন করলে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব পান গণমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসের এই দীর্ঘ সময়ে বাঙালি জাতির মানসপটে একজন মানুষই নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকেন, তিনি বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি প্রথম বিপথগামী হয়। দীর্ঘ ২১ বছর সামরিকতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র, জাসদ-বাসদের মতো দল-উপদল বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে থাকে। এই একুশ বছরে এদেশের রাজনীতি কখনোই সুস্থ ধারায় বিকশিত হয়নি। নানামুখী ষড়যন্ত্র, ক্যু, পাল্টা ক্যুর মধ্য দিয়ে পথ চলতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসেন বাংলাদেশবিরোধী চক্র। এরা গণতান্ত্রিক ধারাকে অবরুদ্ধ করে পাকিস্তানি মৌলবাদী ও সামরিক আমলাতান্ত্রিক ভাবধারায় বাংলাদেশ পরিচালনা করতে থাকে। এরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে ইসলামিক রিপাবলিক বাংলাদেশে পরিণত করতে উঠে-পড়ে লাগে। দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশকে ‘ইসলামিক রিপাবলিক’ করতে না পারলেও ১৯৭২ সালের সংবিধান কেটেছিঁড়ে ‘ইসলাম ধর্ম’কে ঠিকই রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর ফলে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ হুমকির মুখে পড়ে।

বঙ্গবন্ধু-হত্যার পরে ২১ বছর বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করা যায়নি। এই একুশ বছর আওয়ামী লীগের ওপর যে জুলুম অত্যাচার সংঘটিত হয়, বিশ্বের কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের উপর এত জুলুম নির্যাতন হয়েছে বলে ইতিহাসে উল্লেখ নেই। যেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা উপহার দিয়ে জাতির পিতা উপাধিতে ভূষিত হন, তাঁর দুই কন্যা পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেননি। সামরিক শাসক জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এ কথা আজ নানা দলিল-দস্তাবেজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। ঘাতকের দলের সঙ্গে জিয়ার গোপন পরামর্শ, ঘাতকদের সাহস জোগানো থেকে শুরু করে তাদের পুরস্কৃত করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করে জিয়া শুধু নিজেকেই কলঙ্কিত করেননি, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকেও জলাঞ্জলি দিয়েছেন। অবশ্য এর ফলও তিনি পেয়েছেন। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জিয়ার নির্মম হত্যাকা-ই প্রমাণ করে অপকর্ম কখনোই সুফল বয়ে আনে না।

জিয়ার নির্মম মৃত্যুর পরে বাংলাদেশের ক্ষমতা বন্দুকের নলের মাধ্যমে গ্রহণ করেন আরেক সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল এইচ এম এরশাদ। এরশাদ ছিলেন জিয়ার সুযোগ্য উত্তরসূরি। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নারী কেলেংকারী, মাদক প্রচলনে এরশাদ তার পূর্ববর্তী সব রাষ্ট্রনায়কের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের মতো ফলাফল তৈরি করে নিজের আসন শক্ত করেন এরশাদ। তিনিও আওয়ামী লীগের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন অব্যাহত রাখেন। মুসলমান, ইসলাম, উন্নয়নের ভুয়া জিকির তুলে তিনি এদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করেন।

আমার যৎসামান্য রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বুঝেছি জিয়া এবং এরশাদ দুইজন গণতান্ত্রিক-সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল করে ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারা করেন। তারা হ্যাঁ/না ভোট প্রচলন করে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কলঙ্কিত করেন। স্বাধীনতা বিরোধীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভাগ দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকেও ভূলুণ্ঠিত করেন। 

বঙ্গবন্ধু নিজে যেমন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পূর্ণ আস্থা রাখতেন, তার প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে রাজনীতি করতে বদ্ধ পরিকর। আওয়ামী লীগ একটি সংগ্রামী দল। গণমানুষের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করাই এই দলের মূল্য লক্ষ্য। নীল-নকশার নির্বাচন করে কিভাবে আওয়ামী লীগকে বারবার পরাস্ত করে দেশদ্রোহীরা এদেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে তার কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে মনে করি। ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৮৮টি আসন, ভোট পায় ৮৯ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ পায় ২৯৩টি আসন, ভোট পায় ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে জেনারেল জিয়া প্রতিষ্ঠিত বিএনপি পায় ২০৭টি আসন এবং ৪১ দশশিক ১৬ শতাংশ ভোট।

১৯৮৬ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের শাসনামলে যে নির্বাচন হয় সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়কে ঠেকাতে ৪৮ ঘন্টা মিডিয়া ক্যু করে জাতীয় পার্টি নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেয়। এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পায় ১৫৩টি আসন, ভোট পায় ৪২ দশমিক ১৫ শতাংশ। ১৯৮৮ সালে আবার এরশাদের অধীনে নীল নকশার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউই অংশ নেয়নি। এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২৫১টি আসন, ফ্রিডম পার্টি ২টি আসন আর আ স ম আবদুর রব ১৯টি আসন পেয়ে বিরোধী দলীয় নেতা হন।

১৯৯১ সালে সর্বদলীয় রাজনৈতিক পার্টির অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে বিএনপি পায় ১৪০টি আসন, আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসন এবং জাতীয় পার্টি পায় ৩৫টি আসন। এই নির্বাচনের ভোটের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় বিএনপির বাক্সে পড়ে ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট আর আওয়ামী লীগ পায় ৩৩ শতাংশ ভোট, জাতীয় পার্টি পায় ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ ভাট। জামায়াত পায় ১৮টি আসন। জামায়াত-বিএনপির সিট ভাগাভাগির ফলে বিএনপি ১৯৯১ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে সরকার গঠন করে।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আবার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিজের অধীনে আয়োজন করে ষড়যন্ত্রের নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপি পায় ২৭৮টি আসন, ফ্রিডম পার্টি পায় ১টি এবং স্বতন্ত্র পার্টি পায় ১০টি আসন। কিন্তু খালেদা জিয়া গণ-আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালের জুন মাসে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে বাধ্য হন।

এই নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসন এবং ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে একুশ বছর পরে অর্থাৎ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পরে ক্ষমতায় আসীন হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার নানামুখী ষড়যন্ত্র করে, রাজাকারদের মন্ত্রী বানায় এবং দেশজুড়ে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায়। বিএনপির রক্তলোলুপ চক্রান্তে নিহত হতে থাকে আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মী। ২০১৪ সালের পর থেকে একটানা ক্ষমতায় আছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের জনগণের আস্থার প্রতীক। তিনি দেশে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ যেভাবে বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রভাব বিস্তার করেছিল, তিনি দৃঢ় মনোবলে সে সব কিছু বাংলার মাটি থেকে উপড়ে ফেলতে সমর্থ হয়েছেন। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রাদর্শ যেমন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল, শেখ হাসিনার স্বপ্নও তা-ই। সেই লক্ষ্যেই তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন। পিছিয়ে পড়া বাংলার জনপদে আজ তিনি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আন্দোলনের স্লোগান তুলে দেশের চেহারা বদলে দিয়েছেন। দেশের মানষ প্রথম দিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মমার্থ বুঝতে দেরি করলেও আজ সকলেই স্বীকার করছে বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির এক নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে।

শেখ হাসিনার সক্রিয় রাজনীতির বয়স কমবেশি ৪০ বছর। এই ৪০ বছরে তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ ১৯ বার মৃত্যু ঝুঁকিতে পতিত হয়েছেন, এতবার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসা রাজনীতিক পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কমই আছে। এ বিষয়ে কেবল কিউবার বিপ্লবী রাজনীতিক ফিডেল ক্যাস্ত্রোর সঙ্গেই তার তুলনা চলে। রাজনীতিতে পা দিয়েই তিনি গৃহে অন্তরীণ, কারানির্যাতন ভোগ, মিথ্যা মামলায় হয়রানিসহ নানা রকম জুলুমের মুখোমুখি হন। তবু তার অপ্রতিরোধ্য গতি কেউ থামাতে পারেনি। বরং যারা তার গতিরোধ করতে চেয়েছে তারাই প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে চলে গেছে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন নীতি-আদর্শের স্খলন দেখা যাচ্ছে। দলীয় মতাদর্শের বাইরে গিয়ে সুবিধাবাদী নীতি-আদর্শহীন ব্যক্তিরা নিজেদের ক্ষমতা সুসংহত করে ব্যক্তিগত ফায়দা লুটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীই আজ দলীয় মতাদর্শ ধারণ করেন না। আন্তদলীয় কোন্দল, মারামারি, খুন-খারাবিতে জড়িয়ে পড়ছেন সব দলের নেতাকর্মীরা। দলের মধ্যে মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নেই বলেই নেতাকর্মীরা আজ নীতিহীন হয়ে উঠছেন। এটা রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত বলেই মনে হচ্ছে। গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে তিনি সাধ্যের চেয়েও বেশি কিছু দিয়েছেন, উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধারায় পরিচালনার জন্য শেখ হাসিনা আজ সংবর্ধিত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশকে শেখ  হাসিনা দিয়েছেন অনেক কিছুইÑ কিন্তু বাংলাদেশ তাকে রক্তাক্ত-ক্ষত-বিক্ষত করা ছাড়া  তেমন কিছুই দেয়নি। আজ বাংলাদেশের সামনে সময় এসেছে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা। শেখ হাসিনা শক্তিশালী হলে বাংলাদেশ উন্নত হবে, সুখী হবে এদেশের সুখহীন, নিরন্ন মানুষ। আজ বিএনপির নেতারা নানারকম ফন্দি-ফিকির, আর অপপ্রচার করছেন শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু জনগণ বিএনপির কথায় কান দিচ্ছে না। বিএনপি কোন কর্মসূচিই ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে পারছে না। এদেশের উন্নয়নকামী সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতীতে যেমন আস্থা রেখেছেন, আশা করি ভবিষ্যতেও সেই আস্থা অটুট থাকবে। সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে এটুকু বলা যায়, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের উপরই নির্ভর করছে। দেশ-জাতির ক্রান্তিলগ্নে তিনিই আমাদের একমাত্র ভরসা। তার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধই বাংলাদেশকে নিরাপদ ও উন্নত করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

১২ অক্টোবর, ২০২২

মোনায়েম সরকার : রাজনীতিবিদ, লেখক, কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, গীতিকার ও মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.