সবাই জানি, শারীরিক সৌন্দর্যের সঙ্গে পুষ্টির সম্পর্ক নিবিড়। শরীরে পুষ্টি থাকলে তা চেহারার দীপ্তিতেই ধরা পড়ে। সঠিক খাদ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে সেই লাবণ্য নিশ্চিত করা যায়। নইলে আপনি যত সৃষ্টিশীলই হোন, যতোই সাজুন না কেন, অপুষ্টির মলিনতা এড়াতে পারবেন না। আপনার ত্বক, চুল, নখ, সবখানেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এবার বুঝতে পারছেন তো, শরীরে সৌন্দর্যের রসদ চাই, আর পুষ্টিকর খাবারেই তা মেলে। এ কলামে সে সম্পর্কে আজ দেবো কিছু পরামর্শ।
এ ই যে ম ন ধ রু ন
আপনি প্রতিজ্ঞা করলেন, কোনো দিন পর্যাপ্ত (দুই লিটার) পানি খাওয়ার কোটা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সেদিন কোনো কোমল পানীয়, সোডা বা এই ধরনের কিছু ছোঁবেন না।
সাদা পানি ভালো লাগছে না? একে আকর্ষক আর সুস্বাদু করে তুলুন। মিশিয়ে নিন ফলের টুকরো বা রস, চিনিবিহীন ড্রিংক মিক্স।
বিকেলে এক কাপ কফি আপনার অভ্যাস। বাদ দিন। এর বদলে চায়ের অভ্যাস করুন। আগের চেয়ে আপনি যথেষ্ট প্রাণবন্ত হয়ে উঠবেন।
হাত শরীরের অত্যন্ত জরুরি অঙ্গ। প্রতিদিন আপনাকে বের করতে হয় অন্যের সামনে। তাই এর যত্ন নিতেই হবে। রোজ আমরা কতোবারই তো হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করি। অনেকেরই আবার সাঁতার কাটার শখ। এ জন্য কিউটিকল হতেই পারে। তা ঢাকতে অবশ্যই নয় চটকদার কোনো পলিশ বা অন্য কিছুর ব্যবহার। বরং কিউটিকল অয়েলের জাদুস্পর্শ আপনার হাতকে দিতে পারে স্বাভাবিক কোমলতা ও লাবণ্য। আর সেটা না পেলেও ক্ষতি নেই। বিকল্প আছে। অলিভ অয়েল।
আবার মুখটাও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। মুখত্বকে অকারণে একের পর এক প্রসাধনের পরত যোগ করা থেকে বিরত থাকুন। বরং এমন কিছু ব্যবহার করুন, যাতে একসঙ্গে প্রয়োজনীয় কাজগুলো হয়ে যায়। সানস্ক্রিন, ময়শ্চারাইজার আর ফাউন্ডেশন, এই তিনের পরিবর্তে এসপিএফ যুক্ত টিনটেড ময়শ্চারাইজার লাগান। বাইরের তাপমাত্রা যেমনই থাক, রোদে পোড়ার ঝুঁকি যতোই থাকুক, কোনো সমস্যা নেই। আর লিপস্টিকের বদলে ভালো ওয়াটারপ্রুফ মাশকারা লাগান। ট্রাই করুন লিপ স্টেইন। এটা হালকা আর থাকে সারা দিন।
এই পরামর্শ আমি মাঝেমধ্যেই দিয়ে থাকি। আসলে আমাদের জেনে রাখা দরকার মেকআপের সময় প্রসাধন ব্যবহারের নিয়ম, প্রয়োগক্রম ও পদ্ধতি।
আর সতেজ রাখুন নিজেকে, মন রাখুন নির্ভার। উদ্বেগ বাদ দিন। তাহলে আর যা হোক, আপনি অন্যের মন খারাপের কারণ হবেন না। বিশেষত কমবে ব্রণের সমস্যা।
ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার অনেক উপায়ই রয়েছে। তবে অনেকে আবার শেভ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ জন্য দু-একটা পরামর্শ। রেজার ব্যবহারের আগে অবশ্যই ত্বক ভিজিয়ে নিতে হবে। শেভিং জেল লাগান একটু সময় নিয়ে। তবে হেয়ার কন্ডিশনার এতে সমান কার্যকর। ব্যবহারের আগে রেজার পরিষ্কার করে নিতে ভুলবেন না যেন। এমন ছোট ছোট ধাপ আপনার ত্বককে দেবে নিরাপত্তা, মুখমন্ডল হবে নিদাগ, পেলব ও দীপ্তিময়।
চেষ্টা করুন, বাসায় বসে নিজেকে সতেজ আর সুন্দর করে তোলা কঠিন কিছু নয়। আরও কয়েকটি পরামর্শ। এই যেমন ধরুন
ব্ল্যাকহেড খুব জ্বালাচ্ছে। টমেটো অর্ধেক করে কেটে কয়েক মিনিট মুখে ঘষুন। তারপর ব্ল্যাকহেডের জায়গায় চাপ দিন। পরিষ্কার হয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সুন্দর এক জোড়া স্যান্ডেল কিনেছেন। কিন্তু গোড়ালি ফাটার জন্য পরতে পারছেন না। চিনি আর তেল (অলিভ অয়েল) মিশিয়ে গোড়ালিতে লাগান। ঘষে পরিষ্কার করে ময়শ্চারাইজার লাগান।
অনেক সময় হাঁটু বা কনুইয়ের চামড়া শক্ত হয়ে যায়। তাই একটু সময় দিন। সমপরিমাণ মধু আর অলিভ বা জোজোবা অয়েল মিশিয়ে চামড়ায় লাগান। ধুয়ে ফেলুন পনেরো মিনিট পর।
সব সময়ই আমি বলি, নিজেকে সময় দিন। কারণ, আপনি যেমন পরিবারের সবার, তেমনি নিজেরও। আট ঘণ্টা ঘুমান। ব্যস্ত দিনের শেষে টেলিভিশন আর ফেসবুক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখুন। চেষ্টা করুন চা বা কফির পরিবর্তে ভেষজ চা খেতে। শুতে যাওয়ার আগে হাঁটুন কয়েক কদম। বিছানায় বসে একটু মেডিটেশন করুন বা পড়–ন। এর আগে অবশ্য ঠিক করে নিন আগামীকালের করণীয়।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। পরিপূর্ণ আনন্দে থাকুন।