আবেগের বইমেলায় করোনার প্রভাব

আবেগের বইমেলায় করোনার প্রভাব

ফেব্রুয়ারী আসন্ন প্রায় ।
বাতাসে ফাগুনের আগুন ঝড়ানো,মন পাগল করা,চিত্ত আকুল পদধ্বনি -খুব দূর থেকে আহবান শোনা যাচ্ছে।

কিন্তু মাতাল করা ঐতিহ্যবাহী ‘একুশের বইমেলা’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না এবার যথাযথ সময়ে।

করোনার থাবায় আক্রান্ত বাঙালির আবেগ অনুভূতির অসাধারণ বলিষ্ঠ সম্মিলন কেন্দ্রস্থল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তাই নেই কোনো সাজ সাজ রব। নতুন বইয়ের প্রাণকাড়া তরতাজা গন্ধের আবেশ নেই, প্রকাশক- প্রকাশনীর দ্বৈরথ স্থির।
খুটখাট, ঠকঠক আওয়াজে বাংলা একাডেমির চত্তর যেখানে সরগরম, সরব হওয়া খুবই উচিত ছিলো, সেখানে সুনসান নীরবতা। কবে হবে বইমেলা?

হবে।
বহু দিনের আলোচনা, শংকা, সন্দেহের অবসানে গৃহীত সিদ্ধান্ত ভার্চ্যুয়াল মেলা নয়,মেলা হবে নিয়ম মেনেই বাংলা একাডেমি,সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে বিশালাকারে,ব্যাপকতার রোশনাই ছড়িয়েই এবং অবশ্যই শারীরিক উপস্থিতিতেই।আর একান্তই চেষ্টা  থাকবে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারীতেই বসবে বইমেলা।

সেজন্য আরেকটু অপেক্ষা।সবার আগে মানুষের জীবন। সারা পৃথিবী যেমন নিয়ম ভেঙে নিয়ম গড়ছে,শুধুই মানুষের জীবনাশঙ্কাকে গুরুত্ব দিয়ে সেই পথেই হাঁটতে হবে। বিকল্প নেই।

কিন্তু আবেগ বলে কথা! লেখক -সাহিত্যিক-পাঠক সোচ্চার – মেলা হতেই হবে। কত অপেক্ষা, কত শত নতুন বইয়ের রসাস্বাদনের অভিপ্রায়,কত মিলনের হাতছানি। দূর প্রবাস থেকে ও অতিথির আগমন ,বইয়ের ভুবনে ঘোরাঘুরি, আড্ডা…..। কিন্তু করোনার কাছে হার মানতেই হলো।
প্রথমে সাময়িক স্থগিতের কথা বললে ও পরবর্তীতে ভার্চ্যুয়াল মেলার আয়োজনে স্বীকৃত বাংলা একাডেমির প্রস্তাবনায় তৃতীয় বার পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে পড়লে অবশেষে চুড়ান্ত হয় – বইমেলা শারীরিক উপস্থিতিতে সমস্ত নিয়ম মেনেই হবে,কেবল চিরায়ত তারিখে আরম্ভ হওয়া উচিত হবে না।কারণ করোনার প্রকোপ এখনো বর্তমান।বইমেলার মতো বিশাল জনসমাগম -তাই ঝুঁকিপূর্ণ।

যেখানে মানুষের সাথে মানুষের হৃদ্যতা, গভীর মেলবন্ধন একেবারে  গলায় গলায়,মানুষের সমাবেশে যেখানে জনসমুদ্র তৈরী হয়,সেখানে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ কঠিনই বটে!সেজন্যেই বার বার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। নির্ধারিত ফেব্রুয়ারীর ১ তারিখে নয়,ভার্চ্যুয়ালী ও নয়। কারণ বরেণ্য লেখক আনিসুল হক ও মনে করেন,ভার্চুয়াল মেলা কোনো মেলাই নয়।কাজেই, সময়ের দাবী মহাপরিস্থিতির কারণেই মেলা পিছিয়ে শেষ ফেব্রুয়ারী অথবা মার্চে সম্ভাব্য নতুন তারিখ করা হবে। তবে সেক্ষেত্রে ও মতানৈক্য। লেখক প্রকাশকরা বলছেন, অপেক্ষাটা যেনো দীর্ঘ না হয়। কারণ আবহাওয়ার প্রতিকূলতার ও একটা বিষয় আছে। অবশ্যই মেলা মার্চের মধ্যেই হতে হবে। তা না হলে বৈরী আবহাওয়ায় ভেস্তে যাবে মেলা।

পিছিয়ে পড়া মেলা পেছানো সময়েই যেন সুন্দর, সুসম্পন্ন  হয়,আবেগের সর্বোচ্চ অনুভবে আপ্লুত হতে করোনা যেনো বাধা না হয় প্রত্যাশা সেটাই।


কিন্তু পাশাপাশি মানতে হবেই পরিস্থিতির উপরেই সবকিছু- তারপরও।

-রেহানা আক্তার লুনা।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.