খালেদা জিয়া জয়ী হলে সংবিধান একি বলে!

খালেদা জিয়া জয়ী হলে সংবিধান একি বলে!

মিজান ভাই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ একটা বাস্তব প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এর আগে আমি সংবিধানের ছায়া-সংকটের যে কথা বলেছিলাম, সেটা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে মুছে যায়নি। এ দেশে সংবিধান ব্যবহার এবং তা ব্যাখ্যা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীরই রয়েছে অভাবনীয় ও অপরিমাপযোগ্য ক্ষমতা। সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। কোনো কারণে প্রধানমন্ত্রী যদি পরের ৯০ দিনে নির্বাচনের কথা বলতেন, তাহলে আমরা ‘সংবিধান মোতাবেক’ হয়নি বলতাম না। অনেক বিশেষজ্ঞ হয়তো তখনো তাকে ‘সম্পূর্ণ সংবিধানসম্মত’ কিন্তু ‘বাস্তবসম্মত নয়’ হিসেবেই দেখতেন।

অথচ অনাস্থা ভোটে পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন না। চাইলেই পদত্যাগ করতে পারেন। তাই সংসদ আপনাআপনি ভেঙে যাওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাধীন নয়। অথচ আমরা তেমন ধারণাই পাচ্ছি। সংসদের ফ্লোরে নয়, রাজনৈতিক মাঠে নয়, একদল আমলার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি তিনি দিলেন। এটা গণতন্ত্রের জন্য লজ্জা। সাম্প্রতিক কালের এক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন। এমপিরা তাঁর সমালোচনায় মুখর হলেন এই বিবেচনায় যে, কমোন্সের মৃত্যুসংবাদ তাঁদেরকে কেন গণমাধ্যম থেকে জানতে হবে। আমরা ইসি সচিবের কাছ থেকে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচনসংক্রান্ত প্রথম ঘোষণাটির পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের তরফে দ্বিতীয় নির্বাচনী ঘোষণা পেলাম। আমলা ‘ঘোষক’-এর কদর কী তা আমরা জানি!

২৭ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যকার যেকোনো দিনে নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণে ১০০% প্রস্তুত বলে তাদেরকে দাবি করতে হবে এবং বাস্তবেও তা জনগণের কাছে প্রতীয়মান হতে হবে। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় বদিউল আলম মজুমদারের লেখায় নির্বাচনী প্রস্তুতির যে ধূসর চিত্র এসেছে, তা উদ্বেগজনক। ইসি ‘সংবিধান মোতাবেক’ নির্বাচন পরিচালনায় নয়, বরং ‘প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় মোতাবেক’ নির্বাচন পরিচালনার জন্য দৃশ্যত অপেক্ষমাণ।Sheikh_Hasin

‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যই শেষ কথা নয়’, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে এখনো স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই’—আবুল হাফিজের বরাতে দৈনিক সংবাদ-এর প্রথম পৃষ্ঠায় গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত শিরোনাম তেমনটাই সাক্ষ্য দিচ্ছে। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনভাবে চলতে না দিলে বা তারা তেমনভাবে চলতে অপারগ থাকলে পুরো জাতিকে বিরাট খেসারত দিতে হয়। ২০১১ সালের জুনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পরে কমিশনের যে ধরনের আইনগত প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল, তা তারা নেয়নি। তারা রোডম্যাপ তৈরি করেনি। সময় নষ্ট করেছে। কোনো একজন কমিশনার আগের কমিশন কী ধরনের ত্রুটিপূর্ণ প্রস্তাব করে গেছে, সে বিষয়ে অনাবশ্যক উষ্মা প্রকাশ করেছেন। অথচ ছিদ্রান্বেষণের দরকার ছিল না। দলীয় বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওতায় কীভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে, সেটাই হওয়া উচিত ছিল তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ‘সংবিধান মোতাবেক’ তাদের জবাবদিহি মূলত প্রধানমন্ত্রীর কাছে। অথচ এই অপ্রিয় সত্য অনুচ্চারিত। প্রধানমন্ত্রীর পূর্বলিখিত অনুমোদন ছাড়া কোনো কমিশনারের গায়ে আঁচড়টিও কাটতে পারবেন না প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কাউন্সিল। সুতরাং কমিশনারদের কাজের কৈফিয়ত সংসদ দেবে না, দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

ভাবতে কষ্ট হয় যে, নির্বাচন কমিশনার হাফিজ তাঁর ‘স্বাধীন কণ্ঠস্বর’ প্রতিধ্বনিত করেছেন। যেকোনো কারণেই হোক, যদি নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্যতার সঙ্গে ২৭ অক্টোবরেই ভোট গ্রহণের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত থাকতে অসমর্থ বলে প্রতীয়মান হয়, তখন একটা সাংবিধানিক সংকটের ছায়াপাত ঘটবেই।

গত বছরের আগস্টে আমি লিখেছিলাম, সংসদ নির্বাচন সংসদের মেয়াদপূর্তির ৯০ দিন আগে, না পরে হবে, তা কে কীভাবে নির্দিষ্ট করবেন তা অস্পষ্ট; একটি আইন দরকার। মাহ্ফুজ আনাম গত বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টার-এ যথার্থই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মৌলিক রাজনৈতিক গলদ চিহ্নিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘কখন নির্বাচন হবে, সেটা নির্ধারণ করা প্রধানমন্ত্রীর প্রিরোগেটিভ বা বিশেষ অধিকার এবং প্রধানমন্ত্রী সেটাই করেছেন।’ এটা ব্রিটিশ ধারণা, কয়েক শ বছরের চর্চার পরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন প্রধানমন্ত্রীর এই অধিকার বিসর্জন দিয়েছেন। ব্রিটেনের আর কোনো প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঠিক হবে না। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর এই অধিকার ত্রয়োদশ সংশোধনীতে ছিল। তাই ’৯৬ তে খালেদা জিয়া নির্বাচনের দুই সপ্তাহের মধ্যে সংসদ ভেঙে দিতে পেরেছিলেন। ১৫তম সংশোধনীর পর তা সেভাবে নেই। ‘সংবিধান মোতাবেক’ নির্বাচনের তারিখ নির্দিষ্ট করার এখতিয়ার এখন ইসি দাবি করতে পারে এবং এখনই তাদের তা করা উচিত।

যদি প্রধানমন্ত্রীই তারিখ ঠিক করবেন, তাহলেও আমরা একটি আংশিক ধারণা পেয়েছি মাত্র। উপরন্তু মনে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেষ কথা বলেননি, তিনি আরও চমক দেবেন। তাই ভোট গ্রহণ কখন হবে, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্নেও। অপ্রিয় বাস্তবতা হলো, কোনটা কখন সংবিধান, কোনটা নয়, সেই ব্যাখ্যাও প্রধানমন্ত্রীই দেবেন, সেটাই প্রাধান্য পাবে। কিন্তু শাসক দলকে ধরে নিতে হবে যে, নির্বাচনে বিরোধী দল জয়ী হতে পারে। সিটি নির্বাচনের কয়েকটি ক্ষেত্রে নবনির্বাচিত মেয়ররা দায়িত্ব নিতে পারেননি। কারণ, আইন বলছে, মেয়াদ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নবনির্বাচিত মেয়ররা অপেক্ষা করবেন। সংসদের ক্ষেত্রে তার চেয়েও কঠিন ফাঁদ পাতা। তাই প্রশ্ন হলো, নবনির্বাচিতরা কবে ‘কার্যভার’ গ্রহণ করবেন? নতুন সংসদ কখন বসবে? বিলম্বে কার্যভার গ্রহণের একটি সম্ভাব্য দৃশ্যপটে বিএনপির ভাবী প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পোষ মানানো যাবে কি?

সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, ১২ সেপ্টেম্বরে ডাকা অধিবেশনটি শেষ অধিবেশন। সংসদ থাকবে। অধিবেশন বসবে না। সংবিধান বলেছে, সংসদের একটি অধিবেশন থেকে পরের অধিবেশনের মাঝখানে ৬০ দিনের বেশি বিরতি হবে না। যদি ‘আগের’ ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হয়, তাহলে সংসদের অধিবেশন একটানা ৯০ দিনের বিরতিতে বসলেও চলবে। এর অর্থ এই নয় যে, সংসদের বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা এতটুকু খর্ব হবে। ২৪ জানুয়ারির আগে তিনি যেকোনো সময় সংসদের বৈঠক ডেকে সংবিধানের সংশোধনসহ যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পুরোপুরি সক্ষম থাকবেন। সংসদ ভেঙে না গেলে সাংসদদের বিশেষ অধিকার, যা সংবিধানে আছে, তা-ও বজায় থাকবে। কোনো বিধি দিয়ে তা রহিত করা যাবে না। এমনকি সংবিধানে দেওয়া কোনো অধিকার আইন করেও তা আদৌ অকার্যকর করা যাবে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখার বিষয়। সংসদ না রাখার প্রবক্তা সাংসদ রাশেদ খান মেননকে এর আগে বিল আনতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে শুধু বাকেসবাতেই তাঁর ঝোঁক। বিল আনলে পুরো স্কিমের খোলনলচে পাল্টাতে হবে। মহাজোট মিত্র হয়ে মেনন সম্ভবত সরকারকে বেশি বিব্রত করতে চান না।

সংবিধানে বিরাট সংঘাত, রাজনীতিও ক্রমশ সংঘাতমুখর। এখন আমরা আরও বেশি সমঝোতাকাতর, এটা অর্জিত হলে আপাতত আর কিছু চাই না। তবে যুক্তির কথা, এ রকম নির্দিষ্ট সাংবিধানিক সাংঘর্ষিক অবস্থা জিইয়ে রেখে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক নয়। ইসির উচিত এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লিখিতভাবে সতর্ক করা। কারণ, নির্বাচন করলেই হবে না, শপথ পাঠ করানোর চূড়ান্ত দায় তাদেরই। তাদের উচিত নির্বাচনের তারিখ জানতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া। নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনা থাকবেন। তাঁর মন্ত্রিসভা ও সাংসদেরা থাকবেন। এ অবস্থায় নির্বাচন হবে। ধরা যাক, বিএনপি জয়ী হলো। সিটি নির্বাচনের পর আমরা ইসি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ‘আইনগত জটিলতা’ ইত্যাদি বিষয়ে আক্ষেপ করতে শুনেছি। সংসদ নির্বাচনের পরে কী হবে? কারণ, আমি সংবিধানের ৭২(২) এবং ১২৩(৩) অনুচ্ছেদের মধ্যে সংঘাত দেখতে পাচ্ছি। ৫ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে আমি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তাঁর বাসভবনে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ৭২(২) অনুচ্ছেদ বলছে, সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হবার ৩০ দিনের মধ্যে সংসদের বৈঠক করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন সংসদ বৈঠকে বসবে? কোনো সুস্থ লোক ভাবতে পারেন না, এই ‘ফলাফল ঘোষিত হওয়ার’ অর্থ নতুন নির্বাচনের ফলাফল নয়, এটা ২০০৮ সালের নির্বাচনের ফলাফল। কিন্তু বিদ্যমান সংবিধান তাই বলছে। ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ বলছে, নবম ‘সংসদের মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত [নবনির্বাচিত] সাংসদরা কার্যভার গ্রহণ করবেন না।’ আরপিও পরীক্ষা করে ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন আমাকে নিশ্চিত করেন যে, বেসরকারি ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর কখন তার গেজেট হবে, তার কোনো সময়সীমা আইনে বলা নেই। অথচ ১৪৮ অনুচ্ছেদ নির্দিষ্ট করে বলেছে, ‘কার্যভার গ্রহণের আগে শপথ নিতে হবে। গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হওয়ার তারিখ থেকে তিন দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণ বাধ্যতামূলক। স্পিকার না পড়ালে সিইসি পড়াবেন। আর শপথ নেওয়া মানেই কার্যভার গ্রহণ।’ সব মিলিয়ে সংসদ রেখে নির্বাচন করা একটি জগাখিচুড়ি, একটা সাংবিধানিক নৈরাজ্য সৃষ্টি করে রেখেছে। ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের যৌথ সরকার কিংবা সর্বদলীয় সরকার হলে নির্বাচনের পরে সরকার গঠন নিয়ে দল ভাগাভাগির (হর্স ট্রেডিং) একটি কসরতের আশঙ্কাও আমরা নাকচ করতে পারি না।

ধরা যাক, ১৫ নভেম্বর নির্বাচন হলো। ৫৬ অনুচ্ছেদ বলেছে, যে সাংসদ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন, তাঁকেই রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। ধরে নিই, নির্বাচনে হারলে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন। সংসদ ভেঙে দিতে পরামর্শ দেবেন। তখন বিপাকে পড়বেন রাষ্ট্রপতি। কারণ, ‘সংবিধান মোতাবেক’ তিনি বড়জোর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে পারবেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী (নবম সংসদ থেকে) না পেলে তাঁকেই সংসদের ‘অবশিষ্ট মেয়াদে’ দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলতে হবে। খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যভার নিতে দুই মাসের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে। তাঁর চোখের সামনে দিয়ে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্ব করবেন। সাংসদ মমতাজ নব উদ্যমে ‘বন্ধু যখন বউ লইয়া/ আমার বাড়ির সামনে দিয়া/ হাইট্যা যায়…’ গানটা গাইবেন।

সরকারি দল তখন হয়তো মার্কিন প্রেসিডেন্টদের দৃষ্টান্ত দেখাবে। দেশটাকে আমেরিকা বানাবে। কিন্তু মার্কিন সংবিধানে তো এমন সংঘাত নেই। বাস্তবে বিরোধী দল হয়েও তারা সংসদের বৈঠক ডাকবে, চাইলে সংবিধান সংশোধন করবে। অবশ্য নভেম্বরে না হয়ে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে নির্বাচন হলে এই সংঘাত এড়ানো যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এমন সংঘাত কিংবা আজগুবি বিধানাবলি সংবিধানে কেন থাকবে? আমরা রুগ্ণ জাতির নিন্দা কুড়াব কেন?

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.