ছোট্টবন্ধুরা, “চীনের মহাপ্রাচিীর” এর গল্প শুনবে?

ছোট্টবন্ধুরা, “চীনের মহাপ্রাচিীর” এর গল্প শুনবে?

greatwallছোট্টমণিরা, জানো, পৃথিবীতে একটি মজার দেশ আছে, যে দেশটি বড় একটা দেয়াল দিয়ে ঘেরা — যার নাম “চীন”! এই বিশাল দেয়ালটি “চীনের মহাপ্রাচিীর” নামে পরিচিত! আজ তার গল্পই শোনাব তোমাদের।

পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি দীর্ঘ এই প্রাচীরের সারি। এগুলি খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ১৬শ শতক পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য তৈরি ও রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয়েছিল। এরকম অনেকগুলি প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল তখন, তবে ২২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াঙের অধীনে নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত।

চীনের মহাপ্রাচীর মানুষের হাতে তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থাপত্য। এই প্রাচীর প্রায় ৫ থেকে ৮ মিটার উচু এবং ৬৫৩২ কিলোমিটার লম্বা। এটি শুরু হয়েছে সাংহাই পাস এবং শেষ হয়েছে লোপনুর নামক স্থানে।

কত লো শি হুয়া তিং এবং তার উত্তরাধিকারী দ্বিতীয় সম্রাট ৩,০০,০০০ লোককে এই মহাপ্রাচীর তৈরিতে নিয়োগ করেছিলেন। এই দুই সম্রাটের সময় এই প্রাচীরের ৫,০০০ কিলোমিটার নির্মিত হয়েছিল। এরপর হান রাজবংশ এই মহাপ্রাচীরকে আরও ১০ হাজার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে দেয়।

1

৫ ০, ০ ০ ০ কি লো মি টা র??

এর পরবর্তী সম্রাটদের প্রায় সবাই এই প্রাচীর খণ্ড খণ্ড বৃদ্ধি করেছে। এইসব প্রাচীর একত্রিত করলে এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে প্রায় ৫০,০০০ কিলোমিটার। অবশ্য এর অনেকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।

এর মূল অংশের নির্মাণ শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে। নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন চৈনিক বা চাইনিজরা কিং সাম্রাজ্যের সময়।

চীনের প্রথম সম্রাট কিং সি হুয়াং এটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন এবং শত্রুর হাত থেকে নিজের সম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ করে নির্মাণ করেছিলেন।

2এটি চীনের প্রকৃতিক বাঁধাগুলো ছাড়া অন্যান্য অঞ্চল পাহাড়া দেওয়ার কাজে এবং উত্তর চীনের উপজাতি সুইং নু বিরুদ্ধে এটি প্রথম স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।

মহাপ্রাচীরের বেশিরভাগ অংশই আঁকাবাঁকা এবং উচু-নিচু পাহাড়ের ভিতর দিয়ে গেছে। এই প্রাচীর বিভিন্ন পাহাড়কে সংযুক্তও করেছে।

এই মহাপ্রাচীরে ব্যবহার করা হয়েছে বড় বড় ইট আর লম্বা লম্বা পাথর। এর গড় উচ্চতা প্রায় দশ মিটার। তার প্রস্থ ৪ থেকে ৫ মিটার। যুদ্ধের সময় খাদ্য আর অস্ত্র সরবরাহের সুবিধার জন্য প্রাচীরে উপরের অংশে সমান পথের সৃষ্টি করা হয়েছিল। এছাড়া দেওয়ালের ভিতরে উঠা নামার উপযোগী পাথরের সিড়ির পথও আছে।

3প্রাচীরের কিছু দূর পর পর টাওয়ার রয়েছে। এ সব টাওয়ারে অস্ত্র, খাদ্য রাখার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া রয়েছে সৈন্যদের বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা। এছাড়া যুদ্ধের সময় সৈন্যরা এই টাওয়ারগুলোকে ছোটো বাংকারের মতো ব্যবহার করতে পারতো।

প্রয়োজনে টাওয়ারে আগুন বা ধোঁয়া সৃষ্টি করে সতর্ক সংবাদ জারি করতে পারতো। উল্লেখ্য, আধুনিক যুদ্ধে চীনের প্রাচীর একটি অর্থহীন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় পরিণত হলেও, মানুষের তৈরি বিশাল স্থাপনা হিসাবে একে আশ্চর্য লক্ষ্যবস্তু হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

জানো? বিভিন্ন রাজবংশ আমলে নিমির্ত প্রাচীর এক সঙ্গে সংযুক্ত হলে মোট দৈর্ঘ্য ৫০ হাজার কিলোমিটারেও বেশী হতে পারে।তার মানে এই দৈর্ঘ্য পৃথিবীকে এক রাউন্ড ঘেরতে পারে।

এই হল চীনের দেয়ালের গল্প। ভাল থেকে বন্ধুরা। আগামীতে নিয়ে আসব অন্য কোন মজার বিষয় নিয়ে।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.