না বলতে শিখতে হবে 

না বলতে শিখতে হবে 

নিজের জীবন নিজেকে ই গড়ে তুলতে হবে, জীবনের পথে অনেক বাঁধা আসবে তবে এই বাঁধাকে তুচ্ছ মনে করে এগিয়ে যেতে হবে, আমাদের চলার পথটা অনেক ছোট , এই ছোট জীবনকে সুন্দর করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় আমাদের আশে পাশের মানুষজন দাঁড়া আঘাত প্রাপ্ত হই তাঁরা  আমাদের ব্রেইনের অ্যাটেনশন ছিনতাই করার জন্য বসে থাকে আর
যখন আমাদের আশে পাশের মানুষ আমাদের নেগেটিভ কিছু বলে তখন আমরা নেগেটিভ অনেক কিছু চিন্তা করি।


এগুলো থেকে বাঁচতে হলে আমাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে, মুল কথা হলো আমাদের ‘না’ বলতে শিখতে হবে ।


আমরা যদি না বলতে একবার শিখে যাই তবেই আমরা
আমাদের জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারবো ।

বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে এখন সারা পৃথিবী আমাদের সবার হাতের মুঠোয় , আমরা খুব অনায়াসে এই দেশের ওই দেশের খবর আদান প্রদান করতে পারি
আমরা  খুব সহজেই বিশ্বের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে পারি
বর্তমানে ইন্টারনেট কেউ সহজ উপায়ে কিংবা ভুল উপায়ে ব্যবহার করছে ।
ফেসবুক ম্যাসেন্জারে এখন আমরা অনেকেই অনেক সময় স্পেন করি একে অপরের সাথে পরিচিতি হই
নেট দুনিয়ায় আমরা আমাদের বাস্তব জীবনের থেকে বেশি মনের ভাব প্রকাশ করি অন্যর কাছে ।
পরিবারের থেকে অন্যকে বেশি সময় দেই এতে করে আমরা সহজেই পরিবারের থেকে অনেক দূরে চলে যাই
এভাবে আস্তে আস্তে ভুলে যাই সব কিছুই
একটা সময় যখন আমাদের ডিস্ট্রাক্টেড করার জন্য কোন ফাঁদ সৃষ্টি করা হয় তখন আমরা নিজের মধ্যে চাপা কষ্ট রেখে দেই এবং  সবার সাথে শেয়ার করতে ভয় পাই আস্তে আস্তে ডিপ্রেশনে চলে যাই এমন একাকিত্ব এসে যায় যেখান থেকে বের হওয়া খুব কঠিন, পরিবারের কেউও তখন বুঝতে পারে না তাদের সন্তান এর সাথে কি ঘটছে এমন অবস্থার জন্য তারা তাদের সন্তান কেই দায়ি  করে ।
বর্তমানে সকল ফাঁদই এখন সহজলভ্য সেটা হোক অনলাইন বা অফলাইনে । এর জন্য আমরা নিজেরাই দায়ি, আমরা আমাদের বাস্তব জীবন আর ভারচুয়াল জীবন কে এক করে ফেলি এসব থেকে বাঁচতে হলে এবং অন্যরা যাতে আমাদের মনোযোগ নষ্ট করতে না পারে , অন্যরা যাতে আমাদের সময় চুরি করতে না পারে সে জন্য আমাদের ” না ” বলা শিখতে হবে এখনই ।

Saying No Doesn’t Mean You’re a Bad Person

‘না” শব্দটি একটি নেতিবাচক অর্থ প্রকাশ করে এর অর্থ এই নয় যে তুমি  যাকে “না ” বলছো সে মানুষটা ছোট হয়ে গেছে বা কষ্ট পেয়েছে আমরা অনেকেই অন্যের খারাপ মনোভাব যেনেও তাঁকে সরাসরি “না” বলতে পারি না এতে আমরা মনে মনে নিজেকে দোষারোপ করি বা ভাবনার জগতে হারিয়ে যাই কে কি ভাবলো এই নিয়ে আমরা যখন হীনমন্যতা ভোগি ঠিক তখনই আশে পাশের মানুষরা আমাদের দুর্বল ভাবে কিন্তু আসলেই কি আমরা দুর্বল, আমাদের কি ইচ্ছে শক্তি নেই নাকি আমরা হারিয়ে ফেলেছি আমরা কেন লোক সমাজের ভয়ে নিজেকে আড়াল করে রাখবো কেন আমরা মাথা উঁচু করে থাকতে পারবো না, কেন আমরা এসব ছাইপাঁশ চিন্তা করে অন্যের সাথে সহমত পোষণ করি এবং অমন থাকা সত্ত্বেও “হ্যাঁ” বলি ।

কেউ যদি এমন পরিস্থিতিতে পরো তাহলে আমি সাতটি কৌশল তোমাদের জন্য তুলে ধরছি :

1.নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে :

প্রথমত তোমাকে নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে, তোমার আশেপাশের মানুষজন তোমাকে কি বলছে বা কি ইঙ্গিত করছে সেটা তোমাকে অনুধাবন করতে হবে । তোমাকে বুঝতে হবে তোমার ভালো বা খারাপের সময় কে তোমাকে কতটা সহায়তা করেছে .
নিজেকে ভালো কাজে ধাবিত করতে হবে কে কি ভাবলো সেটা না ভেবে নিজেকে তৈরি করতে হবে যাতে আশে পাশের মানুষ তোমাকে কখনও বাজে ইঙ্গিত করতে না পারে । তুমি দুর্বল সেটা কখনো কেউকে বুঝতে দিও না
আমার মনে আছে আমি তখন ক্লাস টেন এ পড়ি গ্রামের বাসায় ঘুরতে গেছিলাম তখন টিভিতে একটা মোটিভেশন স্পিস এ শুনেছি কথাটা এমন ছিলো যে  ” সব সময় তোমার আশেপাশের মানুষজন যে ঠিক তা কিন্তু নয় তোমার ভালোমন্দ তোমার কাছে , তুমি ঠিক করবে তোমার জীবনকে তুমি কিভাবে গড়ে তুলবে   ..
তাই নিজেকে নিয়ে ভাবতে হবে  আর নিজেকে সময় দিতে হবে ।

  1. নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকতে হবে:

তোমার ‘না’ শব্দটা যদি কারো পছন্দ না হয় তাহলে বুঝে নিও সে তোমার প্রকৃত বন্ধু নয় , কেউ যদি তোমাকে খারাপ ইঙ্গিত করে সে যদি তোমার খুব ভালো বন্ধু হয় বা কাছের মানুষ,
তুমি যদি তাকে সরাসরি ‘ না ‘ বলতে না পারো তবে  সে তোমাকে দুর্বল ভেবে আরো খারাপ পথে পরিচালিত করতে পারে  তাই যেটা তোমার কাছে ভালো মনে হবে না বা তুমি যেটাতে কমফর্ট ফিল করছো না সেখানে যে যাই ভাবুক তুমি তোমার আত্মমর্যাদা ঠিক রেখে সরাসরি না বলে ফেলো , তখন তারা তোমাকে আর কোন খারাপ ইঙ্গিত দিতে পারবে না কোন কিছু বলতেও তারা ভয় পাবে তাই নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকতে হবে সবসময় ।

3.বিনয়ী হতে হবে :

ধরো কেউ তোমাকে একটা কাজ করতে বলেছে এবং  সে তোমার খুব কাছের মানুষ,তুমি তাকে সরাসরি না বলতে পারছো না বা এদিকে সময়ের অভাবে তার কাজ টা করতেও পাচ্ছো না এ ক্ষেত্রে তোমাকে যা করতে হবে , তোমাকে খুব বিনয়ের সাথে বলতে হবে ” আসলে আমি দুঃখিত ” এই মুহূর্তে আমি তোমার কাজটি করতে পারবো না তবে সময় বের করে তোমার কাজটি করে দিবো আর যদি তোমার একেবারেই সময় না থাকে বা ব্যস্ততার ভিড়ে হারিয়ে যাও তাহলে তাকে বলতে পারো আসলে আমি এখন পরীক্ষার কারণে ব্যস্ত আছি আমারো খুব ইচ্ছে ছিলো তোমার কাজটি করতে কিন্তু আমি পাচ্ছি না তুমি দয়া করে কিছু মনে করো না এতে করে তুমি তাকে সরাসরি “না” বললে কিন্তু সে কিছুই বুঝতে পারলো না ।

  1. ভেবে চিন্তে উওর দিতে হবে  :

কেউ তোমাকে কখনো কিছু  করতে বললে  তুমি কি করো খুব তারাতারি ‘না’ উওর দেওয়ার চেষ্টা করো এতে কখন কি বলে ফেলো সেটা নিজেও যানো না কিন্তু এতে তোমার আশে পাশের মানুষ তোমাকে ভুল বুঝে তাই খুব তারাতারি উওর না দিয়ে ভেবে চিন্তে উওর দেওয়াই শ্রেয় ।
কাউকে না বললে পরক্ষণেই তাকে তোমার ‘না’বলার পেছনের কারণটা বুঝিয়ে বলো , এজন্য পরিকল্পনা মাফিক গুছিয়ে কথা বলো যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে ।

  1. স্বার্থপর হতে  হবে  :

নিজেকে সুন্দর করে প্রস্তুত করতে হলে স্বার্থপর হতে হবে কাজের ক্ষেত্রে সবসময় নিজেকে নিজের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে অন্যের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিবে তবে সবার আগে নিজে কি চাচ্ছ সেটার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে তুমি যদি নিজের ইচ্ছে গুলোকে নিয়ে না ভাবো কিংবা গুরুত্ব না দেও তখন মানুষ তোমাকে ছোট মনে করবে এসব শুনতে খারাপ শোনালেও এটাই বাস্তবতা তাই নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকতে হবে সে জন্য কিছুটা হলেও স্বার্থপর হও ।

6.সম্পর্ক বুঝতে হবে :

একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে সেই মানুষটাকে বুঝতে হবে , সে কি বলছে বা বলার চেষ্টা করছে সেটা নোটিস করতে হবে , তুমি যখন সেটা বুঝতে পারবে ঠিক তখনি তুমি সম্পর্কের গভীরতা কতটা সেটা বুঝতে পারবে ।
তুমি যখন সেই মানুষটাকে পুরোপুরি বুঝতে পারবে তখন তোমার মাঝে আর কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করবে না খুব সহজেই তুমি তাকে ” না” বলতে পারবে এতে করে তোমার কাছের মানুষটা তোমাকে ভুল বুঝবে না বরং তোমার সম্পর্কটা সুন্দর হবে ।

  1. কৌশল বুঝতে হবে :

আজকাল সবাই খুব সুন্দর করে সাজিয়ে মিথ্যে বলতে পারে ওরা এমন ভাবে মিথ্যে বলে যাতে অপর মানুষটা সেটা বুঝতে না পারে ,
হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন বুঝতে পারে বা বুঝবার চেষ্টা করে , যারা বুঝতে পারে না তারা যে কোন ভুল পথে চলে যায় । তারা সবসময় আমাদের সবার সাথে কিছু কৌশল অবলম্বন করে আমাদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে এমন কৌশলের মাধ্যমে তারা আমাদের ওপর একটা চাপ প্রয়োগ করে তাই সবসময় এসব বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আর কৌশল বুঝে “না ” বলতে হবে ।

“No” is a complete sentence. It does not require an explanation to follow.
You can truly answer someone’s request with a simple ” No”
                         ______Sharon E . Rainey

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.