” স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল ” এই প্রবাদ টা আমরা সেই ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি । স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে কোন কিছুই ভালো লাগে না, কোন কিছুতেই মন বসে না, এটা যেন একটা মনের সাথে মিশে আছে ।
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আমরা একেক জন একেক ভাবে চিন্তা করি , নিজের তারুণ্য, লাবণ্য ধরে রাখাও যেন একটা সার্কেল, যেখানে নিয়ম করে মেনে চলতে হয় সব কিছু, ইদানিং বেশির ভাগ মানুষ নিজেকে ফিট রাখতে চাইলেও পারে না । সেজন্য দরকার স্থির একটা মন ।
পরিমাণে কম খেয়ে বারবার খাওয়া, দৈনিক শরীরচর্চা, দিনে এক / দু’বার জিমে যাওয়া, কম কার্বোহাইড্রেট ও বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেয়েও কিন্তু নিজেকে ফিট রাখা সম্ভব ।
তবে ব্যস্ততার ভিড়ে আমরা নিয়ম করে চলেও সেটা বেশি দিন ধরে রাখতে পারি না ।
অনেকেই সে জন্য আয়নার সামনেই দাঁড়াতে ভয় পান ।
শুনতে হয় আশে পাশের অনেক মানুষের অনেক ধরনের কথাবার্তা ।
এতে তারা ধীরে ধীরে ডিপ্রেশনে চলে যায় ।
তবে একটু নিয়ম মানলেই কিন্তু নিজেকে ফিট রাখা সম্ভব, আসুন জেনে নেই কিভাবে নিজেকে ফিট রাখতে পারবো ……..
নিজেকে ফিট রাখতে হলে প্রথমেই শরীর থেকে ঝরিয়ে ফেলতে হবে বাড়তি ওজন, ওজন না কমালে কোন ভাবেই নিজেকে ফিট রাখা সম্ভব নয় ।
পোড়াতে হবে ক্যালোরি। যত ক্যালোরি বাড়তি খাচ্ছেন প্রতিদিন, ততখানি ঝরিয়ে ফেলতে পারলেই বাড়বে না ওজন। আর একটু বেশি ঝরাতে পারলেই ওজন কমতে শুরু করবে। নিজের দৈনন্দিন জীবনের ফাঁকেই একটু বুদ্ধি করলে ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন বাড়তি মেদ।
আসুন একটু চোখ বুলিয়ে নেই কীভাবে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রিত করতে পারি…..
১। মানুষের মস্তিষ্কই যদি সুস্থ না থাকে, তাহলে আর সুস্থ থাকার মূল্য কোথায়? সেজন্য নিয়মিত আখরোট খান। এতে অনেক বেশি ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা মস্তিষ্ককে রোগ থেকে রক্ষা করে। আর টমেটো, গ্রিন টি-তে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোকে রক্ষা করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।
২।সকালে ২০ মিনিট মর্নিংওয়াক করুন কিংবা হাঁটুন, হেঁটে যাওয়া যায় এমন দূরত্বে রিকশা বা গাড়ির পরিবর্তে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৩।ড. জেমস গিল বলছেন, মানুষের উচিত সুখী হওয়ার চেষ্টা করা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি হাসলে সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এক্ষেত্রে ড. গিলের উত্তর হচ্ছে, সহজেই সুখী হওয়া যায়। সুখী থাকার সহজ উপায় হিসেবে বেশি করে হাসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
৪ । একজন পরিণত বয়সের মানুষের রাতে গড়ে দৈনিক ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম দরকার।কিন্তু একটানা যদি ঘুমের ঘাটতি চলতে থাকে তবে শরীরের উপরে এর খুব নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।এক্সেটার ইউনিভার্সিটির স্পোর্ট এন্ড হেলথ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক ড. গেভিন বাকিংহাম বলেছেন, ঘুম কম হলে মানুষের কগনিটিভ ফাংশান বা নতুন জিনিস শেখার ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়।
ঘুমের ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাবে এমনকি অনেক সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও ব্যক্তি দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগতে পরে বলে জানালেন ড. বাকিংহাম। তাই, দেহ ও মনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প ।
৫ । অ্যারোবিক ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো, স্কিপিং, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। পার্কে বা রাস্তায় যেতে না পারলে ট্রেডমিল বা ছাদে হাঁটুন, স্পট জগিং করুন, স্পট স্কিপিং করুন বা স্ট্যাটিক সাইকেল চালান। সাধ্যমতো জোরে হাঁটলে হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের বেশি উপকার হয়।
৬ । সারা দিনে তিন-চার চাচামচের বেশি চিনি বা তেল শরীরে ঢোকাবেন না – কারণ শহরে আমরা যে ধরনের কাজ করি, তাতে এর চেয়ে বেশি দরকার পড়ে না। যদি কোনওদিন একটা মিষ্টি বা কেক খান, তা হলে কিন্তু বাড়তি অন্তত ২৫০-৩০০ ক্যালোরি বাড়তি হল। এবার হয় আপনাকে ব্যায়াম করে এই এনার্জিটা খরচ করতে হবে, না হলে শরীর তা মেদ হিসেবে জমিয়ে রাখবে।
৭ । ফল আর শাকসবজি খান বেশি করে। দামি কিছু লাগবে না, আপনি ঢেঁড়শ, উচ্ছে, করলা, পেঁপে, লাউয়ের উপরেই ভরসা রাখতে পারেন। অল্প তেলে রান্না করা শাক, কিছু সেদ্ধ আনাজ খাওয়া উচিত রোজ।
৮ । দিনে পাঁচ লিটার জল খান। খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে ও পরে জল খাওয়া উচিত।
৯ । ডায়েটিশিয়ানের সাহায্য নিতে পারলে ভালো হয়, কেন না তিনি আপনার প্রইয়োজন বুঝে একটা ডায়েট চার্ট বানিয়ে দেবেন। না হলে আপনাকেই লো ক্যালোরি খাবার খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে।
১০ । একান্ত অসুস্থ না হলে ফিটনেস রুটিনে যেন কোনও বিরতি না আসে – ধারাবাহিক থাকা খুব জরুরি। রোজ খানিক সময় নিজের জন্য বরাদ্দ রাখুন।
এভাবেই চলুক আগামী কিছুদিন তারপর নিজেই দেখবেন আপনার এনার্জি লেভেল কত বেড়েছে। আপনি কতটা ঝরঝরে অনুভব করছেন। আমাদের অন্তরের বিশ্বাসই আমাদের লক্ষ্য অর্জনের মূল হাতিয়ার। তাই বিশ্বাস করুন নিজেকে আর ভালোবাসুন নিজের কাজকে।
● অর্পিতা ঐশ্বর্য কামাল কাছনা রংপুর ।