পসিতানো।’সৌন্দর্য পিপাসুদের স্বর্গ’!

পসিতানো।’সৌন্দর্য পিপাসুদের স্বর্গ’!

ইটালি’র দক্ষিণে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সমুদ্রের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের অপার বিস্ময়কর একটা গ্রাম ‘পসিতানো’।হলিডে ভিলেজ।পর্যটকদের কাছে নিশ্চিত বেহেশত,সেলিব্রিটিদের অবকাশ যাপনের পছন্দের তালিকায় অগ্রগণ্য। সারা পৃথিবী থেকে সৌন্দর্য পিয়াসী মানুষ ছুটে আসে পসিতানোতে প্রকৃতির সান্নিধ্যে,পাহাড় দেখতে,পাহাড় কেটে নয়নাভিরাম গ্রাম সাজানো হয়েছে ছবির মতো তা দেখতে।বাতাবী লেবুর সুগন্ধে মুগ্ধ হতে এবং অবশ্যই ফ্যাশন,চিত্রকলা আর প্রকৃতির নিবিড় কাছে যাওয়া আর পিৎজা,পাস্তার স্বাদে একাকার হওয়া—সত্যি অভাবনীয় সুন্দর!মাত্র চার হাজার মানুষের বসতির পসিতানোর আয়তন আট কিলোমিটার কিংবা সামান্য কিছু বেশি।

পাহাড় আর সমুদ্র মিলে মিশে একাকার এখানে। এতোটাই সুন্দর,বর্ণনা করে ব্যক্ত করা কঠিন।

ষোলো সালে সুযোগ হয়েছিলো পরিবারের সাথে ইউরোপ সফরের।ইউরোপের তিনটা দেশ জার্মানী,সুইজারল্যান্ড, ইটালি প্রতিটা দেশই সভ্যতা,সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যে অনন্য এবং বিস্ময়কর সমৃদ্ধতায় বর্ণিল।ইটালির রোম,ভ্যাটিকান সিটি, কোলাসিয়াম সহস্র বছরের সভ্যতাকে ধারণ করে আছে সগৌরবে।ভেনিসের সৌন্দর্য উপভোগে সারা পৃথিবীর সৌন্দর্য পিপাসুরা ভীড় করে ভেনিসে।

আমরা কেবল ক্ষুদ্র এক টুকরো ইটালিকে দেখেছিলাম,তাতেই বিস্ময়াভিভূত হয়েছি।পুরোটা দেখার সাধ্য কী,একবারের ভ্রমণে!তবে যতোটুকু দেখেছি,অবর্ণনীয় মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন হয়েছি, এটা বলতেই পারি।আর সবকিছুর মধ্যে ‘পসিতানো’ কোনো এক আবেদনে অসম্ভব ভালো লেগেছে।

রোম থেকে পসিতানো অনেকটা পথ।খুব সকালে রওয়ানা দিয়ে ও বাই রোডে পৌঁছাতে পৌঁছাতে অনেকটাই দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে। খাড়া সরু রাস্তা পাহাড় কেটে, পাশে বিশালকার সমুদ্র,আঁকাবাকা ভয়ংকর। মূল শহর ছেড়ে পসিতানোর পাহাড়ি রাস্তায় ওঠার সাথে সাথেই একটা ভয়,আশংকা এবং উত্তেজনা—পাশে হাজার ফিট নীচে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে গলা শুকিয়ে যায় বটে কিন্তু তাও এক দূর্নিবার আর্কষণ টেনে নিয়ে যায় ভ্রমণ পিপাসুদের সেখানেই।

ফাঁকে ফাঁকে ফ্যাশন হাউস, মিউজিয়াম,ছোটো ছোটো গিফট সপ।বেশি আকর্ষনীয় কিছু পরপরই বাতাবীলেবুর বাগান। হলুদ বর্ণের গাছেভরা বাতাবীলেবু চোখ কাঁড়তেই যেনো ব্যস্ত!পসিতানোর সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে আরো এক বিস্ময়কর সৌন্দর্য অবলোকনের সুযোগ হলো।প্রায় পড়ন্ত বিকেলে পাহাড়ি গ্রাম কিন্তু শহুরে সভ্যতা,সামনে বিশাল নীলাভ সমুদ্র, চিকমিক বালুকণা,পাড় ঘেঁষে রেষ্টুরেন্ট আর ক্যাফের সারি।পিৎজার শহরে এসে পিৎজা আর পাস্ত খাওয়া হলো জম্পেশ।

ছবিসুত্রঃ লেখিকা।

যেহেতু পৌঁছাতেই অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিলো এবং ডে-ট্যুর ছিলো,তাই দিনের আলো নিভে আসার সাথে সাথেই বেড়িয়ে পড়তো হলো রোমের উদ্দেশ্যে।অসম্ভব ব্যতিক্রমী একটা ভালোলাগা নিয়ে ফিরে আসলাম আবারো সেই খাদের কিনারা বেয়ে ভয়ংকর সুন্দর ভীতি ভীতি আশংকায়,উৎকন্ঠিত সৌন্দর্যের মোহনীয়তায় ফিরে যদি আসা যায় আবারো কখনো এইখানে, এই সুন্দরের কাছাকাছি….

-রেহানা আক্তার লুনা

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.