বিশ্বকাপ আয়োজন করতে প্রস্তুত ব্রাজিল

জাহিদুল আলম জয়: বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও আকাঙ্খিত আসর ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল। জমজমাট এই মহারণের পরবর্তী আসরের স্বাগতিক দেশ রেকর্ড পাঁচবারের শিরোপাজয়ী ব্রাজিল। ২০১৪ সালের ১২ জুন শুরু হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২০তম আসর। আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়াকে পেছনে ফেলে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয়বারের মতো স্বাগতিক দেশের মর্যাদা পায় পেলের দেশ। এর ফলে ব্রাজিলে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ ফুটবল। ১৯৫০ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের স্বাগতিক হয়েছিল সাম্বা ছন্দের দেশ। ঐতিহাসিক মারকানা  স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়ে গোটা ব্রাজিলকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে জিতে নিয়েছিল বিশ্বকাপ। ব্রাজিল পঞ্চম দেশ হিসেবে দুই বার বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে। এর আগে এ কৃতিত্ব দেখানো দেশগুলো হচ্ছেÑমেক্সিকো, ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানি। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথম দক্ষিণ আমেরিকার কোন দেশে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টানা দুই বিশ্বকাপ ইউরোপের বাইরে অনুষ্ঠিত হবে। কেননা গত ২০১০ বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকায়।

২০১৪ সালের ১২ জুন থেকে ১৩ জুলাই ব্রাজিলের ১২টি ভেন্যুতে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। ভেন্যুগুলো হলোÑবেলো হরিজন্তে (স্টেডিয়াম-এস্তাদিও গভারনেদর ম্যাগহালহিয়েস পিন্টো-মিনেইরো, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৬৯৯৫০ জন, এটির আরও আধুনিক সংস্কার চলছে), ব্রাসিলিয়া (স্টেডিয়াম-এস্তাদিও মানে গ্যারিঞ্চা-এস্তাদিও ন্যাসিওনাল, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৭১৫০০জন, এটির পুনঃসংস্কার করা হচ্ছে), কুয়েবা (স্টেডিয়াম-এ্যারিনা পান্টানাল গভারনেদর জোশে ফ্রাগেলি-নোভা ভারদাও, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪২৫০০, এটি নতুন নির্মিত স্টেডিয়াম), কুরিটিবা (স্টেডিয়াম-এস্তাদিও জোয়াকিউম অ্যামেরিকো গুইমারিয়াস-এ্যারিনা দ্য বেক্সাডা, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪১৩৭৫ জন, আধুনিক সংস্কার চলছে), ফোরটালিজা (স্টেডিয়াম-এস্তাদিও প্লাসিডো এদিরাল্ডো ক্যাস্টিলো-ক্যাস্টোলাও, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৬৭০৩৭ জন, আধুনিক সংস্কার চলছে), ম্যানুস (স্টেডিয়াম-এ্যারিনা আমাজোনিয়া ভিভাল্ডো লিমা-নোভো ভিভাল্ডাও, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৫০০০০ জন, নতুন নির্মিত স্টেডিয়াম), নাটাল(স্টেডিয়াম-এ্যারিনা ডাস ডুনাস-নোভা ম্যাকাডাও-বেইরা রিও, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪৫০০০ জন, নতুন নির্মিত স্টেডিয়াম), পোর্তো এ্যালিগেরো (স্টেডিয়াম-এস্তাদিও জোশে পিনহিয়েরো বোর্দা, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৬২০০০, আধুনিক সংস্কার চলছে), রিসিফে (স্টেডিয়াম-এ্যারিনা পারনামবুকো, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪৬১৬০ জন, নতুন স্টেডিয়াম), রিও ডি জেনিরো (স্টেডিয়াম-এস্তাদিও মারিও ফিলহো-মারাকানা, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৮২০০০, আধুনিক সংস্কার চলছে), সালভাদর( স্টেডিয়াম-এ্যারিনা ফোন্টে নোভা, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৫৫০০০ হাজার, নতুন স্টেডিয়াম), সাওপাওলো (স্টেডিয়াম- এ্যারিনা করিন্থিয়ান্স, দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪৮০০০, নতুন স্টেডিয়াম)।

ব্রাজিল বিশ্বকাপের চূড়ান্ত আসরের টিকেট পেতে বিশ্বজুড়ে চলছে বাছাইপর্ব। ইতোমধ্যে মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া। স্বাগতিক হিসেবে সবার আগে খেলা নিশ্চিত হয়েছে ব্রাজিলের। বাছাইপর্বের ডামাডোলের মধ্যেই ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ব্রাজিল বিশ্বকাপের সময়সূচী ঘোষণা করে। ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে ফিফার নীতিনির্ধারকরা এ ঘোষণা দেন। সঙ্গতকারণেই জানা গেছে পরবর্তী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচের ভেন্যুর নাম। ফিফার সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে ঘোষিত বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর ঐতিহ্যবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামে। ১৩ জুলাই চূড়ান্ত খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়। আর টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে সাওপাওলোর এ্যারিনা করিন্থিয়ান্স স্টেডিয়ামে ১২ জুন। স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা আর বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচে খেলবে স্বাগতিক ব্রাজিল। প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৮ জুলাই বেলো হরিজন্তেতে। সাওপাওলোতে ৯ জুলাই হবে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচ। ১২ জুলাই ব্রাসিলিয়ায় হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। ব্রাজিলের ১২টি শহরে মোট ৬৪টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ফিফার জেনারেল সেক্রেটারি জেরোমে ভাল্কে সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিলের ২০০২ বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কাফু ও ওই আসরের সেরা তারকা রোনাল্ডো। এর আগে নিজ দেশে উদ্বোধনী ম্যাচের স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করেন সাবেক তারকা ফুটবলারদ্বয়। ব্রাজিল বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা, রাত ১টা, রাত ৪টা ও সকাল ৭ টায়।

শুরু ব্রাজিল বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি

 

আগেই বলা হয়েছিল ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২০ আগস্ট। কথা অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। ঘোষিত তারিখ থেকেই আগামী বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। টিকিট কিনতে স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ফিফার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতে প্রথম পর্বের জন্য খরচ করতে হবে ৯০ ডলার। মানে ব্রাজিলের বাইরের দর্শকদের জন্য গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে কমমূল্যের এই টিকিটের দাম রাখা হয়েছে। ফাইনালে গিয়ে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৪০ ডলার। তবে রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ফাইনালের সবচেয়ে ভালো আসনে বসে খেলা দেখতে হলে খরচা করতে হবে ৯৯০ ডলার।

ব্রাজিলের শিক্ষার্থী, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি আর কিছু সামাজিক কর্মসূচির সদস্যরা ১৫ ডলারে গ্রুপ পর্বের খেলাগুলোর টিকিট কিনতে পারবেন। ব্রাজিলের সাধারণ দর্শকরা টিকিট কিনতে পারবেন সর্বনিম্ন ৩০ ডলারে। ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রত্যাশা, ২০০৬ সালে জার্মানি বিশ্বকাপের মতোই এবার টিকিটের চাহিদা বাড়বে। সেবার ৩.৩ মিলিয়ন ভক্ত হাজির হয়েছিল সরাসরি স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে। এবারও মাসব্যাপী এই টুর্নামেন্টের জন্য সমপরিমাণ টিকিট ছাড়ছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। জার্মান বিশ্বকাপে প্রতিটি টিকিটের জন্য ৭টি করে আবেদন পড়েছিল। চার ক্যাটাগোরিতে প্রায় ৩০ লাখ টিকেট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ফিফার বিপণন বিভাগ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত ২০১০ বিশ্বকাপের তুলনায় এবার বিদেশী দর্শকদের প্রায় ১০ ভাগ বেশি মূল্য দিয়ে টিকেট কিনতে হবে।

প্রথম পর্যায়ে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত জমা পড়া আবেদনগুলোর মধ্যে লটারি করে টিকিট বরাদ্দ করা হবে। তবে টিকিট সবগুলো বিক্রি না হলে ‘আগে এলে আগে পাবে’ ভিত্তিতে ৫ থেকে ২৮ নবেম্বর পর্যন্ত বিতরণ করা হবে। ৩২টি দলের গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচসূচি চূড়ান্ত হওয়ার ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় পর্যায়। ২৮ ফেব্রুয়ারী থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত তৃতীয় পর্যায়ে ‘আগে এলে আগে পাবে’ ভিত্তিতে টিকিট বিক্রি হবে। ফুটবলপ্রেমীদের অনলাইনে আবেদনের শেষ সুযোগ আসবে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। ফিফা জানিয়েছে, করপোরেট গ্রাহকদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে ৪ লাখ ৫০ হাজার টিকিট। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের জন্য প্রায় ৩০ লাখ টিকিট ছাড়া হবে। ১২টি স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার পর টিকিটের চূড়ান্ত সংখ্যা বলা যাবে বলে ফিফা জানায়। উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য ব্রজিল ব্যয় করবে প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি ডলার।

ব্রাজিলের বাইরের দর্শকদের জন্য উদ্বোধনী ম্যাচের টিকেট সর্বনিম্ন ২২০ মার্কিন ডলার। সবচেয়ে ভালমানের আসনের জন্য ১২ জুনে সাও পাওলোতে উদ্বোধনী ম্যাচ দেখতে হলে গুনতে হবে ৪৯৫ মার্র্কিন ডলার। এছাড়া ৪৭টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচের জন্য তৃতীয় পর্যায়ের সর্বনিম্ন ৯০ মার্কিন ডলার করে এবং প্রথমশ্রেণীর টিকেটমূল্য ১৭৫ মার্কিন ডলার করা হয়েছে। ঐতিহাসিক মারকানায় ১৩ জুলাই হবে ফাইনাল ম্যাচ। এ ম্যাচটির জন্য সর্বনিম্ন ৪৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৯৯০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ করতে হবে ব্রাজিলের বাইরে থেকে আগত বিদেশী দর্শকদের। সবমিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের তুলনায় এবার ১০ শতাংশ বেশি হারেই বিদেশীদের টিকেট কিনতে হবে। এর কারণ হিসেবে ব্রাজিল সরকারের প্রযুক্ত অধিক করই দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর ব্রাজিলের কংগ্রেসে বিশ্বকাপ বিল পাশ করা হয়। বিলের পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নেয়া এক অংশ টিকেটের ওপর বিশাল করারোপের পক্ষে থাকলেও আরেক অংশ এটিকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে সুপ্রীম কোর্টেও আপিল করেছে।

বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক ৩৩০ দিন আগে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চিত করে টিকেট বিক্রির সব পদ্ধতি। এ সম্পর্কে ফিফার মার্কেটিং পরিচালক থিয়েরি ওয়েইল বলেন, ‘চার ক্যাটাগরিতে তিনটি পর্বে প্রায় তিন মিলিয়ন টিকেট বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। প্রথম পর্বে ২০ আগস্ট থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে সকলের জন্য কিছু টিকেট উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। আর টিকিট হস্তান্তর করা হবে ৫-২৮ তারিখের মধ্যে।’ একই প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় পর্বের টিকেট বাছাইয়ের ড্র অনুষ্ঠিত হবে ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি। এখানে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ২৬ ফেব্রুয়ারী থেকে ১ এপ্রিলের মধ্যে টিকেটগুলো হস্তান্তর করা হবে। টিকিট বিক্রির তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্বটি সম্পন্ন করা হবে ১৫ এপ্রিল থেকে ফাইনালের দিন অর্থাৎ ১৩ জুলাই পর্যন্ত। ওয়েইল আরো জানিয়েছেন ৭ লাখ এক হাজার ৭৯টি টিকেট আন্তর্জাতিক সমর্থক ও ব্রাজিলিয়ানদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। এছাড়া আরও প্রায় ৪ লাখ টিকেট বিশেষভাবে শুধুমাত্র ব্রাজিলিয়ানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে ছাত্র-ছাত্রী, ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য বিশেষ ছাড়ের টিকিট। এগুলো টিকেট সর্বনিম্ন ১৫ মার্কিন ডলারে কেনা যাবে। সরকারি ও স্টেডিয়াম নির্মাণ শ্রমিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িতদের জন্যও কিছু সৌজন্যমূলক টিকেটের ব্যবস্থা থাকবে। কর্পোেেরট ক্লায়েন্টদের জন্য থাকছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টিকেট। এসব ক্লায়েন্টদের ফিফা ম্যাচ হসপিটালিটির জন্য ১২০ মার্কিন ডলারে ব্যয়ে বিশেষ লাইসেন্স দিয়েছে। টিকেটের মূল্য বিষয়ে ওয়েইল বলেন, ‘নির্ধারিত মূল্যগুলো অনেক চিন্তাভাবনা করে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা হয়েছে। এ কারণে বড় ধরণের ব্যবধান থাকবে এক ক্যাটাগোরি থেকে অন্য ক্যাটাগোরির। আমার বিশ্বাস ফিফাকে সবাই সঠিক বলেই মানবেন যখন মূল্য দিয়ে দর্শকরা টিকেট কিনতে যাবেন।’

অবশ্য উপ ক্রীড়ামন্ত্রী লুইস ফার্নান্দেজ টিকেটমূল্য ঘোষণার সময় বলেন, ‘টিকেট যেভাবে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্জন হিসেবে চিহ্নিত হবে। দেশ হিসেবে ব্রাজিল এটা করতে সক্ষম হয়েছে সফলতার সঙ্গে। আর সবকিছুই বিশ্বকাপের জন্য প্রণীত আইন অনুসারেই করা হয়েছে।’ কিন্তু ফার্নান্দেজ যাই বলুন না কেন যে কয়েকটি ক্যাটাগোরিতে ছাড় দেয়া হয়েছে সেগুলো ব্যতীত ব্রাজিলের সাধারণ দর্শকদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকবে টিকেট। অধিকাংশ ব্রাজিলিয়ান কর্মকর্তাদের গড় বেতন মাসিক ৩৪০ মার্কিন ডলার মাত্র। ব্রাজিল সর্বমোট ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করছে বিশ্বকাপ আয়োজনে। কিন্তু এজন্য কমদামী আসনের টিকেটমূল্যও ৮ বছর আগের তুলনায় ৩০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। টিকেটের উচ্চমূল্যের কারণে তাই কিছুটা হলেও ক্ষোভ ঝরেছে ফুটবলপ্রেমীদের।

 

 

 

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ভেন্যু নিয়ে সন্তুষ্ট ফিফা

৬৪ বছর পর অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিশ্বকাপযজ্ঞ সফল করে তুলতে পুরো ব্রাজিলকেই ঢেলে সাজাতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে। সেটা করতে যেয়ে জুন মাসে কনফেডারেশন্স কাপ চলাকালীন সময় রাজপথে লাখো জনতার অবস্থানও ছিল। এরপরও পেলের দেশ সাওপাওলোয় উদ্বোধনী মাচের ভেন্যু সংস্কার কাজ যথাসময়ে শেষ করতে যাচ্ছে। প্রথম ম্যাচ আয়োজনে ইতাকুয়েরা স্টেডিয়ামের অগ্রগতি দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ফিফা মহাসচিব জেরম ভাল্কে। গত ২০ আগস্ট তিনি এ অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন।

এখন পর্যন্ত ভেন্যুটির ৮৬ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভেন্যু পরিদর্শন শেষে ভাল্কে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ইতাকুয়েরায় উদ্বোধনী ম্যাচটি নিয়ে যদি ফিফার কোনো সন্দেহ থাকে, তবে তার সমাধান হয়েছে। আর ১০ মাসের মধ্যে এখানে শুরু হবে বিশ্বকাপ। সময়মতো স্টেডিয়াম উদ্বোধনীর জন্য প্রস্তুত থাকবে।’ বিশ্বকাপ আয়োজনে এই ভেন্যু নিয়ে সমালোচকদের সন্দেহ দূর করেছেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী আলডো রিবেলোও। তিনি বলেন, ‘আমিও এখন নিশ্চিত ইতাকুয়েরা সময়মতো ম্যাচ আয়োজনের উপযুক্ত হবে।’

ব্রাজিলের ১২টি ভেন্যুতে আগামী বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ছয়টি ভেন্যু গত জুনে সফলভাবে কনফেডারেশন্স কাপ আয়োজন করেছিল। বাকি ভেন্যুগুলো ফিফার বেধে দেওয়া সময় ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদী আয়োজক ব্রাজিল।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.