ব্লু হোয়েল : এর দায়ভার কি শুধুই নির্মাতার?

ব্লু হোয়েল : এর দায়ভার কি শুধুই নির্মাতার?

সালেহীন নির্ভয়: মানুষ পরাবাস্তব জগতে সশরীরে প্রবেশ করতে পারেনি। অথচ সেই পরাবাস্তব জগৎ রক্ত মাংসের মানুষকে মেরে ফেলছে। বনের বাঘে খায় না, মনের বাঘে খায়। একুশ শতকের অত্যাধুনিক বিশ্বের মানুষের মনের দৃঢ়তা এত কম । কল্পনার একটা জলজ প্রাণী স্থলে এস মানুষ খেয়ে ফেলছে । নিশ্চয় কোথাও সমস্যা আছে। এর দায়ভার কি শুধুই ব্লু হোয়েল এর নির্মাতা ফিলিপ ফক্স এর ?

প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বায়নের মধ্যে অনেক মানুষ অনেক অভাব নিয়ে বেড়ে ওঠছে। প্রযুক্তির আপডেটেশনরে সাথে তাল মেলাতে না পেরে হতাশ হচ্ছে। তার উপর মানুষের পারিবারিক সর্ম্পক ভাল না হওয়ায় নিজের মতো সবাই নিজের জগৎ খুজে নিচ্ছে। সে জগৎ হতেই পারে নীল তিমির মৃত্যু ফাঁদের জগৎ।

ফিলিপ কিশোর বয়সে তার মা ও বড় ভাইয়ের হাতে প্রচুর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যার দরুন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মানসিকভাবে অসুস্থ্য ফিলিপ বুদেকিন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মনোবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

ফিলিপ ১৮ বছর বয়সে ২০১৩ সালে প্রথমে ব্লু হোয়েল নিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রথমে তিনি সামাজিক মাধ্যমে ‘এফ৫৭’ নামে একটি গ্রুপ তৈরী করেন। এরপর ৫ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা করেন। ৫ বছরের মধ্যে যেসব মানুষ সমাজের জন্য অপ্রয়োজনীয় (তার মতে) তাদের ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেন।
সেন্ট পিটার্সবার্গ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিলিপ বলেন, ‘যেখানে মানুষ আছে সেখানে কিছু জীবন্ত বর্জও (মানুষ) আছে। ওইসব মানুষের সমাজে কোনো প্রয়োজন নেই। তারা হয় নিজেরা সমাজের জন্য ক্ষতি, না হয় তারা সমাজের ক্ষতির কারণ। আমি সমাজের ওইসব বর্জ্য পরিষ্কার করতে চাই।’

যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে হামলাকারী স্টিফেন কি সমাজের বর্জ্য নয় ?

বিশ্বের কৃত্রিম সমাজ ব্যবস্থায় ফিলিপ আর স্টিফেনদের জন্ম দেয়।

বাংলাদেশ এ আমরা কি করলাম “ ব্লু হোয়েল গেম খেলে হলিক্রসের একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে” বলে সব্বাই প্রচার করলাম। সবাই মাতল। অথচ প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আহমেদ জায়িফ তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ব্লু হোয়েল গেমস খেলে হলিক্রসের মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে যে খবর চাউর হয়েছে, তার এখন পর্যন্ত কোনো ভিত্তি নেই। মেয়েটার শরীরে ব্লু হোয়েলের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার আত্মহত্যার ধরনটিও আরও আট-দশটা আত্মহত্যার ঘটনার মতোই। মেয়েটির বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তাঁরা তাকে ভয়ানক রকম নজরদারির মধ্যে রেখেছিলেন। অহেতুক সন্দেহ করতেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে তার ব্যক্তিত্বের বড় ধরনের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় হয়তো ঘটনাটি ঘটেছে। কে জানে, বাবা-মাও হয়তো বিষয়টি বুঝতে পারছেন। কিন্তু এখন ব্লু হোয়েল গেমে সান্ত্বনা খুঁজছেন!’

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.