‘ মা ‘

‘ মা ‘

মা ‘এমন একটি শব্দ যার আলাদা করে ব্যাখ্যা করা যায় না। যার ভালোবাসা বা স্নেহ দুই লাইনের কবিতা দিয়ে কখনোই বোঝানো যায় না সেই তো মা ।
মা’-এক অক্ষরের ছোট এই শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব মমতা আর ভালোবাসা।
মায়ের তুলনা শুধুই মা।
মা শুধু নিজের সন্তানের মধ্যেই নয়, সবার মাঝেই অকাতরে বিলাতে পারেন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
মায়ের মতো এতো মধুর ডাক পৃথিবীর কোনো অভিধানে দ্বিতীয়টি আর নেই। ‘
‘মা’’ যেন ভালোবাসার এক বিশাল আকাশ, অথৈ সাগর।
তাই সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই ‘মা’ সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত প্রেমময়ী এক নাম।
যুগে যুগে, দেশে দেশে, কালে কালে এই প্রিয় শব্দটি দোলা দিয়েছে সবার মনের গহীন বনে।
এই ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন কবি সাহিত্যিকগণও পিছিয়ে নেই কোন অংশে।
কবিদের মনে, কবিদের চোখে এই শব্দটি নানাভাবে, নানা আঙ্গিকে দোলা দিয়েছে বারবার।
মায়ের প্রতি রয়েছে তাদের নিঃস্বার্থ গভীর ভালোবাসা। 
সবচেয়ে পবিত্র ও মধুর শব্দের নাম ‘মা’। মায়ের ভালোবাসা পেতে প্রয়োজন হয় না ভালোবাসি বলা। সুখে-দুঃখে প্রতিটি সময় মায়া স্নেহ ভালোবাসায় যিনি জড়িয়ে রাখেন, তিনিই মা ।
পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দ হচ্ছে মা। আর মাযের তুলনা কোন কিছু দিয়েই সম্ভব না৷ মায়ের তুলনা শুধুই মা। আর সামান্য কিছু শব্দ বা বাক্যের দ্বারা মাকে নিয়ে বলে শেষ করা সম্ভব না। মা। অনেক ছোট্ট একটি শব্দ। একটি মাত্র অক্ষরের নাম। কিন্তু এই নামটি মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে আপন। এই নামের মাধুর্য্য যে কতটা বেশি তা বলে বা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। একজন সন্তানের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তার মা। মা ছাড়া আসলে একজন সন্তানের কাছে অন্য কিছু এতটা মূল্যবান হতে পারে বলে আমি মনে করি না। বলা হয়ে থাকে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত।
আমরা সবাই সবার জায়গা থেকে মা কে বেস্ট মনে করি , আমরা মনে করি আমার মা সেরা মা।
” আমি যেদিন পৃথিবীতে এসেছিলাম সেদিন হয়তো সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলো আমার মা  পরম যত্নে আমাকে বুকে আগলে রেখেছিলে সবসময় আমার আম্মু এমন একজন মা যে আমাকে ২২ টা বছর পরম আদর স্নেহে আগলে রেখেছে। কখনো কোনো কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি ।
আম্মুকে নিয়ে মাঝে মাঝে চিঠি লিখতে ইচ্ছে করে , আম্মুর বুকের ভেতর লুকিয়ে ছোট বেলার গল্প শুনতে ভালো লাগে,  আম্মুবাসায় এক মুহুর্ত না থাকলে  মনে হয় এই পৃথিবীতে আমার কিছুই নেই , বলতে ইচ্ছে করে
আম্মু,  খুব ভালোবাসি আমি তোমাকে
আম্মু , আমি তো এখনো তোমার সেই ছোট্ট মেয়ে টাই রয়ে গেলাম। তোমার মনে আছে আম্মু যখন আমরা পীরগাছায় ছিলাম তুমি সকালে উঠে অফিস গিয়েছিলে আমি ঘুম থেকে উঠে আপুকে বার বার জিঘাংসা করছিলাম ” আম্মু কখন আসবে” আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমার জন্মদিনের কথা ভুলেই গেছো, খুব অভিমান হয়েছিলো সেদিন না খেয়েই ঘুমিয়ে পরেছিলাম তুমি সেদিন খুব তারাতারি অফিস থেকে ফিরে এসেছিলে আমি যানি সেদিন তোমার অফিসে মন বসে নি এসেই আমার মাথার উপর একটা টিয়া পাখি ঝুলিয়ে রেখেছিলে আর আমি চোখ খুলে দেখে সেদিন কি যে খুশি হয়েছিলাম বুঝাতে পারবো না। আম্মু তোমার মনে আছে একবার অন্ধকারে আপুর সাথে খেলতে গিয়ে আমার মাথা ফেটে গেছিলো আর তুমি রাত দশ  টায় আমায় নিয়ে পাগলের মত ডাক্তার খানায় ছুটেছিলা আর ডাক্তার যখন ইন্জেকশন দিয়েছিলো তুমি আমাকে শক্তকরে জরিয়ে ধরেছিলে

আচ্ছা আম্মু তোমার কি মনে আছে পীরগাছা থেকে যখন আমরা বড়দরগাহ্ আসলাম নতুন স্কুল নতুন পরিবেশ, স্কুল যাবো না জন্য আব্বু কি মাইর টাই না মারলো তুমি সেদিন আমাকে নিয়ে স্কুল গিয়েছিলে আমার ক্লাস টাইমেও তুমি আমার পাশে বসে ছিলে একবার তো তোমাকে দেখতে না পেরে আমার সে কি কান্না। তার পর যখন একাই স্কুল যাওয়া শিখে গেলাম তখন রোজ স্কুল ছুটির পর বাসায় আসার পথে দূর থেকে দেখতাম তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করছো আর আমি এসে তোমায় জরিয়ে ধরতাম। তুমিই এমন একজন নিজে না খেয়ে আমার জন্য খাবার তুলে রাখতে, কখনো গায়ে হাত তুলো নাই, দোষ করলে সবসময় আগলে রাখতে , দুই বোনকে সবসময় ভালোবাসতা । কতো সময় না ঘুমিয়ে কাটিয়েছো আমাদের একটু অসুস্থতা হলে।
মনে আছে একবার দুই বোনে সে কি জ্বর তুমি আমাদের দুই বোনকে বিছানায় শোয়ায় মাথায় পানি দিচ্ছেলে আর তোমার চোখদিয়ে টপটপ করে পানি পরছিলো ,
২০১৬ সালে যখন আমি অসুস্থ হয়ে পরলাম টনসেল ফুলে কাটা হয়ে গেছিলো নাক বন্ধ হয়ে গেছিলো সেদিন পাগলের মত যখন সারারাত চেঁচাতাম তুমি তখন বুকে আগলে রেখেছিলে। অপারেশন এর দিন তুমি সারা রাত না খেয়ে আমার নাকের রক্ত মুছে দিয়ে ছিলা। কি করে ভুলবো বলো দিন গুলো ।তুমি যে কিনা আমাদের ভালোর জন্য নিজের ইচ্ছা চাওয়া পাওয়া ত্যাগ করেছিলে আমাদের সুখের জন্য নামাজে কত কেঁদেছিলে। আজো কাঁদো আমিতো দেখি ।
বড্ড মনে পরে,আম্মু আমাদের জীবনে তুমি জীবনের সমান। আমাদের জীবনে তুমি এমন একটা জায়গা যা আমরা ঠিক সুস্পষ্ট ভাবে ব্যাখ্যায় করতে পারবো না। তুমি আমাদের সেই গাছ তলা যেখানে জীবনের কঠোর তপ্ত রোদের মধ্যে একফালি ছায়া, যেখানে আমরা চলার পথে কিছুটা বিশ্রাম পাই। তুমি আমাদের সেই কোনটা যেখানে আমরা আর সবকিছু ভুল হলে গিয়ে নিঃস্বাস নি। আমাদের জীবনে তুমিই একমাত্র মানুষ যিনি এক্কেবারে ভেতর থেকে আমাদের বুঝো, তোমাকে কিছু বলে দিতে হয়না আমাদের, আমাদের মুখ দেখলেই কেমন করে যেন আমাদের মনের অবস্থা বুঝে ফেলো। আর ঠিক সময়মত সঠিক সমাধান দাও। কখনো ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দিও আম্মু আমরা তোমাকে বড্ডো ভালোবাসি.

● কবি ও লেখক:
                  অর্পিতা ঐশ্বর্য কামাল কাছনা রংপুর ।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.