২০১২ এর আগে হিগস কণা খুঁজে পাওয়া যাবে না!

২০১২ এর আগে হিগস কণা খুঁজে পাওয়া যাবে না!

সুইজারল্যান্ডের লার্জ হাইড্রন গবেষকরা ২০১২এর প্রান্তে এসে বড় হ্যাড্রন কলিডর থেকে হিগস কণা খুঁজে পেতে পারেন বলে আশা করছেন। যদি এই চক্রে এলএইচসি হিগস কণা সম্বন্ধে কোন উপাত্ত প্রদান না করতে পারে তাহলে আরোপিত পদার্থবিদ্যার সূত্র পরিবর্তন করতে হবে বলছেন এলএইচসি র বিজ্ঞানীরা।

উল্লেখ্য, মাটির ৫০ থেকে ১৭৫ মিটার নিচে ২৭ কিলোমিটার পরিধির এই চক্রাকার যন্ত্রটি প্রোটন কণাকে আলোর গতির খুব কাছাকাছি নিয়ে যায় এবং এরপর সেই উচ্চ গতিশীল কণাগুলোকে একে অন্যের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায়। সেই সংঘর্ষে অজানা সব নতুন কণার জন্ন নেওয়ার কথা, যার মধ্যে বিজ্ঞানীরা খুঁজছেন হিগস নামের একটি কণা। হিগস কণা বা হিগস বোসন বস্তুর কেন ভর (বা ওজন) আছে, তার উত্তর দেবে। ষাটের দশকে বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী (পিটার হিগস তাঁদের অন্যতম) এমন একটি ক্ষেত্রের কথা ভাবেন, যা বিভিন্ন কণার সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে সেই কণাগুলোর ভর দেয়, অর্থাৎ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রে তাদের ওজন থাকবে। ইলেকট্রন যদি দ্রুত ভ্রমণ করতে চায়, তাহলে হিগস ক্ষেত্র তাকে শ্লথ করে দেবে, কিন্তু আমাদের মনে হবে ইলেকট্রনের ভর (বা ওজন) আছে বলে সে দ্রুত যেতে পারছে না। আসলে সেই ভরটা আসছে হিগস ক্ষেত্রের সঙ্গে ইলেকট্রনের বিক্রিয়ার ফলে। হিগস ক্ষেত্র না থাকলে কোনো কণা তথা বস্তুরই ভর (বা ওজন) থাকত না।হিগস ক্ষেত্র যে আছে, সেটা কী করে প্রমাণ করা সম্ভব? একটি গতিশীল ইলেকট্রন কণার সঙ্গে যেমন একটি তড়িৎ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্র থাকবে, তেমনি এটা অনুমান করা যায় যে হিগস ক্ষেত্রের সঙ্গে থাকতে হবে একটি হিগস কণা (বা হিগস বোসন)। সেই হিগস কণা আবিষ্ককারের জন্য এলএইচসির সৃষ্টি, যদিও এলএইচসির অন্যান্য উদ্দেশ্যের মধ্যে আছে সুপার-সিমেট্রিক কণাসমূহ বলে একদল ভাবীকথিত কণার সন্ধান এবং আমাদের পরিচিত তিনটি স্থান-মাত্রার বাইরে অন্য কোনো মাত্রা আছে কি না, তার অনুসন্ধান। নিঃসন্দেহে এসব গবেষণা আমাদের এই মহাবিশ্বের অন্তর্নিহিত গঠন চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।

এলএইচসি যন্ত্রের মূলে আছে প্রায় এক হাজার ৬০০টি উচ্চ ক্ষমতাশালী তড়িৎ-চুম্বক, যা প্রোটনসহ বিভিন্ন আধানযুক্ত কণাগুলোকে একটি চক্রাকার পথের সুড়ঙ্গে পরিচালিত করে। ২৭ টন ওজনের একেকটি চুম্বককে সব সময় পরম শুন্য তাপমাত্রার (মাইনাস ২৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কাছাকাছি রাখতে হয়। এই হিমায়নপ্রক্রিয়ার জন্য প্রায় ১০ হাজার টন তরল নাইট্রোজেন ও ১২০ টন তরল হিলিয়ামের প্রয়োজন হয়েছে। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীতে উৎপাদিত সমগ্র হিলিয়ামের একটি বিশাল অংশ এলএইচসির কাজে ব্যবহূত হয়েছে। এলএইচসির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত আছেন ১০০টি দেশের প্রায় ১০ হাজার বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী। এতে আপাতত খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ শ কোটি ডলার। ৩৩টি দেশের ১৫২টি কম্পিউটার কেন্দ্রের সমন্বয়ে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার একক প্রসেসর দিয়ে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কম্পিউটার, যা এলএইচসির উপাত্ত বিশ্লেষণ করবে।

সূত্র: বিবিসি নিউজ

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.