মুখোমুখি

মুখোমুখি

হঠাৎ তোমার সাথে আমার দেখা রংপুর রেলস্টেশনে , আমি হালকা নীল রঙের শাড়ি পড়ে স্টেশনে বসে ছিলাম আনমনে ..

 উদ্দেশ্য ছিলো আমার ঢাকা , একটা ছোট্ট কাজে, 

কানে হেড ফোন আর হাতে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের বই , বই পড়াতে পড়তে হঠাৎ আচমকা চোখ তুলে সামনে তাকাতেই দেখি কেউ একজন আমার দিকে তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে 

দু একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম চিন্তে একটু বেশি কষ্ট হচ্ছে কেমন যেন একটু বেশিই অগোছালো 

কিছুক্ষণ পড় আবার তাকাতেই দেখি তখনো তাকিয়ে আছে এবার আর চিন্তে ভুল হচ্ছে না

আবার দেখা হল দুজনের , না, নতুন করে শুরু করার আর সময় নেই। কিন্তু আজও মনে আছে সেদিনের সব কথা। প্রথম প্রেম, তা কি ভোলা যায়!

ঠোঁটের দ্বাড়গোড়ায় এসে থমকে দাঁড়ালো হাজারো কথা 

অনেক কিছুই আজ জানতে ইচ্ছে করছে কিন্তু বইয়ের আড়ালে মুখ লুকিয়ে আছি ভয় হচ্ছিল যদি তুমি চিন্তে পেরে যাও 

তারপরও আজ হঠাৎ দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না আড় চোখে তাকাতে খুব ইচ্ছে করছিল 

শেষমেশ তাকিয়েই ফেললাম 

সেই একই চাহনি একই চুলের ভাঁজ 

চশমাটাও তো পাল্টাও নি দেখলাম 

কালো মোটা ফ্রেমে বাঁধা দুটি চোখ।

হঠাৎ রোদ কে উপেক্ষা করে একফোঁটা দু ফোঁটা করে আকাশ থেকে বৃষ্টি শুরু হলো 

খুব জানতে ইচ্ছে করছে বৃষ্টি কি তোমার এখনো খুব ভালো লাগে নাকি ব্যস্ততার ভিড়ে সব অনুভূতি হারিয়ে গেছে 

কিন্তু সব কথার তো আর শব্দে বলা যায় না, নীরবতারাও উত্তর দিতে জানে। আমার স্তব্ধতায় তুমি কি একটু হলেও আমায় অনুভব করবে? তুমি কি বুঝতে পারবে আমার মনের সব অব্যাক্ত কথা গুলো ।

বরফের মতো ঠান্ডা হাওয়া আর বৃষ্টি ভিজে যখন লোকজন সর্বশান্ত তখন কী চোখের উষ্ণতায় পড়তে চাইবে আমার চোখের ভাষা?

 কে জানে হয়তো চাইবে না। আমি কিন্তু সাদা বরফের ভিড়ে তোমার চোখের উষ্ণতা না দেখার হাহাকার নিয়েই ভিজে যাব অবিরত।

তোমার পুরনো সে হাসি দেখে বুঝে গেলাম বেশ ভালোই আছো।

কিছুক্ষণ বাদে ট্রেন এসে পড়বে

চাইছিলাম আজকে একটু দেরি করেই আসুক

নিয়ম ভেঙে অনিয়মের পথে তুমিও কি সেটা চাচ্ছিলে 

আমার তো ইচ্ছে করছে আরও কিছু সময় ধরে দেখি তোমায়

ভাবনার জগতে কি সুন্দর অতল সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানো যায় তাই না

আজ সামনে থেকেও কত দূরে তুমি 

যে দিকে যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো 

জীবন নিয়ে গেল তাঁর বিপরীত 

আজ হয়তো সুযোগ আছে, তবে কিন্তু অধিকার নেই।

আকাশে কুঞ্জ মেঘের সমীকরণ দেখে মুগ্ধ হবে তখন পুরোনোর অধ্যায়ে ফেলে আসা এই আমিটাকে কী তুমি মনে রাখবে?

আবার হয়তো এভাবে হঠাৎ একদিন দেখা হবে আমাদের, তুমি আমাকে দেখে এভাবেই হয়তো চমকে যাবে। কতটা পরিবর্তন হয়ে গেছি আমি। তুমি খানিকটা স্থির হয়ে যাবে, আমাকে ভালোভাবে দেখার জন্য। আমি এক পলক দেখে হেঁটে চলে যাবো। পিছনে ফিরে দেখবোনা, এতদিনে পিছনে ঘুরে তাকানোর অভ্যাসটা বদলে গেছে ।

কবি ও লেখক:

অর্পিতা ঐশ্বর্য কামাল কাছনা রংপুর ।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.