
হঠাৎ সেদিন কলেজ থেকে বাসায় আসতেই
শুনতে পারলাম একটা ছেলে আমাকে নাকি দেখতে আসবে,
কখনো প্রেম করিনি , শুনেছি কালো মেয়েদের নাকি প্রেম করতে বারণ ।
সেদিন প্রথম ঠিকঠাক মতো আয়নার সামনে দাড়ালাম,
নিজের পছন্দ মতো সাঁজলাম;
চোখে কাজল,ঠোটে হালকা লিপস্টিক, কপালে ছোট্ট একটা টিপ।
কেমন লাগছে আমাকে?
নিজেকেই প্রশ্ন করলাম
জানিনা,জানিনা আমি।
কেমন যে লজ্জা লজ্জা পাচ্ছি
খুশিতে মুখ লুকিয়ে রাখছি
হঠাৎ করে তাদের সামনে আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো,
অমনি ছেলের মা ব্রু কুঁচকে বলে উঠলো;
ওমা মেয়ে এতো কালো???
চোখ থেকে টুপ করে দুফোটা জল গড়িয়ে পড়লো,
বিয়েটা ভেঙে গেলো ।
খুব বকছিলো বাবা মা
আমি নাকি তাদের কাছে বোঝা ।
এমন সময় বাবা বললো ” আগে যদি জানতাম গলা টিপে মেরে ফেলতাম “।
খুব কেঁদেছিলাম দরজা বন্ধ করে
বিধাতাকে বলেছিলাম কেন আমাকে কালো বানালে ।
ভেবেছিলাম যাবো এবার মরে
গলায় দিয়ে দড়ি নয়তো হাতের শিরা কেটে ।
সেদিন আবার একটা ছেলে এসেছিল আমাকে দেখতে
বাবা বলে গেলেন এবার পছন্দ না হলে আমাকে নাকি ফেলবে মেরে
খুব রাগ হচ্ছিল নিজের উপর
ইচ্ছে করছিল না যেতে
তবু গেলাম বাবার ভয়ে চোখে একটু কাজল দিয়ে
দেখলাম ছেলেটা আমার চোঁখে দিকে বেশ মায়াবী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,
হয়তো পছন্দ হয়েছিলো,হয়তো না;
তবে আমি কিছুই বলেনি।
কি দেখে জানি ছেলেটা আমাকে বিয়ে করলো
শুধুই আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতো
একদিন জোস্না রাতে কফি খেতে খেতে আমাকে সুন্দর বলেছিলো
বলেছিলো চোখের কাজলে আমাকে নাকি বেশ মানায়
এই কাজল চোখ দেখেই নাকি সে আমার প্রেমে পরে গেছে
হঠাৎ আমি চাঁদটা দেখে মুচকি হাসলাম
চারপাশের আকাশটা অন্ধকার শুধু পাশে একটা চাঁদ যেন কালো আকাশকে উজ্জ্বল করে রেখেছে
হঠাৎ ভাবতে লাগলাম সব কালো মেয়েদের জীবন যদি এমন হতো
তাহলে কতোই না ভালো হতো ।
● কবি ও লেখক:
অর্পিতা ঐশ্বর্য কামাল কাছনা রংপুর ।