ডেস্ক : ১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল ইংল্যান্ডের সাউথহ্যাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক যাওয়ার পথে হিমশৈলে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ, টাইটানিক। সেই টাইটানিক ফের উত্তাল সমুদ্রে ভাসতে যাচ্ছে। এবারের জাহাজটির নাম দেয়া হয়েছে ‘টাইটানিক -২’। তবে নিরাপত্তার বিষয়টিতে এবার আরও বেশি নজর দেয়া হয়েছে।
এবার আরও নিরাপদ এবং আধুনিক হচ্ছে টাইটানিক-২। অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায়ী ক্লাইভ পামারের ব্লু স্টারলাইন সংস্থা জাহাজটি তৈরি করেছে। দেখতে অনেকটা প্রথম টাইটানিকের মতোই হচ্ছে। জাহাজের ভেতেরের সাজসজ্জাও হচ্ছে প্রথম টাইটানিকের বিষয়টি মাথায় রেখে।
২০১৬ সালেই জাহাজটি সমুদ্রে ভাসার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০১৮ সাল করা হয়েছে।জানা গেছে, ২০১৮ সালে চীনের জিয়াংশু থেকে দুবাই পর্যন্ত যাবে ‘টাইটানিক-২’ জাহাজটি।
টাইটানিক-২ এ কী কী থাকছে?
১. জাহাজটি ২৭০ মিটার লম্বা, ৫৩ মিটার চওড়া। ওজন ৪ কোটি টন।
২. মোট খরচ হচ্ছে ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ড।
৩. ৯ তলার এই জাহাজে থাকছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাড, টার্কিশ বাথ, জিম, ৮৪০টি কেবিন।
৪. জায়গা হবে ২,৪০০ জন যাত্রী এবং ৯০০ ক্রু মেম্বারের।
৫. প্রতি যাত্রীর জন্য থাকছে লাইফবোট।
৬. প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয়- তিন শ্রেণির টিকিট বিক্রি হবে।
৭. জাহাজে থাকছে জিপিএস সিস্টেম।
ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজ সম্পর্কে অবাক করা ১৬টি তথ্য
টাইটানিক সম্পর্কে কত তথ্য আজও অজানা। টাইটানিক যেন এক রূপকথার নাম যেন। কত মিথই তো ছড়িয়ে এই জাহাজটিকে ঘিরে! সেগুলি অনেকেরই জানা। এ সবের বাইরে এমন অনেক ছোটখাটো তথ্য আছে, যেগুলি শুনলে যারপরনাই অবাক হতে হয়।
১. যে দিন হিমশৈলে টাইটানিক ধাক্কা খেয়েছিল, সেই দিনই লাইফবোটের একটি মহড়া ছিল টাইটানিকে। ক্যাপ্টেন সেটি বাতিল করেন।
২. সিনেমায় মনে আছে, কীভাবে মিউজিশিয়ানরা ক্রমাগত বেহালা বাজিয়ে গিয়েছিলেন জাহাজ ডোবার সময়ে? বাস্তবেও তেমনটাই ঘটেছিল।
৩. হারশে চকোলেট সংস্থার মালিক, তৎকালীন ব্রিটিশ ধনীদের অন্যতম, মিল্টন হারশের কাছে টাইটানিকের টিকিট ছিল। কিন্তু ব্যস্ততার জন্য তিনি তা বাতিল করেন।
৪. এক জাপানি যাত্রী প্রাণে বেঁচেছিলেন। কোনক্রমে তীরে পৌঁছনোর পরে তিনি যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে যান। সহযাত্রীদের কথা ভাবেননি বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ।
অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র ‘টাইটানিক’ এর একটি জনপ্রিয় রোমান্টিক দৃশ্য
৫. যে চারটি স্মোকস্ট্যাক (ধোঁয়া বেরনোর বিশাল চিমনি) ছিল জাহাজটির, তার তিনটি কাজ করত। একটি ছিল স্রেফ জাহাজ সাজানোর জন্য।
৬. ‘‘টাইটানিক ডুবেছে। তবে কেউ মারা যাননি ’’ সংবাদপত্রে প্রথম দিন খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
৭. দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পরে নিউ ইয়র্ক টাইমস ৭৫ পাতা জুড়ে শুধু টাইটানিকেরই খবর ছেপেছিল।
৮. ‘ক্যালিফোর্নিয়ান’ নামে একটি জাহাজ টাইটানিকের খুব কাছেই ছিল। কিন্তু তার ওয়্যারলেস অপারেটর ছিলেন গভীর ঘুমে। টাইটানিক থেকে আকাশে ছোড়া সেই বিপদসংকেত তিনি দেখতেই পাননি।
৯. টাইটানিকের ‘চিফ বেকার’, অর্থাৎ বেকারির দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনি দু’ঘণ্টা ওই ঠান্ডা পানিতে থাকার পরেও বেঁচে গিয়েছিলেন। এর কারণ? অতিরিক্ত মদ্যপানে তাঁর শরীর ছিল গরম।
১০. টাইটানিক-ই একমাত্র জাহাজ, যা হিমশৈলে ধাক্কা লেগে ডুবেছে।
১১. বেশিরভাগ লাইফবোটেই জায়গা ফাঁকা ছিল। কিন্তু কোনও অজানা কারণে সেগুলিতে লোক নেওয়া হয়নি।
১২. হিমশৈলের খবর আর মাত্র ৩০ সেকেন্ড আগে ক্যাপ্টেনের কাছে এলেই টাইটানিক-কে বাঁচানো যেত।
১৩. টাইটানিকের ১,৫১৪ যাত্রী মারা গিয়েছিলেন। তবে উদ্ধার করা হয়েছিল মাত্র ৩৩৬টি দেহ।
১৪. যে হিমশৈলে ধাক্কা লেগে টাইটানিক ডুবেছিল, সেটি গঠিত হয়েছিল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ থেকে।
১৫. সবথেকে দামি টিকিটের মূল্য কত ছিল জানেন? সেই সময়ে ৪,৩৫০ মার্কিন ডলার।
১৬. তৃতীয় শ্রেণিতে ৭০০-র বেশি যাত্রী ছিলেন। তাঁদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র দু’টি বাথটাব। – ওএনবি