” মুড সুইং “

” মুড সুইং “

আজকের টপিক মুড সুইং, 

আমরা অনেকেই জানিনা মুড সুইং  টা আসলে কি 

প্রথমে আমাদের জানা দরকার মুড সুইং টা আসলে কি?

মেজাজ হুট করেই বদলে যাওয়া, মন ভাল না খারাপ তাও বুঝতে না পারা, এই হাসিমুখ তো পরক্ষণেই রাগ এগুলো মনের একটা অসুখের লক্ষণ। যার নাম মুড সুইং।

ধরুণ আপনি হাসিমুখে  কথা বলতে বলতে হঠাৎ মুড খারাপ হয়ে গেলো আবার ঠিক হয়ে গেলো এটাকেই সংক্ষেপে মুড সুইং বলে।

মেজাজ পরিবর্তন, খুব দ্রুত সহজ সরল পরিস্থিতিকে চরম অস্থিরতার মধ্যে ফেলে একটা মানসিক বেখেয়ালি  তৈরি করে। এর মূলে থাকে অনুভূতি এবং রাগ, বিরক্তভাব কিংবা বিষণ্নতা ও অনিদ্রা।

মুড সুইং এর ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয় তাকে নরমাল বিষণ্নতা বলা হয়। আর এই নরমাল বিষন্নতা প্রতিটি মানুষকে এক থেকে দুই করতে খুব বেশিই প্রভাব ফেলে।

মুড সুইং সাধারণভাবে মেয়েদের হয়ে থাকে, সাধারণত দুই সময়ে মুড সুইং হয়ে থাকে পিরিয়ড চলা কালিন কিংবা গর্ভধারণ এর সময় ।

শুধু এই দুটো সময় এই মেইন পয়েন্ট না তাছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই মেয়েদের মুড সুইং হয়ে থাকে ।

তবে অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে ধ্বংস করার চিন্তাও করে। আর তাই নিয়মিত নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা উচিত প্রতিটি মানুষেরই।

মুড সুইং খুবই অল্প সময়ের জন্য তৈরি হয়৷ কিন্তু যখন শুরু হয় তার কিছুক্ষন পর এত তীব্র আকার ধারণ করে থাকে, যার ফলে একজন মেয়ের দৈনন্দিন জীবনের কাজ, এমনকি যেকোনো সম্পর্কে দ্বৈত্ব অবস্থা তৈরি করে 

থাকে। এই সমস্যা তৈরি হলে একজন সাইকোলজিস্ট দেখানো যেতে পারে ।

সাধারণ কিছু লক্ষণ হলো-

খিটখিটে ভাব

রাগ

বিষণ্ণতা

কান্না

অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতা

উদ্বিগ্ন ভাব

পর্যায়ক্রমিক বিষাদ ও রাগ

মুড সুইং হলে কিছুই ভালো লাগে না , সারা দিন বিসন্নতায় ভুগতে হয় । মরে যেতে ইচ্ছে করে ।কোনো কাজেই মন বসে না ।

তাই অনেকেই আত্মহত্যা করে থাকে,,

অনেকেই বুঝতে পারে না কেন তারা এমন করছে এমন কি তাদের পরিবারের কেউ ই তাদের বুঝতে পারে না কিংবা বুঝতে চায় না । পরিবারের সবাই তাদের বাহির টাই দেখে ভিতরে কি হচ্ছে তা দেখে না ।

নিজের ক্ষতিসাধন করতে ইচ্ছে , জীবন শেষ করে দেয়ার চিন্তাও আসে কখনো কখনো।

বন্ধুবান্ধব, আপনজনদের এড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে , কাজ করতে এমনকি চলাফেরা করতেও অনীহা হচ্ছে, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে।

মানুষের মুখোমুখি হতে ভালো লাগে না , 

এসব লক্ষণ আবিস্কার করল এবার একটু সামলে চলুন, হয়তো আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে।

শুধু চিকিৎসাই সমাধান নয় পরিবারের সবার উচিত কারো মুড সুইং হলে তাদের পাশে থাকা ।

আসুন দেখে নেই  মুড সুইং হওয়ার অন্যান্য কয়েকটি কারণ :

১| স্ট্রেস বা মানসিক চাপ (Mental Stress) :

তাহলে দেখা যাক স্ট্রেস বা মানসিক চাপ টা আসলে কি?

আমাদের প্রত্যেকের মানসিক চাপ নেওয়ার ক্ষমতা একেক রকমের হয়। কেউ একটু বেশি চাপ সহ্য করতে পারে আবার কেউ একটু কম চাপেই ভীত হয়ে পড়ে। অফিস, সংসার, ছেলেমেয়েদের চিন্তা, কেরিয়ার, প্রেম সহ নানা রকমের জটিলতার কারণে স্ট্রেস দেখা দেয়। আর এর থেকেই অনেক সময় মুড সুইং (Mood Swings) হতে পারে।

২| অস্থিরতা (Anxiety) :

কেউ ধীর স্থির হয়ে আক্রান্ত  আবার কেউ একটু ছটফটে আক্রান্ত হয় । কিন্তু অনেকেই আছেন যারা প্রত্যেক বিষয়েই অস্থির হয়ে পড়েন। হয়তো বিষয়টি খুব সামান্য, খুব সহজেই তার সমাধান করা সম্ভব তাতেও তাঁরা ভয়ানক চিন্তা ভাবনা শুরু করে দেন ব্যাপার তাঁদের অতিরিক্ত ভাবায়। একেই অ্যাংজাইটি বলে। এর থেকেও মুড সুইং হতে পারে।

৩| অবসাদ বা ডিপ্রেশন (Depression) : 

মুড সুইংয়ের অন্যতম কারণ হল মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন। এটাকে মুড সুইং এর অপর পৃষ্ঠা বলা যেতে পারে। আবার মানসিক অবসাদ আসে স্ট্রেস আর অ্যাংজাইটি থেকে। হঠাৎ করে মন খারাপ হয়ে যাওয়া বা গভীর দুঃখের সাগরে ডুবে যাওয়াও কিন্তু মুড সুইংয়ের অন্যতম লক্ষণ। তবে একটা কথা মনে রাখবেন। আমরা মনে করি মানসিক অবসাদ মানেই হল দুঃখ, তা কিন্তু নয়। মানসিক অবসাদ হলে ভয়ঙ্কর রাগও হয়।

৫| ঘুমের অভাব (Sleep Deprivation) :

অতিরিক্ত কাজ, সাংসারিক সমস্যা বা অন্যান্য যে কোনও কারণে যদি দিনের পর দিন আপনার ঘুম না হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার মুড সুইং হবে।ঘুম না হওয়ার কারণে আপনি ক্লান্ত থাকবেন এবং আপনার স্নায়ুমণ্ডলী ঝিমিয়ে থাকবে। তখন কোনও কিছুই আপনার ভাল লাগবে না এবং ঘন ঘন মুড পরিবর্তন হবে। 

কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন মুড সুইং 

আসুন দেখা যাক কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন মুড সুইং হলে ?

সব মুড সুইং মানসিক রোগের আকার ধারণ করে না। বরং মনোবিদরা বলছেন, মুড সুইং হওয়া শুরু হলেই কিছু সহজ পন্থা অবলম্বন করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।সময় থাকতে এই সমস্যা আপনাকে বুঝতে হবে। যদি দেখেন আপনার খুব ঘনঘন এরকম হচ্ছে তাহলে বিষয়টি অবহেলা করবেন না। একজন ভালো ডাক্তার দেখানো উচিত ।

কিছু নিয়ম মানলেই মুড সুইং থেকে বাঁচা সম্ভব 

1। ডাক্তাররা বলছেন ভাল করে ঘুমলে অনেক সময় মুড সুইংয়ের সমস্যা সেরে যায়। কারণ ঘুমের অভাবে স্নায়ুজনিত সমস্যা থেকেও মুড সুইং (Mood Swings) হয়।প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। শুতে যাওয়ার আগে বেশি টিভি দেখবেন না বা মোবাইল দেখবেন না। 

2। সারাদিন শুধু প্রচুর পরিমাণে জলপান করুন। 

3।যোগব্যায়ামের মাধ্যমে মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই বাড়িতেই নিয়মিত যোগব্যায়াম অভ্যেস করুন। নিজের শরীর, মন ও নিঃশ্বাসের উপর ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ গড়ে তুলুন। মন খারাপের আভাস পেলেই ধ্যান করার চেষ্টা করুন।

4 ।নিজের যত্ন নিন। এই যত্ন নিন । আপনি যদি নিজেকে খুশি রাখতে না পারেন তাহলে অন্যরাও আপনাকে নিয়ে বিরক্ত হয়ে যাবেন ।

5 । প্রতিদিন অন্তত দশ মিনিট এক্সারসাইজ করুন।

ভালো থাকুন,  নিজেকে নিয়ে ভাবুন ,নিজেকে ভালোবাসুন ।

● অর্পিতা ঐশ্বর্য কামাল কাছনা রংপুর ।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.