
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন তরুণ-তরুণী। সবসময়ই আড্ডা, হাসি আর গানে ডুবে থাকে তারা। কখনও ক্যাম্পাসে কখনো বা ডিজে পার্টিতে। এমনি একদিন ঘটনাচক্রে ডিজে পার্টিতে তাদের একজনের হাতে খুন হয় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের ছোট ভাই।
তখন নিজেদের বাঁচাতে তারা শহর ছেড়ে পালায় অজানার পথে। একসময় ঢুকে পড়ে এক গহীন জঙ্গলে। ভয়ার্ত ও ভীষণ ক্ষুধার্ত এই তরুণ-তরুণীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে থাকে। দিগবিদিক ছুটতে ছুটতে তারা হাজির হয় এক পুরনো বাংলোতে। সুনসান নীরব ওই বাড়িতে থাকে মাত্র তিনজন মানুষ, যাদের আচরণ বিচিত্র। সারাক্ষণ কেমন ভৌতিক আবহে গা ছমছম করা রক্ত হমি করা আবহ বয়ে বেড়াচ্ছে বাড়িটি। ধীরে ধীরে তারা বুঝতে পারে এটি একটি অশুভ আত্মার পদচারণা। ঘটনা উদ্ঘাটন করতে গিয়ে তাদের সামনে প্রকাশ পায় এক লোমহর্ষক কাহিনী।
এরপর একে একে ঘটতে থাকে নানা অঘটন যা কোনো যুক্তি দিয়ে মেলানো যায় না। এক পর্যায়ে ওই বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতে থাকে তরুণ-তরুণীরা, কিন্তু ব্যর্থ হয়। এই ভৌতিক বাড়িতে থাকলে অপঘাতে প্রাণ যাবে আর বাইরের সভ্য দুনিয়ায় তাদের মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন। কোন দিকে যাবে তারা? সবার মনে একই প্রশ্ন এই মৃত্যুপুরী থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা কি নেই?
এই শ্বাসরুদ্ধকর লোমহর্ষক কাহিনীর পুরোটা জানতে হলে দেখতে হবে তরুণ চিত্রপরিচালক ও চিত্রগ্রাহক এম ফেরদৌস রেজার প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওয়ান ওয়ে রোড’ ছবিটি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের নির্মিতব্য সম্পূর্ণ ভৌতিক ও থ্রিলারধর্মী ‘ওয়ান ওয়ে রোড’ ছবিটিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন রিয়েলিটি শো সুপার হিরো-সুপার হিরোইনের মাধ্যমে রূপালি জগতে আসা সাগর ও শম্পা।
অপেক্ষাকৃত নবাগত শিল্পীদের নিয়ে এরকম একটি ছবি নির্মাণ প্রসঙ্গে পরিচালক এম ফেরদৌস রেজা মিডিয়াকে বলেন, ‘তারকা থেকে অভিনয়ের দক্ষতার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে শিল্পী নির্বাচন করে ছবিটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি।’
ভৌতিক ছবিতে কাজ করা প্রসঙ্গে নায়িকা শম্পা বলেন, ‘স্বপ্ন পূরণে চলচ্চিত্রকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি আমি। এক্ষেত্রে হরর (ভৌতিক) ছবিতে কাজ করতে গিয়ে ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিশেষ করে ছবির প্রতিটি সংলাপই ভয়ের, তাই গল্পের মধ্যে ডুবে যেতে হচ্ছে।’
গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ‘ওয়ান ওয়ে রোড’ ছবিটির দ্বিতীয় পর্বের শ্যুটি শেষ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। এরই মধ্যে ছবিটির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ঢাকার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক শ্যুটিং শেষ করার পর এখন শ্যুটিং চলছে নওগাঁর একটি পুরনো বাড়িতে।
দেওয়ান মাহবুবুল আলমের কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্যে ছবিটি প্রযোজনা করছে চিয়ার্স এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড।
শম্পা’র ভীন্নধাঁচের অভিজ্ঞতা
জানা যায়, ইতিমধ্যে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন সুপার হিরো সুপার হিরোইন প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসা সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রী শম্পা। এ সবের মধ্যে একাধিক ছবিতে একই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আসা সাগরের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন তিনি। ওয়ান ওয়ে রোড তাদের জূটিবদ্ধ আর একটি ছবি। এ ছবির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোন ভৌতিক ছবিতে কাজ করছেন শম্পা। বলতে গেলে বাংলাদেশেই দীর্ঘ সময় পর নির্মাণ হচ্ছে ভৌতিক ঘারানার কোন ছবি। মূলত সাগর ও শম্পাকে ঘিরেই বিভিন্ন লোমহর্ষক ঘটনা উপস্থাপনের মাধ্যমে নির্মাণ করা হচ্ছে ‘ওয়ানওয়ে রোড’। এদিকে টানা বেশ কিছুদিন এই ছবির কাজ নিয়েই ব্যস্ত থেকেছেন শম্পা। এ ছবিতে অভিনয় করার আগে বেশ প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে ভৌতিক বিষয়গুলো উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছেন বাস্তবে। অনেক ভৌতিক ছবিও দেখা হয়েছে তার।
এরকম ভৌতিক ছবিতে অভিনয় প্রসঙ্গে শম্পা মিডিয়াকে বলেন, অনেক আগে থেকেই এ ছবিটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কারণ, ছবিতে ভৌতিক বিষয়গুলো আবর্তিত হয় আমাকে ঘিরেই। ছবির কাহিনী ও আমার চরিত্র অনুযায়ী আমার লুকেও খানিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেহেতু এ ধরনের ভৌতিক ছবি প্রথম করছি তাই অভিজ্ঞতাটা স্বাভাবিকভাবেই অন্যরকম।
-রতন কর