আমাদের সামনে কোনো উৎসবমুখর দিন এসে গেলে আমরা নিজের বিশেষ দিনের বিশেষ সাজ-সজ্জা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করি। নিজেকে চমৎকারভাবে উপস্থাপনের বিশেষ তাগিদ অনুবব করি। তবে এজন্য নিজের চেহারাটিও ভালো রাখার প্রস্তুতি চাই। চোখ জোড়াকে এই কাজে অগ্রাধিকার দিন।
সবাই কিন্তু তারুণ্যদীপ্ত চোখ চান। কালো বৃত্ত, ফোলা ভাব, চোখের নিচে দাগ, ক্লান্ত, অবসন্ন চোখ কে চান? বরং সবারই আকাক্সক্ষা থাকে উজ্জ্বল, গভীর, নিদাগ, প্রাণময় চোখ। কিন্তু তার জন্য চাই চোখের যত্ন আর প্রয়োজনীয় বিশ্রাম। সেটা আমরা আবার মানতে চাই না। একটা কথা আপনাকে মানতেই হবে, চোখ হলো হৃদয়ের জানালা। অতএব একে প্রাণবন্ত রাখতেই হবে।
রাত জেগে অনেকে কাজ করেন। আবার অনেকে নিদ্রাহীনতায়ও ভোগেন। এমন প্রবণতা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ, তাতে চোখের নিচে কালি পড়ে। চোখের এই কলঙ্ক থেকে রেহাই পেতে আপনাকে অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। রোদের কারণেও অনেক সময় চোখের নিচের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ত্বকের রঙ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর এটা গ্রীষ্মেই বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যত্ন আপনাকে নিতে হবে। এসপিএফ-৩০ রয়েছে এমন ময়শ্চারাইজার চোখের নিচে ব্যবহার করতে হবে নিয়মিত। বাজারে নামি ব্র্যান্ডের এই ধরনের ময়শ্চারাইজার আছে। সেগুলো থেকে বেছে নিতে হবে। তবে লাগানোর সময় খেয়াল রাখবেন, তা আঠার মতো বা তেলতেলে যেন না হয়।
চোখের নিচে ফোলা ভাব হলে চেষ্টা করুন লবণ দেয়া খাবার পরিহার করতে। কারণ, অতিরিক্ত লবণ আপনার দেহে জলীয় পদার্থের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। অনেকেই হয়তো খেয়াল করেছেন, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের পাতা ফুলে ওঠে। এটা ওই একই কারণে। একইভাবে রাতে ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত তরল পদার্থের কিছু অংশ মুখম-লে ছড়িয়ে পড়ে। এর জন্যই চোখের নিচে থলের মতো হয়। এমন অবস্থা থেকে রেহাই পেতে বালিশের ওপর মাথা রেখে শুতে হয়। তাতে তরল না জমে শরীরের নিচে ছড়িয়ে যাবে। মৌসুমি অ্যালার্জি, সাইনাসের প্রকোপও আপনার এই সমস্যা ত্বরান্বিত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতেই হবে।
এ ছাড়া চোখের নিচের কালো-কালো সূক্ষ্ম দাগের কারণ হতে পারে চোখ পিটপিট করা। বিশেষত রোদে বেরোলে এই সমস্যা হয়। এ জন্য রোদচশমা অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। রোদচশমাও দেখেশুনে ভালো ব্র্যান্ডেরটি কিনবেন। আর বাইরে বেরোলে সানগ্লাসের পাশাপাশি সানস্ক্রিন অবশ্যই মাখতে ভুলবেন না। রাতে কিছুটা সময় ব্যয় করুন নিজের চোখের জন্য। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে এমন আইক্রিম লাগান। কিংবা রেটিনলসমৃদ্ধ আইক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন। তা আপনার চোখে নিচের স্পর্শকাতর জায়গায় কোলাজেন তৈরিতে সহায়ক হবে।
চোখের যত্নের রয়েছে নানা উপায়। ঘরে বসেই সে-সব ফলো করা যায়। আলু বা শসার টুকরা দিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকা, দু’হাতের তালু ঘষে গরম করে তাতে চোখ রেখে বসে থাকার মতো যতœ কিংবা নানা ধরনের ব্যায়ামও রয়েছে চোখের। এ ছাড়া যেতে পারেন আপনার সৌন্দর্যবিশেষজ্ঞের কাছে।
আরও কিছু পরামর্শ দিচ্ছি। একটানা অনেকক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা কিংবা টিভি দেখা থেকে বিরত থাকুন। অফিসে কাজ তো করতেই হবে। এ জন্য আপনার চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং মেনে চলুন। বেশি করে পানি পান করুন। তাতে আপনার অর্ধেক সমস্যার সমাধান হবে। আরেকটা কথা। মেকআপ করতেই হবে। নানা কারণে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তা অবশ্যই উঠিয়ে আইক্রিম মেখে তবেই বিছানায় যাবেন।
চোখের যত্ন নিন, দেখবেন সুন্দর হয়ে উঠছেন। মনকেও সেই সঙ্গে সতেজ রাখতে হবে। ভালো-মন্দ যেটাই হোক, চোখ দেখে কিন্তু ঠিকই ধরা যায়।
![Gnana_Beauty_Parlour[1]](http://90p.301.mywebsitetransfer.com/wp-content/uploads/2013/09/Gnana_Beauty_Parlour1.jpg)









