সম্পাদকীয় – “পৃথিবীতে নিরাপদ থাকুক শিশুরা”

সম্পাদকীয় – “পৃথিবীতে নিরাপদ থাকুক শিশুরা”

“পৃথিবীতে নিরাপদ থাকুক শিশুরা”।

পৃথিবীতে নিরাপদ থাকুক শিশুরা।এটা তাদের জন্মগত অধিকার।আর এই অধিকার নিশ্চিত করতেই বিশ্বময় শিশুদের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে ইউনিসেফ সহ অনেক অনেক সংস্থা।স্পর্শকাতর এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিকে আমলে নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাগুলো এবং নিয়মতান্ত্রিক ভাবে,গুরুত্বের সাথেই শিশুদের আগামীর পথচলা যেনো মসৃণ হয়, সেই চেষ্টাই চলছে অবিরাম।

তবে, ” এ পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো,এ আমার অঙ্গীকার”- কবির অঙ্গীকারে আসলে বাস্তবতার কিছুই যায় আসে না।শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ — ধ্রুব সত্য! তাতেও কীইবা যায় আসে? বাস্তব কিন্তু বড়োই নিষ্ঠুর,নির্দয়।তাইতো সময়ে সময়ে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ,নিগৃহীত এই পৃথিবীতে।

“কামলুপ স্কুল”, যেখানে শত শত ছাত্র ছাত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ছবিসুত্রঃ রিপন দে।

কানাডার মতো উন্নত ,সভ্য দেশেও আবিস্কৃত হয় শত শত শিশুকে নির্যাতন নিপীড়ন করে গণহত্যার মাধ্যমে গণকবর দেওয়ার ঘটনা।একবিংশ শতাব্দী এসে শিহরিত হতে হয় এহেন বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের কাহিনী পড়ে কিংবা আমেরিকার টেক্সাসে শিশুদের স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে একসাথে উনিশ জন শিশুকে হত্যার মতো ঘৃণ্য,জঘন্য হত্যা কান্ডের ঘটনা ও নির্বাক করে,বিশ্ব বিবেককে দংশিত করে।হতবাক করে সুশীল সুশিক্ষিত সমাজকে,জাতিকে।বিশ্বের সুনিয়ন্ত্রিত দেশগুলোর অবস্থাই এরকম।কোথাও না কোথাও ঘটনা ঘটছেই? শিশুরা কোথায় ই বা নিরাপদ?

বাংলাদেশেও অহর্নিশ শিশু নিপীড়ন, নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। শিশুরা নিপীড়িত হচ্ছে বিভিন্ন ভাবে নিয়তই।তবে তার মধ্যে কিছু ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে।সদ্য ঘটে যাওয়া পাঁচ বছর বয়সী আয়াতের ঘটনাটা সমস্ত নির্মমতাকে যেনো ছাপিয়ে গেছে। অসম্ভব করুণ, ঘৃণ্য ঘটনা। যা সচেতন বিবেককে ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছে,কাঁদিয়েছে, দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।অর্থ লোভের স্পৃহায় মানুষ কতোটা পশু হতে পারে,অমানবিক,নির্দয় হতে পারে আয়াতের ঘটনা দৃষ্টান্ত।কচি শিশু মুখের চাহনি আহাজারি মন গলাতে পারেনি পাষন্ডের।মেরে কেটে পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে স্বীয় লালসা চরিতার্থ করেছে চরম নির্মমতায় খুনি।বাবা মায়ের পরম আদরের ধন,নিষ্পাপ আয়াতকে কোন প্রাণে এভাবে মেরে ফেললো খুনি? নিষ্ঠুরতার কোনো সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করার মতো নয় এমনই ঘটনা!

অন্যায়কারী শাস্তি পেয়েছে,পাচ্ছে। কিন্তু এরকম নির্মম ঘটনার পর শাস্তি হলেও শিশু নির্যাতনের ভয়াবহতায় সেই শাস্তি নগন্য।

সভ্য পৃথিবীতে,সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকার সবারই আছে।শিশুদের তো অবশ্যই।অনস্বীকার্য ভাবে প্রতিটা শিশুর বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার প্রত্যয়ই সবার,সব রাষ্ট্রের, সব মানুষের, সব সংস্থার….কিন্তু কোথায় শিশু নিরাপদ? শিশুর বাসযোগ্য পৃথিবী কী আদৌও তৈরি হচ্ছে? নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে যাদেরকে আগামী পৃথিবীর জন্য প্রস্তুত করতে হবে, তাদেরকে যেনো সত্যিই সেই নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হয়,যা তাকে ভয়ংকর পৃথিবীকে চেনাবে না,ভয়ংকর মানুষকেও না।

সময়ের কথায় প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Facebook fan page

Leave a Reply

Your email address will not be published.